ডোমেইন কি? কত প্রকার এবং সঠিক ডোমেইন নেম নির্বাচন করার গাইডলাইন

ওয়েবসাইট বিষয়টির সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। বর্তমানে মানুষ যেকোন ছোট ব্যবসা দাড় করানোর জন্য কিংবা লিখা লিখি করার জন্য ওয়েবসাইট বা ব্লগসাইট তৈরি করে থাকে। আমরা জানি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন হয় ডোমেইন।

কিন্তু অনেকেই জানি না ডোমেইন কি? আবার অনেকেই ডোমেইন কি সেটা জানলেও সঠিক ডোমেইন সিলেক্ট করতে জানে না। আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে ডোমেইন কি কত প্রকার? কিভাবে একটি সঠিক ডোমেইন সিলেক্ট করবেন তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

আসা করি এই পোস্টটি পড়ার পর ডোমেইন সিলেকশনে আপনি কোন প্রকার সমস্যায় পড়বেন না। তাই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

ডোমেইন কি কত প্রকার এবং সঠিক ডোমেইন নেম নির্বাচন করার নিয়ম
ডোমেইন কি? কত প্রকার? এবং সঠিক ডোমেইন নেম নির্বাচন করার নিয়ম

ডোমেইন কি?(What is domain)

ডোমেইন হলো আপনার ওয়েবসাইটের ঠিকানা বা address। আপনি পুরো ইন্টারনেটকে একটি বিশ্ব চিন্তা করুন। এই বিশ্বটি তৈরি হয়েছে অনেকগুলো ওয়েবসাইটের সমন্বয়ে। প্রত্যেক ওয়েবসাইটের নিজস্ব একটি ঠিকানা বা address রয়েছে। এই ঠিকানা বা address ই দিয়ে আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটে যেতে পারবেন৷

যেমনঃ- আপনি যদি Facebook এ যেতে চান তাহলে লিখবেন facebook.com এটাই হলো ফেইসবুকের ঠিকানা বা এটিকে ইন্টারনেটের ভাষায় ডোমেইন বলা হয়। 

একটি ডোমেইন দুটি জিনিস নিয়ে তৈরি হয়ঃ-

  • নাম
  • .extention 

যেমনঃ- facebook.com এখানে facebook হলো নাম এবং.com হলো extention. আপনিও আপনার কোম্পানি বা আপনার ব্লগের নাম অনুযায়ী এমন একটি ডোমেইন নিতে পারেন। 

অনেক ধরনের ডোমেইন extension আছে কিন্তু আপনি কোন ধরনের extention নিবেন আপনার ওয়েবসাইটের জন্য তা জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন।

সঠিক ডোমেইন সিলেক্ট 

ডোমেইন কি সেটি যদি আপনি বুঝে থাকেন তাহলে হয়ত বুঝতেই পারছেন একটি সফল ওয়েবসাইটের জন্য ডোমেইন কত বেশি ভূমিকা পালন করে। 

এত বড় ইন্টারনেট বিশ্বে আপনার ডোমেইনই হলো আপনার ওয়েবসাইটের পরিচয়। যদি আপনি এই ডোমেইন নির্বাচনে ভুল করেন তাহলে তার প্রভাব পড়বে আপনার পুরো ওয়েবসাইটে। যদি আপনি একবকর ডোমেইন নিয়ে ফেলেন তাহলে তা পরিবর্তন করার আর কোন উপায় নেই। 

সুতরাং বুঝতেই পারছেন ডোমেইন (Domain Name) সিলেকশন কোন সাধারণ ব্যাপার না। এটির ক্ষেত্রেও আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মানতে হবে। চলুন জেনে আসি সঠিক ডোমেইন সিলেক্ট করার নিয়তসমূহ।

অবশ্যই দেখবেন: 

সঠিক ডোমেইন সিলেক্ট করার নিয়ম

ডোমেইন সিলেক্ট করতে গেলে আমরা তখন দুই ধরনের ডোমেইন দেখতে পায়। 

  • New/Fresh domain.
  • expired domain. 

