ব্লগিং কি? কিভাবে ব্লগিং করে টাকা আয় করবেন?

ব্লগিং কি? কিভাবে ব্লগিং করে টাকা আয় করবেন?: ব্লগিং শব্দটার সাথে আপনারা প্রায় সবাই কমবেশি পরিচিত। আমরা অনেকেই নিয়মিত বিভিন্ন ব্লগ ভিজিট করি বিভিন্ন প্রয়োজনে। হয়ত অনেকেই জানিনা ব্লগ কি? এর পেছনে কি হয়?, বা এটা যারা করে তাদের লাভ কি? আজকে ব্লগিং সম্পর্কে পুরোপুরি ধারনা দেওয়ার পাশাপাশি কিভাবে আপনি ব্লগ খুলে আয় করবেন তাও বুঝিয়ে দিব। 

আপনি যদি অনলাইনে ব্লগিং এর মাধ্যমে ক্যারিয়ার গড়তে বা অনলাইনে আয় করতে চান, তাহলে ধৈর্য ধরে পুরো পোস্টটি পড়ুন। এবং আপনার পছন্দ অনুযায়ী ব্লগিং ক্যাটাগরি নিয়ে আপনার ব্লগিং যাএা শুর করুন। 

আমরা পোস্টের শেষের দিকে কয়েকটি জনপ্রিয় ব্লগিং টপিক শেয়ার করেছি। সেখান থেকেও আপনি কোন একটি ব্লগিং বিষয় বেছে নিতে পারেন, ব্লগিং শুরু করার জন্য।

ব্লগিং কি? ব্লগিং শুরু করার গাইডলাইন
ব্লগিং কি? ব্লগিং শুরু করার গাইডলাইন

 ব্লগিং কি? (What is Blogging?)

ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংজ্ঞানুসারে কারো চিন্তাধারা, মতামত,অভিজ্ঞতা যা ইন্টারনেট ছাড়া হয় অন্যদের পড়ার জন্য তাকেই ব্লগিং বলে।

মারিয়াম ওয়েবস্টার ডিকশনারির সংজ্ঞানুযায়ী একটি ওয়েবসাইট যা অনলাইনে প্রকাশিত হয় এবং এতে লেখকের উপলদ্ধি, মতামত এবং প্রায়শই বিভিন্ন রকম হাইপারলিংক ভিডিও এবং ছবি যা লেখক প্রদান করে সেই সাইট এবং ঐরকম সাইটের অন্যান্য কন্টেন্ট কে ব্লগিং বলে।

 এই দুই সংজ্ঞার আলোকে আমরা ব্লগিং কি এর সংজ্ঞায় বলতে পারি যে, অনলাইনে যা প্রকাশ করা হয় এবং লেখকের মতামত, চিন্তা ধারা, উপলব্ধি ইত্যাদি যা প্রায়শই ছবি, ভিডিও হাইপারলিংক ব্যবহার করে লেখক নিজের মতামত ব্যক্ত করে তাকেই ব্লগিং বলে।

যারা ব্লগিং করে তাদের বলা হয় ব্লগার।

ওয়েবসাইট এবং ব্লগ এর মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে। যেমন ওয়েবসাইটে সাধারণত একের অধিক বিষয় নিয়ে লেখা হয়।

একটি নিউজ ওয়েব পোর্টাল ওয়েবসাইট এর কথা উদাহরণ হিসাবে ধরা যাক।

এখানে যেমন রাজনীতি, সমাজ, খেলাধুলা ইত্যাদি সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা থাকে কিন্তু কোন ব্লগে কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয়ে যেমন শুধু খেলাধুলার উপর থাকবে অথবা রাজনীতিবিষয়ক থাকবে অথবা সামাজিক সমস্যার উপর লেখা থাকবে।

সুতরাং, ব্লগ সুনির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক হলেও ওয়েবসাইটে নানারকম বিষয়ে আলোচনা থাকে।
কিন্তু সকল ব্লগই এক প্রকার ওয়েবসাইট।

তাই বলা হয় যে সকল ওয়েবসাইট ব্লগ না হলেও সকল ব্লগই ওয়েবসাইট।

অবশ্যই পড়ুন: 



ব্লগিং এর জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতাঃ

আচ্ছা যে কেউ কি চাইলেই ব্লগার হতে পারে? ব্লগার হওয়ার জন্য কি কোন ডিগ্রী নেওয়ার প্রয়োজন আছে?

