ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় ২০২৩ সালে

আসসালামু আলাইকুম, ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়, এই আর্টিকেলে আপনাকে স্বাগতম। যারা অনলাইনে কাজ করতে চায় বা ব্লগিং শুরু করতে চায় তাদের একটি কমন প্রশ্ন হচ্ছে ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়।

অনলাইন ইনকাম বিডির এই পোস্টে আমি আপনাকে বোঝানোর চেষ্টা করব ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় ২০২৩ সালে। এই পোস্টটি আমার অভিজ্ঞতার আলোকে আমি উপস্থাপন করব।

আশা করি আপনি ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় এই সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা পাবেন এই আর্টিকেল থেকে। এজন্য মনোযোগ সহকারে এই পোস্টটি পড়বেন।

এই পোস্টটি পড়লে আপনি আরো জানতে পারবেন, ব্লগিং করে আয় করার উপায়, ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কিসের এপ্রুভাল প্রয়োজন হয়, ব্লগ থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়, বিনা টাকায় ব্লগ থেকে আয়, ব্লগ তৈরির নিয়ম, ইত্যাদি।

ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়
ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়

ব্লগ কি?

ব্লগ হলো ইংরেজি শব্দ। যার অর্থ হলো ভার্চুয়াল ডাইরি। যার মানে হল অনলাইনে ব্যক্তিগত দিনলিপি। ব্লগে বিভিন্ন ধরনের তথ্য প্রকাশ করা হয়। যেমন: ছবি, টেক্সট, অডিও, ভিডিও, ইত্যাদি।

আমার ওয়েবসাইটে এসে আর্টিকেল পড়তেছেন এটি একটি ব্লগ সাইট। যারা ব্লগে কাজ করে তাদেরকে ব্লগার বলা হয়। আমি যে এই ওয়েবসাইটে আর্টিকেল লিখি ও প্রকাশ করি তাই, আমি একজন ব্লগার।

অবশ্যই দেখবেন:


  1. ব্লগিং কি? কিভাবে ব্লগিং করে টাকা আয় করবেন?
  2. এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লেখার নিয়ম (পূনার্ঙ্গ গাইডলাইন)
  3. এসইও কি?: কিভাবে এসইও শিখবেন বাংলাতে বিস্তারিত?

ব্লগিং কি?

আমি যে এই ওয়েবসাইটে লেখালেখি করে অনলাইনে টাকা ইনকাম করি, এই পুরা প্রক্রিয়াটাকে ব্লগিং বলে। অর্থাৎ ওয়েবসাইটে লেখালেখির কাজ করে অর্থ উপার্জন করাকে ব্লগিং বলে।

ব্লগ থেকে কি আসলে টাকা আয় করা যায়?

অনেকের মনে এই প্রশ্ন রয়েছে যে ব্লগ থেকে কি আসলে টাকা আয় করা যায়? তো এর সোজা উত্তর হচ্ছে অবশ্যই ব্লগ/ওয়েবসাইট থেকে টাকা আয় করা যায়। আমার কয়েকটা ব্লগ সাইট রয়েছে, আমি সেই ব্লগ সাইটগুলো থেকে গত ০৬ বছর যাবত অনলাইনে আয় করে আসতেছি।

এতক্ষণ তো আমরা ব্লগিং কি, ব্লক থেকে কি আসলে টাকা আয় করা যায় এই বিষয়ে জানলাম। এখন আসল বিষয়ে চলে যাবো, ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়।

ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়

ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়াটা অনেক মুশকিল। কেননা একেক রকম ব্লগিং বিষয়ে একেক ধরনের ইনকাম হয়ে থাকে। আর ব্লগিং ইনকামের বড় একটা বিষয় থাকে ব্লগের ভিজিটরের লোকেশন।

অর্থাৎ ব্লগিং এর ইনকামটা নির্ভর করে ব্লগিংটা কোন বিষয়ের উপর ও ব্লগিংয়ে কোন দেশের ভিজিটর ভিজিট করে। তারপরও আমি আপনাকে আমার ইনকামের উপরে পরিমাপ করে ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় এর একটা হিসাব দেবো। এই হিসাবটি আমার অভিজ্ঞতা থেকে দিব।

ব্লগিং করে কত টাকা ইনকাম করা যায় এই হিসাবটা দেওয়ার আগে, আমি আপনাকে ব্লগিংয়ে ব্লগিং এর বিষয়বস্তু ও ভিজিটরের লোকেশন উপর ইনকাম নির্ভর করে এটা বোঝানোর চেষ্টা করব।

ব্লগ/ওয়েবাসইটের বিষয়

আপনার ওয়েবসাইটটি যদি হয় টেকনোলজি, ইন্সুরেন্স, ক্রেডিট কার্ড, লোন, ভিসা ইত্যাদি হাই সিপিসি কিওয়ার্ডে বিষয়ে হয়, তাহলে কিন্তু অবশ্যই আপনি আপনার এই বিষয়ের উপরে ভালো পরিমাণ ইনকাম করতে পারবেন। আপনি যদি গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে থাকেন। কেননা এই বিষয়গুলো উপরে গুগল এডসেন্স হাই সিপিসি দিয়ে থাকে।