New/Fresh ডোমেইন কি?

New/fresh ডোমেইন বলতে ঐ সকল ডোমেইনকে বুঝানো হয় যেগুলো পূর্বে কখনো কোন ওয়েবসাইটে ব্যবহার হয়নি। ডোমেইন সিলেক্ট করার সময় New/fresh ডোমেইন সিলেক্ট করা ভালো কিন্তু সবসময় এমন ডোমেইন পাওয়া যায় না তখন expired domain নিতে হয়।

New/fresh ডোমেইন সিলেক্ট করার নিয়ম 

Top level domain extension ব্যবহার করুনঃ-

domain extension তো বুঝেছি আমরা কিন্তু পৃথিবীতে অনেক রকম ডোমেইন আছে। যেমনঃ- 

.com,. org,.info,.net ইত্যাদি। এগুলো সবই টপ লেভেল ডোমেইন। কিন্তু প্রশ্ন হলো কোন ডোমেইনটি আপনি সিলেক্ট করবেন। 

আসলে সব ডোমেইন এক্সটেনশন এর আলাদা আলাদা অর্থ আছে চলুন প্রথমেই জেনে আসি সেসব অর্থ গুলো।

.com:- এটির পূর্ণরুপ হলো commercial।যেসব ওয়েবসাইট ব্যাবসায়িক কাজে ব্যবহার করা হয় সেগুলো জন্য এই ডোমেইনটি। 

.org:- এটির পূর্ণরুপ হলো organisation। অর্থাৎ যেসব ওয়েবসাইট কোন প্রাতিষ্ঠানিক কাজের উদ্দেশ্যে বানানো হবে তাদের জন্য এই ডোমেইন এক্সটেনশন।  

.gov:- এটির নাম দেখেই বুঝতে পারছেন সরকারি কাজে জরিত ওয়েবসাইটের জন্য এই এক্সটেনশনটি।

.edu:- এটির পূর্ণ রুপ হলো education(শিক্ষা)। শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটের জন্য এই এক্সটেনশন। 

.net:- network organisations এর সাথে জরিত ওয়েবসাইটে এটি ব্যবহার করা হয়।

.info:- নাম শুনেই বুঝতে পারছেন information (তথ্য)। যেসব ব্লগ বা ওয়েবসাইটে নানা তথ্য শেয়ার করা হয় সেসব ওয়েবসাইটের জন্য এই এক্সটেনশনটি।

এই হলো সকল ডোমেইন এক্সটেনশন এর পূর্ণরূপ। কিন্তু আপনার ওয়েবসাইটের জন্য কোন ডোমেইনটি সিলেক্ট করা উচিত তাহলে? আমি বলব. com ডোমেইন নেওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ। কারন আপনি লক্ষ্য করলে বুঝবেন বর্তমানে প্রায় ডোমেইনে এই এক্সটেনশনটি ব্যবহার হয়। এবং এটি সর্বাধিক জনপ্রিয় একটি ডোমেইন এক্সটেনশন। এছাড়াও আপনি চাইলে.net বা.info ও ব্যবহার করতে পারেন আপনার ব্লগ ওয়েবসাইটের জন্য। যদি ই-কমার্স ওয়েবসাইট হয় তাহলে.com এক্সটেনশনটিই সবচেয়ে বেস্ট।

আপনি চাইলে যেকেন টপ লেভেল ডোমেইন নিয়েই কাজ করতে পারেন। ডোমেইন এক্সটেনশন আপনার ওয়েবসাইটের উপর তেমন কোন প্রভাব ফেলবে না। 

Domain extension এ country code ব্যবহার করুন 

আমরা এতক্ষণ যেসব ডোমেইন নিয়ে আলোচনা করেছি সেগুলো হলো GTLD( Generic Top level domain)। কিন্তু এমন অনেক ডোমেইন আছে যেগুলোতে এক্সটেনশনের সাথে country code ব্যবহার করা হয়। এসব ডোমেইনকে বলে CCTLD( country code top level domain)। 

যখন আপনি নির্দিষ্ট কোন দেশকে কেন্দ্র করে ওয়েবসাইট বানাবেন তখন এসব CCTLD ব্যবহার করবেন।