না বিষয়টা এমন নই। ব্লগার হওয়ার জন্য কোন ডিগ্রীর প্রয়োজন নাই তবে ব্লগার হওয়ার জন্য আপনি যেই বিষয়ে লিখবেন তা জানা থাকা অবশ্যক।

সুনির্দিষ্ট বিষয়ে পড়াশুনা র পরই কেবল ব্লগ লেখা উচিত। যেমন কেউ যদি খেলাধুলার বিষয়ে ব্লগ লিখতে চায় তবে তার সুনির্দিষ্ট খেলাধুলার সম্পর্কে খুঁটিনাটি জানতে হবে।

ব্লগিং কিভাবে শুরু করব? (How To Start Blogging?)

ব্লগার হওয়ার জন্য আপনাকে কোন ওয়েবসাইটে লিখতে হবে অথবা আপনার নিজের কোন ওয়েবসাইট খুলে তা পাবলিশ করতে হবে। এভাবে আপনি ব্লগার হতে পারবেন।

ব্লগিং কিভাবে শুরু করব তা আমরা এখানে ধাপে ধাপে আলোচনা করব ইনশা আল্লাহ।

ব্লগিং করার জন্য আপনার প্রথম ধাপ হওয়া উচিত আপনার বিষয় নির্বাচন। আপনি যে বিষয়ে লিখতে পছন্দ করেন আপনার সেই বিষয়ে প্রথমে ব্লগ লেখা শুরু করা উচিত।

ব্লগ লেখা একটি দীর্ঘ সময়বসাপেক্ষ ব্যাপার। আপনার যদি আগ্রহ না থাকে বিষয়টির প্রতি তবে আপনি ব্লগের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন।

কাজেই আপনি যখন প্রথম ব্লগ লিখতে শুরু করবেন তখন আপনার পছন্দের কোন বিষয় যেমন আপনার পছন্দ যদি ভ্রমণ করা হয় হয় তবে আপনার সেই বিষয়ে লেখা উচিত।

শুধু কোন বিষয়ের উপর অনেক সার্চ আছে ভেবে বিষয়টির উপর লেখা উচিত না যদি না আপনার আগ্রহ থাকে। অনেকেই নিজের পছন্দের বিষয়ে না লিখতে পেরে ব্লগিং করতে আগ্রহ পাই না আর কিছু সময় পরেই।

প্রথম ধাপ হওয়া উচিত আপনার যে বিষয়টি পছন্দ সে বিষয়ে আপনার লেখা নির্বাচন করা উচিত।

এরপর আপনার দ্বিতীয় ধাপ হওয়া উচিত আপনি কিভাবে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সাজাবেন বা লিখবেন। এজন্য আপনার খাতার অথবা নোটের মধ্যে মূল মূল পয়েন্ট গুলো লিখে ফেলা উচিত। তারপর লেখাটি গুগল ডক্স বা মাইক্রোসফ্ট ওয়ার্ডে পরিপূর্ণভাবে বাংলা অথবা ইংরেজিতে লিখে ফেলুন।

এখানে প্রাসঙ্গিক একটা কথা বলে রাখি অনেকে স্বল্প মেয়াদের সাফল্য পাওয়ার জন্য একটা কাজ করে থাকে সেটা হচ্ছে প্লেজিয়ারিজম।

বলা বাহুল্য এরকম হুবহু নকল করলে এখানে স্বল্প পরিশ্রমে সহজে অনেক গেলেও এর পরিণতি ভয়াবহ।

এটা হচ্ছে অন্যের লেখা চুরি করার শামিল। আর গুগল এর অ্যালগরিদম যদি আপনার এই চুরি করা ধরতে পারে তবে আপনার পাশাপাশি আপনি যে ওয়েবসাইটের হয়ে চুরি করে লিখবেন সেই ওয়েবসাইটের ও রিচ কমায় দিবে। তাই প্লেজিয়ারিজম থেকে বিরত থাকা উচিত।

এরপর আপনি দুটি কাজ করতে পারেন।

প্রথমটি হল আপনি অন্য কারো ব্লগে আপনার লেখা পাবলিশ করতে পারেন।

আপনি যদি নতুন লেখক হন তবে এক্ষেত্রে আপনার প্রথম লেখার জন্য কোন পারিশ্রমিক নাও পেতে পারেন। কিন্তু এভাবে লিখতে লিখতেই আপনার প্রোফাইল বড় হবে আর আপনি অভিজ্ঞ হবেন।