আর আপনি যদি এফিলিয়েট মার্কেটিং করেন আপনার ব্লগে, তাহলে আপনি গুগল এডসেন্সের তুলনায় আরো বেশি ইনকাম করতে পারবেন। কেননা গুগল এডসেন্সের তুলনায় এফিলেট মার্কেটিং এর ইনকাম অনেক গুণ বেশি হয়ে থাকে। তবে আমার কাছে মনে হয় গুগল এডসেন্সের তাই চাইতে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে ব্লগিং করে আয় করা তুলনামূলক কঠিন।

ভিজিটর লোকেশন

আমি আগেই বলেছি ভিজিটর লোকেশন অনেক বড় একটা ফ্যাক্ট হিসেবে কাজ করে ব্লগিং আয় করার ক্ষেত্রে। আপনার ওয়েবসাইটে যদি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, নেদারল্যান্ড, ইত্যাদি উন্নত দেশ থেকে যদি আসে। তাহলে অবশ্যই আপনার ইনকাম অনেকগুণ বেশি হবে যদি আপনার দেশের ভিজিটর বাংলাদেশী, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এসব দেশের সাথে তুলনা করেন।

বাংলাদেশি এক হাজার ভিজিটরে যদি গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে ১ ডলার ইনকাম হয়। ঠিক একই বিষয়ে উল্লেখিত উন্নত দেশ থেকে ভিজিটর আসলে কমপক্ষে ১০ ডলার ইনকাম হবে। অর্থাৎ কমপক্ষে ১০ গুণ বেশি ইনকাম হবে আপনার। আরও বেশি হতে পারে।

ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় এর আনুমানিক হিসাব

বর্তমান সময়ে (২০২৩) সালে ব্লগিংয়ে আয়ের অবস্থা খুবই খারাপ। আপনি যদি টেকনোলজি বিষয়ে দৈনিক আপনার ওয়েবসাইটে ৫ হাজার অর্গানিক পেজ ভিউস নিয়ে আসতে পারেন, তাহলে আপনি দৈনিক ১২ থেকে ১৫ ডলার আয় করতে পারবেন। এই হিসাবটা প্রযোজ্য হবে, যদি আপনার ওয়েবাসাইটে বাংলাদেশি ভিজিটর আসে।


আপনার যদি সিপিসি (CPC) ০.০৫ হয় এবং এডে ক্লিক করার হার (CTR) 5 হয়, তাহলে আপনার এই ইনকাম হবে।


এছাড়াও আপনি যদি চাকরির ওয়েবসাইট, বা শিক্ষা বিষয়ক ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করেন, তাহলে আপনি আরও অনেক কম ইনকাম পাবেন।

এজন্য ব্লগিয়ে ভালো কিছু করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে হাই সিপিসি কিওয়ার্ড (High CPC Keyword) নিয়ে কাজ করতে হবে। আমি নিচে কিছু হাই সিপিসি কিওয়ার্ড দিয়ে দিব যেগুলো নিয়ে কাজ করলে আপনি ভালো পরিমান ইনকাম করতে পারবেন।

এছাড়াও দেখতে পারেন:



ব্লগিয়ের জন্যে হাই সিপিসি কিওয়ার্ড (High CPC Keyword List)

  1. Lawyer.
  2. Donate.
  3. Technologies.
  4. Health.
  5. Google Ads.
  6. Credit Card.
  7. Insurance.
  8. Loan.
  9. Hosting.
  10. Make Money Online.
  11. SEO.
  12. Digital Marketing.
  13. Facebook Marketing.
  14. YouTube Marketing.
  15. Online Banking.
  16. Medical.
  17. Healthy Foods.
  18. Online Marketing.
  19. Degree.
  20. Electricity.

হাই সিপিসি দেশ (High CPC Country List)

ব্লগিংয়ে যেহেতু লোকেশ (দেশ) অনেক বড় একটা ফ্যাক্ট। তাই আপনার ইনকাম বেশি করার জন্যে যে দেশগুলোতে ইনকাম বেশি হয়ে, সেই দেশগুলো টার্গেট করে কাজ করতে হবে। নিচে হাই সিপিসি দেশগুলো দেখুন।

  1. যুক্তরাষ্ট।
  2. যুক্তরাজ্য।
  3. কানাডা।
  4. নেদারল্যান্ড।
  5. ইতালি।
  6. সিঙ্গাপুর।
  7. মালেয়শিয়া।
  8. অস্টেলিয়া।
  9. জার্মানি।
  10. ব্রাজিল।