যেমনঃ- আপনি একটি ব্লগ সাইট বানাবেন যেটি বাংলাদেশের মানুষদের কেন্দ্র করে বানাবেন অর্থাৎ আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স লোকেশন হলো বাংলাদেশ তখন আপনি ব্যবহার করবেন.com.bd।

আবার যদি ইন্ডিয়া কেন্দ্রীক হয় তাহলে ব্যবহার করবেন.in। এভাবেই country code ব্যবহার করে আপনি লোকাল সাইট তৈরি করতে পারেন।  যদি আপনি কোন নির্দিষ্ট দেশকে কেন্দ্র করে ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তাহলে অবশ্যই এমন কান্ট্রি কোড দিয়ে ডোমেইন নিবেন এটি আপনার local SEO অনেক সাহায্য করবে।

আরও দেখুন: 

জনপ্রিয় কিছু CCTLD

.in → india(ভারত)

.fr→ france (ফ্রান্স)

.com.bd→ Bangladesh(বাংলাদেশ)

.us→ United States (যুক্ত রাষ্ট্র)

এমন আরো অনেক দেশ কেন্দ্রীক অনেক CCTLD রয়েছে। এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসবে এসব CCTLD ডোমেইনের উপকারীতা কি?

আগেই বলেছিলাম এসব ডোমেইন লোকাল SEO’র ক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। আর যদি আপনি কোন নির্দিষ্ট দেশের কোড ডোমেইনে বসান তাহলে ঐ দেশের মানুষদের আপনার ওয়েবসাইটে আসতে আগ্রহী করে তুলবে।

key-word এর সাথে মিল রেখে ডোমেইন নিবেন না

keyword কি সেটা আমরা সকলেই জানি। কখনো আমাদের ওয়েবসাইটের মেইন বা টার্গেটেড কি-ওয়ার্ডের সাথে মিল রেখে ডোমেইন নিবেন না। একটি সময় এমন ডোমেইন নিলে সেটি রেংকিং-এ অনেক বড় ভূমিকা পালন করতো কিন্তু এখন গুগল এটিকে তাদের রেংকিং ফেক্টর থেকে বাদ করে দিয়েছে এবং ক্ষেত্র বিশেষে এমন হুবহু কি-ওয়ার্ড এর সাথে মিল রেখে ডোমেইন নেওয়র কারনে অনেক ওয়েবসাইট রেংক হারায়। তাই হুবুহু কি-ওয়ার্ডের সাথে মিল রেখে ডোমেইন নিবেন না তবে আপনার ওয়েবসাইট টপিকের সাথে মিল রেখে নিবেন যেমনঃ- 

আপনি samsung মোবাইল রিভিউ নিয়ে একটি ব্লগ বানাবেন তাহলে samsungmobilereview.com এমন ডোমেইন না নিয়ে Samsunglovers.com এমন ডোমেইন নিন।

এ বিষয়ে এসইও এক্সপার্টদের ভিডিও দেখুন

ছোট ডোমেইন সিলেক্ট করা

ডোমেইন যেহেতু আপনার ওয়েবসাইটের একটি ঠিকানা তাই চেষ্টা করবেন আপনার ডোমেইনকে যতটা পারা যায় ছোট রাখতে যাতে মানুষ একবার পড়েই সহজে মনে রেখে দিতে পারে আপনার ডোমেইনের নাম। এতে করে পরবর্তীতে তার কোন প্রয়োজন হলে সে সরাসরি আপনার ওয়েবসাইটের ডোমেইন দিয়ে আপনার ওয়েবসাইটে চলে আসতে পারবে। এভাবেই আপনার ডিরেক্ট ট্রাফিক বাড়বে। আর ডিরেক্ট ট্রাফিক গুগল খুব পছন্দ করে যার কারনে আপনার রেংকিংয়েও উন্নতি হবে। আর মানুষ এভাবে আপনার ডোমেইন দিয়ে ওয়েবসাইটে আসতে আসতে ডোমেইনটা আপনার ব্র্যান্ড নেইমে পরিণত হবে। তাই চেষ্টা করবেন ছোট ডোমেইন সিলেক্ট করতে। 

