নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন ২০২৪

আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন ভেবে থাকেন বা ফ্রিল্যান্সিং এর নতুন তাহলে আপনার জন্য এ আর্টিকেলটি খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। অনলাইন ইনকাম বিডিটির এই আর্টিকেলের মধ্যে আমি আলোচনা করব নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন ২০২৪ (Freelancing Start Guide for Beginners) নিয়ে।

আমি আগে থেকে বলে রাখছি, আপনি যদি নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করা উচিত বিস্তারিত জানতে চান। তাহলে অবশ্যই এই আর্টিকেলটি সময় নিয়ে সম্পূর্ণ পড়বেন। আপনি যদি সম্পূর্ণ আর্টিকেল না পড়েন তাহলে আপনি অনেক কিছু মিস করবেন যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ নতুন অবস্থায় ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার ক্ষেত্রে।

আমরা যারা নতুন অবস্থায় ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চাই তারা বিভিন্ন দ্বিধা-দ্বীনদ্বায় ভোগী। যে কিভাবে আমি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করব বা কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করলে আমি ফ্রিল্যান্সিংয়ের সফল হতে পারবো।

ফ্রিল্যান্সিং এর সফল হওয়া বা ফ্রিল্যান্সিং এর ভালো ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার ভেতরে অনেক কৌশল রয়েছে। যদি আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে সঠিক কৌশল ব্যবহার করতে না পারেন তাহলে আপনার সফল হওয়া সম্ভব না খুবই কম।

ফ্রিল্যান্সিং জগতে বর্তমান সময়টা কম্পিটিশনের সময়। আগের মত আর ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা মার্কেটগুলোতে কম নেই। এখন মার্কেটে প্রচুর পরিমাণে ফ্রিল্যান্সার হয়েছে যার তরুন কম কাজের রেটে ফ্রিল্যান্সারের কাজ করে থাকে।

নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং
নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং

নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং কেন কঠিন! (Why Is Freelancing Difficult For Beginners!)

আমি আগেই বলেছি যে বর্তমান সময়টা হচ্ছে কম্পিটিশনের সময়। আগে যেখানে ফ্রিল্যান্সার ছিল ০৫ জন, এখন বর্তমানে সেখানে ফ্রিল্যান্সার হয়েছে কমপক্ষে ১০০ জন। ফ্রিল্যান্স মার্কেট গুলোতে কাজের তুলনায় লোকের সংখ্যা বর্তমানে অনেক বেশি।

যেহেতু লোকের সংখ্যা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট গুলোতে বেশি সেজন্য কিন্তু নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং কিছুটা কঠিন হয়ে গিয়েছে। এখন বর্তমানে ফ্রিল্যান্স মার্কেট গুলোতে একটি কাজের পোস্টে প্রচুর পরিমাণে বিট হয়ে থাকে। আর প্রত্যেক লোকে চাই যে তার কাজটা একজন অভিজ্ঞ লোক দিয়ে করিয়ে নিতে।

আমার দৃষ্টিকোণ থেকে, এই লোক সংখ্যা বাড়ার কারণে এবং নতুনদের অভিজ্ঞতার ঘাটতির কারণে ফ্রিল্যান্সিং টা ২০২৪ সালে তাদের জন্য একটু চ্যালেঞ্জিং।

তবে সঠিক গাইডলাইনে কাজ করতে পারলে নতুনরাও খুব দ্রুত সময়ের ভিতরে ফ্রিল্যান্সিংয়ের সফল হতে পারবে। আমি এই গাইডলাইন দেওয়ার চেষ্টা করব এই আর্টিকেলের মাধ্যমে। মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।

অবশ্যই দেখবেন:



ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু দক্ষতা

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার ক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু প্রয়োজনীয় দক্ষতার প্রয়োজন রয়েছে। এই দক্ষতা গুলো না থাকলে ফ্রিল্যান্সিং করা খুবই কঠিন হয়ে পড়বে। অবশ্যই ফ্রিল্যান্সিংয়ের সফল হওয়ার জন্য এই দক্ষতা গুলো লাগবেই লাগবে।