কিভাবে ব্লগিং শুরু করতে পারেন

ব্লগিং শুরু করার জন্য প্রথমে আপনাকে বিষয় নির্বাচন করতে হবে। সেই সাথে আপনার আরেকটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। শুধু হাইসিপিসি কি ওয়ার্ড বা আইসিপিসি দেশ দেখেই বিষয় নির্বাচন করলেই হবে না। সেইসাথে আপনি যে বিষয়টি নির্বাচন করবেন সেই বিষয়টিতে আপনার ভালো লাগার কাজ করতে হবে।

অর্থাৎ যেন সেই বিষয়টি নিয়ে আপনি অনেক দীর্ঘ সময় কাজ করতে পারেন। যদি আপনার কাজের বিষয় ভালো না লাগে অর্থের লোভে শুরু করেন তাহলে আপনি দীর্ঘ সময় কাজ করতে পারবেন না যার সফলতার জন্য অনেক বড় একটা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

ব্লগিং করার জন্য বিষয় নির্বাচন হওয়ার পর আপনাকে ডোমেইন ও হোস্টিং কিনতে হবে।

ডোমেইন হোস্টিং কেনার সময় যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন

আশা করি আপনি ডোমেইন হোস্টিং সম্বন্ধে ভালো জানেন। তারপরও যদি আপনার কোন ডোমেন হোস্টিং সম্বন্ধে বিস্তারিত জানার প্রয়োজন পড়ে তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটে পোস্ট আছে পড়ে নিবেন।

  1. ডোমেইন নেম (Domain Name) কেনার সময়, টপ লেভেল ডোমেই কিনবেন।
  2. আপনি যেহেতু ব্লগিং শুরু করবেন সেজন্য আপনি শেয়ারেড হোস্টিং (Shared Hosting) কিনতে পারেন।
  3. ডোমেইন হোস্টিং আপনি আন্তর্জাতিক ডোমিন হোস্টিং কোম্পানির কাছ থেকে নিতে পারেন, যদি আপনার কাছে মাস্টার কার্ড থাকে। আর যদি মাস্টার কার্ড না থাকে তাহলে বাংলাদেশের অনেক ভালো মানের হোস্টিং কোম্পানি রয়েছে সেগুলো থেকেও কিনতে পারেন।

ব্লগিংয়ে সফল হওয়ার জন্য যে কাজগুলো করতে হবে

একটা জরিপে দেখা গেছে, শতকরা ৯৫% ওয়েবসাইট গুগলে রেংঙ্কিয়ে এ আসতে ব্যর্থ হয়। অর্থাৎ ৯৫% ওয়েবসাইট সাফল্য পায় না। একটা ওয়েবসাইটকে ভালো পজিশনে নিয়ে আসা বা ওয়েবসাইট থেকে ভালো পরিমাণ ইনকাম করা খুবই কঠিন একটা কাজ। এজন্য আপনাকে কিছু বিষয় মাথায় রেখে ওয়েবসাইটে কাজ করতে হবে/ব্লগিং করতে হবে।

  1. আপনাকে অবশ্যই এসইও সম্বন্ধে ভালো ধারণা রাখতে হবে।
  2. প্রতিনিয়ত ওয়েবসাইটের নতুন পোস্ট পাবলিশ করতে হবে।
  3. ওয়েবসাইটকে সুপরিচিত করার জন্য ফেসবুক, ইউটিউব বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে মার্কেটিং করতে হবে। আপনি ফ্রি বা পেইড মার্কেটিং করতে পারেন সেটা আপনার বাজেট অনুযায়ী।
  4. লেগে থাকার মন-মানসিকতা থাকতে হবে। অর্থাৎ আপনি ৬ মাস কাজ করলেন কিন্তু আপনার ইনকাম হলো না সেজন্য বাদ দেওয়া যাবে না।
  5. এসইও সম্পর্কে নতুন নতুন জ্ঞান অর্জন করতে হবে। অর্থাৎ সময়ের সাথে আপনাকে আপডেট হতে হবে।

ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় শেষ কথা,

আশা করি এই পোষ্টের মাধ্যমে ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় বিষয়টি নিয়ে পরিষ্কার ধারণা দিতে পেরেছি। এখন আপনি বুঝে গেছেন যে একটি ব্লগ থেকে বা ওয়েবসাইট থেকে কি পরিমান টাকা ইনকাম করা যায়।

আপনি যদি ব্লগিং করতে চান তাহলে শুরু করতে পারেন। ব্লগিংয়ে একটি সুবিধা হচ্ছে আপনি ঘরে বসে অনলাইনে টাকা ইনকাম করতে পারবেন/পোস্ট করে টাকা আয় করতে পারবেন। এই সেক্টর আপনার কোন প্যারা থাকবে না অন্যের কথা শোনার।

আপনার যদি লগইন করে কত টাকা আয় করা যায় পোস্টটি ভাল লেগে থাকে, তাহলে আপনার নিকট আত্মীয়র সাথে এটি শেয়ার করতে পারেন। এছাড়া আপনার যদি কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকে আমাদের ওয়েবসাইট বা এই আর্টিকেল সম্পর্কে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top