সহজ এবং আর্কষণীয় ডোমেইন সিলেক্ট করা 

আগের পয়েন্টেই বলেছি ডোমেইন এর নাম ছোট রাখতে কারন এতে দর্শক আপনার ডোমেইন নেইম সহজে মনে রাখতে পারবে কিন্তু শুধু ছোট রাখলেই হবে না ডোমেইন এর নাম সহজ এবং আর্কষণীয় রাখতে হবে। সহজ রাখতে হবে কারন এতে যে কেউ আপনার ডোমেইন এর নাম মনে রাখতে পারে আর ডোমেইন নেইম আর্কষণীয় হলে যে কেউ আপনার ওয়েবসাইটের প্রতি আকৃষ্ট হবে।

ডোমেইনে হাইফেন ব্যবহার করবেন না

অনেকেই ডোমেইননে হাইফেন ব্যবহার করে। এটি সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিব আমি।

কারন হাইফেন যুক্ত ডোমেইনকে অনেক সময় গুগোল স্প্যাম(spam) ডোমেইন মনে করতে পারে। আর যদি গুগোল স্প্যাম ডোমেইন মনে করে তাহলে আপনার ওয়েবসাইটের রেংকিং এর অবনতি হবে।

আর হাইফেন দিলে অনেক সময় ডিরেক্ট ট্রাফিক কমে যায় তার কারন হলো অনেকেই আপনার ডোমেইন নেইম ঠিক মনে রাখতে পারবে কিন্তু ডোমেইনের মধ্যে যে হাইফেন থাকবে সেটি মনে রাখতে পারবে অধিকাংশ মানুষ। তাই হাইফেন ব্যবহারকে সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলবেন।

সবচেয়ে ইউনিক ডোমেইন নেইম নিন

যারা ব্লগিং ফিল্ডে নতুন আছেন তারা অনেক সময় একটি ভুল করে সেটি হলো অন্য কোন জনপ্রিয় ওয়েবসাইটের ডোমেইনের সাথে নিজের ডোমেইন মিল রাখে।

সত্যি কথা বলতে এটিতে কোন লাভই হবে না ওয়েবসাইটের কারন ঐ নামের যেহেতু একটি জনপ্রিয় সাইট আছেই আপনার সাইটের জনপ্রিয়তা থাকবে না। যেহেতু আপনি আরেতটি সাইটের সাথে মিল রেখে ডোমেইন নিয়েছেন সেক্ষেত্রে অনেকেই আপনার ওয়েবসাইটকে স্ক্যাম ভাববে। যার ফলপ্রসূত আপনি গুগোলে রেংকিং পেলেও ক্লিক কমে যাবে এবং বাউন্স রেট অনেক বেড়ে যাবে।

সঠিক প্রোভাইডার সিলেক্ট করুন

আগেই বলেছি একটি ওয়েবসাইটের ঠিকানা হলো ডোমেইন। এই ইন্টারনেট বিশ্বে ওয়েবসাইটটি ডোমেইনের মাধ্যমেই মানুষের সাথে পরিচিত হতে পারে। কিন্তু এই ডোমেইনে যদি কোন প্রকাশের সমস্যা হয় তাহলে বুঝতেই পারছেন তার প্রভাব পড়বে আপনার ওয়েবসাইটের উপর।

তাই ডোমেইন কেনার সময় সঠিক ডোমেইন প্রোভাইডারদের থেকে কিনবেন। কারন বর্তমানে চারদিকে ডোমেইন প্রোভাইডারের সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। এমন একজন প্রোভাইডার সিলেক্ট করুন যে সবসময় আপনাকে সাপোর্ট দিবে।

নতুনরা অনেক সময় অল্প দাম দেখেই অনেকের কাছ থেকে ডোমেইন নেয় এবং কিছুদিন পরে দেখা যায় সেই প্রোভাইডার উধাও হয়ে যায়। তাই অল্প দাম দেখে কখনো প্রলোভিত হবেন না। 