১.কম্পিউটার পরিচালনায় বেসিক দক্ষতা

ফ্রিল্যান্সিং এর সফল হওয়ার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম আপনাকে যে কাজটি জানতে হবে সেটি হচ্ছে কম্পিউটার পরিচালনায় বেসিক দক্ষতা অর্জন করতে হবে। কম্পিউটার একমাত্র ডিভাইস যেটির মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ খুব ভালোভাবে করা সম্ভব।

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করা সম্ভব কিন্তু মোবাইল দিয়ে সকল কাজ ভালোভাবে করা সম্ভব নয়। মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কিত একটি পোস্ট আমাদের ওয়েবসাইট আমরা প্রকাশ করেছি আপনি চাইলে ওই পোস্টটি পড়তে পারেন যদি আপনি মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান।

কম্পিউটার পরিচালনার ক্ষেত্রে আপনাকে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, মাইক্রোসফট এক্সেল, গুগল ড্রাইভ, ইত্যাদি টুলসের ব্যবহার জানতে হবে। কারণ এই সকল টুলস গুলো আপনাকে ব্যবহার করতে হবে আপনি যখন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট গুলোতে কাজ করবেন।

২. ইন্টারনেট ব্যবহারে দক্ষতা

যত ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট গুলোর কাজ আপনাকে অনলাইনে সম্পন্ন করতে হবে। সেজন্য অবশ্যই আপনাকে ইন্টারনেট ব্যবহারে ভালো দক্ষতা অর্জন করতে হবে।

ধরুন আপনি একটি কাজের সমস্যায় পড়ে গিয়েছেন, সেটি আপনি বুঝতেছেন না কিভাবে সম্পূর্ণ করবেন। এটি আপনাকে গুগলে বা ইউটিউব বা কোন অ্যাপ এর হেল্প নিয়ে আপনাকে সম্পূর্ণ করতে হবে।

আপনি যদি ইন্টারনেটের ব্যবহার সঠিকভাবে করতে না পারেন তাহলে কিন্তু আপনার সমাধান করার ক্ষমতা কমে যাবে। এজন্য ফ্রিল্যান্সিং এ টিকে থাকা বা ফ্রিল্যান্সিং করা আপনার জন্য অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

৩. ইংরেজি জানা

ফ্রিল্যান্সিং যেহেতু আপনার আন্তর্জাতিক একটি কাজ। এর জন্য অবশ্যই আপনাকে আন্তর্জাতিক ভাষা ইংরেজি ব্যবহার করতে হবে তাদের সঙ্গে কথা বলা বা যোগাযোগের ক্ষেত্রে।

ইংরেজিতে আপনার অনর্গল না হলেও চলবে। তবে আপনাকে যোগাযোগ রক্ষার্থে যেটুকু ইংরেজি জানা দরকার সেটুকু অবশ্যই জানতে হবে। আপনি যদি সঠিকভাবে কথা বলে ইংরেজিতে কাজ বুঝে নিতে না পারেন তাহলে আপনি কিভাবে কাজ সঠিকভাবে জমা দিবেন!

এজন্য আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং এ ভালো কিছু করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ইংরেজিতে জোর দিতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং ইংরেজির বিকল্প অন্য কোন ভাষা নেই তাই অবশ্যই আপনাকে ইংরেজি জানতে হবে।

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবেন? (How To Start Freelancing?)

আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তাহলে সবার আগে আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং এর একটা ভালো কাজ শিখতে হবে। যে কাজের ভ্যালু রয়েছে বর্তমান সময়ে। আপনাকে এমন কোন ফ্রিল্যান্সিং কাজ শিখতে হবে যেটির বর্তমানে ভ্যালু রয়েছে এবং ভবিষ্যতে যেটার ভ্যালু আরও বৃদ্ধি পাবে বা থাকবে।

এমন কোন কাজ শেখা যাবে না যে কাজ সবাই পারে বা যে কাজের বর্তমানে বা ভবিষ্যতে ভ্যালু কমে যাবে। আপনি যদি একটি ভালো কাজ শিখতে পারেন, তাহলে কিন্তু আপনি সেই কাজ দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা খুব ভালোভাবে আয় করতে পারবেন।


আমাদের এই ওয়েবসাইটের ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজসমূহ একটি আর্টিকেল রয়েছে সে আর্টিকেলে আমরা যে কাজগুলো শিখলে আপনি বর্তমানে এবং ভবিষ্যতে ফ্রিল্যান্সিং করে ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারবেন, সেই বিষয়ে আলোচনা করেছি।

এছাড়া আমাদের ওয়েবসাইট আরেকটা আর্টিকেল রয়েছে যে ফ্রিল্যান্সিং এর কোন কাজের চাহিদা বেশি। আপনি এই দুইটা থেকে একটি আর্টিকেল পড়লেই ভালো কাজ গুলি সম্পর্কে জানতে পারবেন। যে কাজগুলো শিখলে আপনি বর্তমানে বা ভবিষ্যতে ফ্রিল্যান্সিং ভালোভাবে করতে পারবেন।


আপনার কাজে দক্ষতা অর্জন করুন

আপনি যদি আপনার কাজে দক্ষতা অর্জন করতে না পারেন তাহলে কিন্তু আপনি ফ্রিল্যান্সিংয়ে টিকে থাকতে পারবেন না। ফ্রিল্যান্সিং এর দক্ষ লোকের কাজের চাহিদা কোনদিনও কমবে না।

কারণ সবাই চায় দক্ষ লোকদের কাজ করে নিতে। আপনি যদি দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাহলে আপনার কাজ পেয়ে আপনার ক্লায়েন্ট সন্তুষ্ট থাকবে। আর ক্লায়েন্ট সন্তুষ্ট থাকলে আপনি দিনকে দিন এগিয়ে যাবেন।

কমিউনিটিতে যুক্ত হন

আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর যে কাজটি করেন বা করবেন। সেই কাজের বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপে আপনি যুক্ত হন। কেননা ঐ সকল গ্রুপে বিভিন্ন অভিজ্ঞ লোক ইতোমধ্যে যুক্ত রয়েছে। তাদের কাছে অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে আপনার কাজ সম্পর্কিত।

আপনি যদি কোন সমস্যায় পড়েন আপনার কাজ নিয়ে তাহলে কিন্তু আপনি খুব সহজে সেখানে পোস্ট করে বা অভিজ্ঞ ভাইবোনদের হেল্প নিয়ে আপনি কিন্তু কাজটির সমাধান করতে পারবেন।

এই যে আমি ব্লগিং করি। আমি ব্লগিং সম্পর্কিত বিভিন্ন কমিউনিটিতে যুক্ত হয়েছি। আমার যখন কোন সমস্যা হয় আমি যদি সলভ না করতে পারি, তাহলে আমি কমিউনিটিতে পোস্ট করে থাকি। সেখান থেকে আমার কমিউনিটির ভাই বোনেরা আমাকে সাহায্য করে থাকে।

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে একাউন্ট তৈরি করুন

ফ্রিল্যান্সিং যেহেতু অনলাইন মার্কেটপ্লেসে করতে হয়। সেজন্য আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে গিয়ে আপনার একাউন্ট তৈরি করতে হবে। অ্যাকাউন্ট হচ্ছে প্রোফাইল। আপনার প্রোফাইলের মাধ্যমে আপনি ফ্রিল্যান্স মার্কেট গুলোতে কাজ করতে হবে।