যদি আমাকে একটি ডোমেইন প্রোভাইডার রিকমেন্ড করতে বলে আমি namechep.com কেই করব। এখানে আপনি শতভাগ নিরাপত্তার সাথে আপনার ডোমেইন কিনতে পারবেন।

এই বিষয় গুলো এটি ফ্রেশ ডোমেইন কেনার সময় ফলো করবেন। কিন্তু কিছু কিছু ডোমেইন আছে এক্সপায়ার্ড। সেগুলো সিলেক্ট করার সময় আরো কিছু নিয়ম ফলো করতে হয় এখন আমরা সেগুলো জানব। 

আর দেখতে পারেন: 

Expired domain কি?

Expired ডোমেইন হলো সেসব ডোমেইন যেগুলো কেউ একবার ব্যবহার করেছে। কিন্তু বর্তমানে ব্যবহার করেন না। 

Expired ডোমেইনের অনেক সুবিধা এবং অসুবিধা আছে। সুবিধা হলো যদি ঐ ডোমেইনের খব ভালো অথরিটি এবং ব্যাকলিংক থাকে তাহলে আপনি যদি সেই ডোমেইন ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ওয়েবসাইট রেংক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।আবার যদি সেই এক্সপায়ার্ড ডোমেইনে স্ক্যাম ক্রোর বেশি থাকে তাহলে সেটি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য ক্ষতিকর হবে।

অনেকেই হয়ত এসব এক্সপায়ার্ড ডোমেইনের কথা আজকেই প্রথম শুনছেন। কিন্তু অনেক বড় বড় মার্কেটাররা এক্সপায়ার্ড ডোমেইন গুলো অনেক বেশি দামে কিনে নেয়৷ শুনলে হয়ত একটু অভাক হবে অনেক এক্সপায়ার্ড ডোমেইনের দাম ফ্রেশ ডোমেইনের তুলনায় অনেক বেশি। অনেকেই তাদের ব্যবহৃত এসব হাই অথোরিটি ডোমেইন অনেক বেশি দামে বিক্রি করে৷

কোথায় পাবেন এক্সপায়ার্ড ডোমেইন 

আপনি যখন ফ্রেশ ডোমেইন কিনতে যাবেন সেখানে এক্সপায়ার্ড ডোমেইন পাবেন। কিন্তু কিভাবে এতো ডোমেইনের মধ্যে এক্সপায়ার্ড ডোমেইন খুজে পাবেন?

এমন অনেক ওয়েবসাইট আছে যেখানে এক্সপায়ার্ড ডোমেইনের অনেক সংগ্রহ থাকে চলুন জেনে নিই সেসব ওয়েবসাইট সম্পর্কে। 

www.expireddomains.net

পৃথিবীতে কত এক্সপায়ার্ড ডোমেইন রয়েছে তা এই ওয়েবসাইটে গেলেই বুঝবেন। এক্সপায়ার্ড ডোমেইনের বিশাল লিস্ট রয়েছে তাদের কাছে।এক্সপায়ার্ড ডোমেইন থেকে শুরু করে এক্সপায়ার্ডিং এবং অকশনে থাকা ডোমেইন গুলোর লিস্টও রয়েছে এখানে। এই ওয়েবসাইটের মজার ব্যাপার হলো এখানে আপনি ফিল্টারিং করে ডোমেইন সার্চ করতে পারবেন। তাদের এই ফিচারটি হাজার হাজার ডোমেইন থেকে আপনার জন্য বেস্ট ডোমেইন সিলেক্ট করার ব্যাপারে অনেক সহায়ক হবে।

Domcop

পুরাতন ডোমেইন সিলেক্ট করার জন্য domcop আরেকটি মজার এবং জনপ্রিয় টুল। কিন্তু এটি ফ্রিতে খুব সীমিত ভাবে ব্যবহার করা যায়। এটি মেইনলি পেইড টুল। ExpiredDomains.net এর মতো বিশাল ডেটাবেস না থাকায় এর ফিল্টারিং প্রোসেস খুব সহজ।

অন্যান্য

নেইমসিলো, নেইমজেডসহ পৃথিবীতে এমন আরো অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো আপনাকে এক্সপায়ার্ড ডোমেইন নেওয়ায় সাহায্য করবে। এ নিয়ে বিস্তারিত জানতে গুগোল করুন। 

এক্সপায়ার্ড ডোমেইন তো পেয়ে গেলাম। এখন আমাদের জানতে হবে কোন কোন বিষয় গুলোকে মাথায় রেখে একটি এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কিনতে হবে।

এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কেনার নিয়ম

অ্যাংকর ট্যাক্স

আপনারা অনেকেই অ্যাংকর ট্যাক্স সম্পর্কে জানেন আবার অনেকেই জানেন না। যারা জানেন না তারা নিচের ছবিটি দেখুন।

সঠিক ডোমেইন সিলেক্ট করার নিয়ম

এখানে”প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল” লিখাটিতে এটি লিংক দেওয়া হলো এবং এই লিখায় ক্লিক করলে আপনি ঐ লিংকে চলে যাবেন। সুতরাং এই লিখাটিই হলো ঐ লিংকের অ্যাংকর ট্যাক্স।

একটি এক্সপায়ার্ড ডোমেইন পাওয়ার সাথে সাথেই তার অ্যাংকর ট্যাক্স চেক করে নিতে হবে কারন একটি ডোমেইনের পাওয়া ব্যাকলিঙ্ক এর অ্যাংকর ট্যাক্স থেকে বুঝা যাবে ঐ ডোমেইনটি স্প্যামি ছিল নাকি। যদি তার অ্যাংকর ট্যাক্স ভাল থাকে তাহলে পরবর্তী স্টেপ গুলোর মাধ্যমে এই ডোমেইনকে যাচাই করতে হবে।

অ্যাংকর ট্যাক্স প্রধানত দুই ভাবে চেক করা যায় Ahref এবং ম্যাজেস্টিক। দুটি টুল দিয়েই চেক করে নেওয়া ভালো।

যদি অ্যাংকর টেক্সট চেক করার সময় কোন ডোমেইনে এমন জাপানি/চাইনিজ লিখার অ্যাংকর টেক্সট পান তাহলে সেই ডোমেইনকে অবশ্যই স্কিপ করবেন। কারন এটি পূর্বে জাপানি কিংবা চাইনিজ পিবিএন ছিল। এগুলো বেশিরভাগ স্প্যামি হয়।

আর দেখুন: 



ব্যাকলিংক

একটি ডোমেইনের অ্যাংকর টেক্সট দেখার পরে আমাদের দেখতে হবে সেই ডোমেইনের ব্যাকলিংকগুলো। অল্প কয়েকটি ব্যাকলিংক দেখেই কখনো একটি ডোমেইন কিনে ফেলার সিদ্ধান্ত নিবেন না।যদি ডোমেইনের ২০-৩০ ব্যাকলিংক হয় তাহলে প্রত্যেকটি চেক করে দেখবেন। যদি ব্যাকলিংক সংখ্যা ১০০ টি হয়ও তবুও প্রত্যেকটা লিংকে ডুকে ডুকে চেক করে দেখবেন আর যদি তার চেয়েও বেশি হয় ব্যাকলিংক তাহলে সর্বোচ্চ যতটুকু চেক করা যায় করবেন৷ 

ডোমেইনের প্রত্যেকটি ব্যাকলিংকে ডুকে ডুকে মেনুয়ালি সব চেক করলে আপনার ডোমেইনের ব্যাপারে একটি স্বচ্ছ ধারনা আসবে ডোমেইনটি কেমন ওয়েবসাইট থেকে ব্যাকলিংক পেয়েছে, কোন জায়গায় ব্যাকলিংক পেয়েছে ইত্যাদি। যদি আপনি অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি শুধু চোখ বোলালেই বুঝবেন কোন লিংকটি ভাল কোন লিংকটি খারাপ। 