এজন্য অবশ্যই আপনার যে প্রোফাইল থাকবে ফ্রীলান্স মার্কেটগুলোতে অবশ্যই আপনার প্রোফাইলটি প্রফেশনাল হতে হবে। কেননা যদি আপনার একাউন্ট প্রফেশনাল না হয় তাহলে কোন ক্লায়েন্ট আপনাকে বিশ্বাস করতে পারবে না।

আর যদি আপনার প্রোফাইলটি প্রফেশনাল হয়। অর্থাৎ ক্লায়েন্ট আপনার প্রোফাইল দেখে মনে করে আপনি একজন অভিজ্ঞ ও দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তি। তাহলে কিন্তু আপনার কাছে ক্লায়েন্ট এর কাজ দেওয়া সম্ভাবনা অনেক গুণ বেড়ে যাবে। তাই আমি অবশ্যই আপনাকে সাজেশন করব আপনার প্রোফাইলটি যাতে প্রফেশনাল হয়।

সুন্দর গিগ তৈরি করুন

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট গুলোতে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা বা দক্ষতার প্রমাণস্বরূপ একটি গিগ তৈরি করুন সুন্দর করে। একটি সুন্দর প্রফেশনাল গিগ আপনার প্রোফাইল কে ক্লায়েন্ট এর কাছে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করবে। যা আপনার ফ্রিল্যান্স মার্কেট গুলোতে কাজ পাওয়া সম্ভাবনা বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে।

আপনার কাজের পোস্টে বিট করুন

আপনি যখন একটি কাজকে নির্বাচিত করে ফ্রিল্যান্স মার্কেট গুলোতে একাউন্ট তৈরি করবেন। তারপর আপনার ফিডে কাজ সম্পর্কিত বিভিন্ন পোস্ট আসতে থাকবে। এই পোস্টগুলোতে আপনাকে কাজের জন্য আবেদন করতে হবে। এই কাজের জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়াকে বিট বলে।

কাজের মূল্য নির্ধারণ

কাজের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন। সেটি হচ্ছে শুরুর দিকে আপনার কাজের রেট কম রাখবেন। আপনি এই হিসাবটা করবেন আপনি যে বিষয় নিয়ে ফিন্যান্স মার্কেটগুলোতে কাজ করবেন, সেই ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট গুলোতে অন্যান্য ফ্রিল্যান্সাররা কি পরিমান রেট নিয়ে থাকে। এর উপর নির্ভর করে আপনি তাদের চাইতে কম কাজের রেট নির্ধারণ করবেন। তবে আপনি ৫ ডলারের নিচে রেট ধরতে পারবেন না।

ধৈর্য ধরে যদি আপনি কাজ করে যেতে পারেন। তাহলে একসময় আপনার কাজের রেট এমনিতেই বৃদ্ধি পেতে থাকবে। সেটা আপনি এমনিতে বুঝতে পারবেন আপনার অভিজ্ঞতার সাথে সাথে এটি ব্যালেন্স রাখবে।

ফ্রিল্যান্সিং কাজের পেমেন্ট গ্রহণ (Freelancing Payment Receive)

ফ্রিল্যান্সিং কাজের পেমেন্ট আপনি অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে খুব সহজে উত্তোলন করতে পারবেন। নিচে আমি উল্লেখ করে দিচ্ছি কি কি পেমেন্ট মেথডের মাধ্যমে আপনি টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।

  1. Paypal.
  2. Payoneer.
  3. Bank To Bank Transfer.
  4. Directly Transfer from client, ইত্যাদি।

শেষ কথা,

এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আশা করি, নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং করার গাইডলাইন আপনাকে ভালোভাবে দিতে পেরেছি। আশা করি আপনি যদি মনোযোগ সহকারে আমাদের এই নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে অবশ্যই আপনি জেনে গেছেন।

আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চান কিন্তু এই আর্টিকেলের মধ্যে কোন কিছু আপনার বুঝতে অসুবিধা হয় তাহলে আমাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আমি অবশ্যই আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবো বা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করব আপনার প্রশ্নের সমাধান বা সাজেশন পাওয়ার জন্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top