এবং যদি আপনি একটি ব্যাকলিংক ভালো নাকি খারাপ সেটি না বুঝেন তাহলে কখনোই আপনি এক্সপায়ার্ড ডোমেইন নিতে যাবেন না। কারন আপনার আরো অনেক অভিজ্ঞতার প্রয়োজন আছে। আপনি ফ্রেশ ডোমেইন নিয়েই কাজ করুন। কাজ করতে করতে অভিজ্ঞ হলে তবেই এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কিনবেন।

কারন এসব ডোমেইনের কিছু কিছু বিষয় খুব সেনসিটিভ। যেগুলো না বুঝলে হয়ত আপনার পুরো টাকায় পানিতে যাবে। তাই এক্সপায়ার্ড ডোমেইন শুধু মাত্র SEO নিয়ে অভিজ্ঞ মানুষদের কেনার পরামর্শ দিব। 

ভালো ব্যাকলিংক না থাকলে কোন ডোমেইনের তাহলে সেসব ডোমেইন নিবেন না কারন এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কেনার মূল উদ্দেশ্যই হলো ভালো ব্যাকলিংক যদি সেটিই না থাকে তাহলে সেই এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কেনার কোন মানেই হয় না! 

ডোমেইন হিস্টোরি চেক

ডোমেইন কেনার আগে ওয়েব আর্কাইভ হিস্টোরি নামক ওয়েবসাইট থেকে ঐ ডোমেইনের পূর্ববর্তী হিস্টোরি দেখে আসবেন। ওয়েবসাইটিতে আপনি ডোমেইন নেইম দিলে সেই ডোমেইন আগে কেমন ছিল সেটি আপনি দেখতে পারবেন। আপনি একটি ডোমেইনের সকল হিস্টোরি দেখে নিবেন কোন হিস্টোরি বাদ দিবেন না।

কারন এমনও হতে পারে ডোমেইনটি কোন এক সময় পিভিন অথবা এডাল্ট টপিকে ব্যবহার হয়েছিল৷ তাই ওয়েব আর্কাইভে হিয়ে সকল হিস্টোরি চেক করে নিবেন।

হোস্টিং হিস্টোরি চেক 

যদি আপনার ডোমেইন উপরের ৩ টি স্টেপ পার করে আসে তাহলে এই স্টেপটি না করলেও হয় তবুও শতভাগ নিশ্চয়তার জন্য করে নেওয়াই ভালো। 

ডোমেইনটুলস একটি ওয়েবসাইটের হোস্টিং সম্পর্কে অনেক বিশ্বস্ত তথ্য দেয়। আপনাকে সেই তথ্য গুলো চেক করে নিতে হবে। হতে পারে কোন একটি ডোমেইনের ২ বছরের কোন হিস্টোরি ওয়েব আর্কাইভে পান নি ন সময় হয়ত ডোমেইনটি কোন থার্ড পার্টি হোস্টিংয়ে হোস্ট করে পিভিএন বা এডাল্ট কিছু নিয়ে কাজ করেছে ( এটি শুধু মাত্র সম্ভাবনা)। তাই চেক করে নিয়ে আপনি নিরাপদ থাকলেন।

সর্বশেষ 

আজকের এই পোস্টটিতে ডোমেইন কি কত প্রকার, ডোমেইন কেনার সময় কি কি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে এসব বিষয় নিয়ে লিখা হয়েছে। যদি আপনি বিগিনার হন তাহলে আপনি অবশ্যই ফ্রেশ ডোমেইন নিয়ে কাজ করবেন।

আর যদি এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কিনতে চান তাহলে প্রথমতো আপনার অনেক এক্সপেরিয়েন্স থাকা প্রয়োজন আর এই পোস্টে এক্সপায়ার্ড ডোমেইনের প্রাথমিক কিছু ধারণাই দেওয়া হয়েছে।

কারন এক্সপায়ার্ড ডোমেইন অনেক ডিপ একটি বিষয় এটি সম্পর্কে হয়ত একটি পোস্টের মাধ্যমে সকল কিছু জানানো যাবে না তাই আপনাকে চারদিকে রিসার্চ করে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এই বিষয় নিয়ে।এই পোস্টটি এতক্ষন ধরে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top