যত আপনার লেখা প্রকাশ হবে তত আপনার লেখার মূল্য বৃদ্বি পেতে থাকবে যদি আপনি ভাল ব্লগ লিখতে পারেন।

অন্য আরেকটা উপায় হল আপনি নিজেই নিজের একটি ওয়েবসাইট খুলে আপনি ব্লগিং করতে পারেব। এক্ষেত্রে ব্লগিং কিভাবে ওয়েবসাইট খুলে শুরু করবেন তা আমি নিচে বলে দিচ্ছিঃ

আপনি যা করবেন তা হলো আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি পছন্দসই ডোমেইন নাম এবং ডোমেইন এক্সটেনশন পছন্দ করবেন এবং godaddy,namecheap  এর মতো বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে আপনি আপনার পছন্দমত ডোমেইন নাম এবং ডোমেইন এক্সটেনশান কিনতে পারেন।

পাশাপাশি আপনি bluehost, dreamhost,namcheap এর মতো বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে আপনি আপনার ওয়েবসাইট হোস্টিং করতে পারেন।

আর যদি ফ্রিতে ব্লগ সাইট তৈরি করতে চান তাহলে আপনি গুগলের প্ল্যাটফর্ম ব্লগারে আপনার নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। এটি সম্পুর্ন ফ্রী।

আরো কিছু ফ্রি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে ওয়েবসাইট তৈরি করার কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে গুগলের ব্লগার পছন্দ করি। কেননা পরবর্তী সময়ে আপনি চাইলে সেই প্লাটফর্মে আপনার ওয়েবসাইটে কাস্টোম ডোমেইনও অ্যাড করতে পারবেন।

এভাবে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের যাত্রা শুরু করতে পারেন।

ব্লগ লেখার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা খুবই জরুরি।

আপনার কমপক্ষে সপ্তাহে একদিন আপনার ব্লগের লেখা দেওয়া উচিত। আপনি যদি নিয়মিত লেখা আপডেট না করেন তাহলে আপনার ব্লগ ভিজিটর হারাবে।

পাশাপাশি যারা ব্লগ পড়তে আসবে তাদেরকে তাদের ইমেইল আইডি প্রদানে উৎসাহিত করুন এবং যখন নতুন কোন লেখা আসবে তা যেন তাদের ইমেইলে পৌঁছে দিবেন।

ব্লগের জন্য প্রয়োজনীয় থিমঃ (Blogging Themes)

ব্লগের থিমটা কি?
খুব সহজ কথায় বলতে গেলে এমন কতগুলো ফাইল এর সমষ্টি যা আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি ডিজাইন তৈরিতে সহায়তা করবে।
এই থিমটি আপনার ব্লগের কালার, লেআউট, তারপর আপনার ব্লগের টাইপোগ্রাফি সহ বিভিন্ন বিষয় নির্ধারণ করে থাকে।
থিমের কথা বলতে গেলে ওয়ার্ডপ্রেস থিমের কথা তো বলতেই হয়।

ওয়ার্ডপ্রেসে ভালো মানের অনেক ফ্রী থীম পাওয়া যায় যেখানে আপনি খুব সহজে আপনার জন্য প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইট ডিজাইন করতে পারেন।

এরকম কয়েকটি উদাহরণ হচ্ছে Astra, Generatepress, Oceanwp.

ব্লগের থিমের কথা আলাদা পয়েন্টে উল্লেখ করলাম কারণ হচ্ছে ব্লগের জন্যথিম খুবই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

একটি ব্লগ আর আউটলুক থিমের উপর নির্ভর করে। কিন্তু বাংলাদেশে খুবই দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশের বেশিরভাগ ব্লগে থিমের উপর খুব অল্প কাজ করে যার ফলে ওয়েবসাইট গুলো দেখতে খুবই সাধারণ লাগে।

অথচ যদি ভালো করে এমনকি ফ্রি থিম গুলো ভালো করে ব্যবহার করা যায় তাহলে ব্লগের আউটলুক আকর্ষণীয় করে তুলার পাশাপাশি দেওয়া যাবে পাশাপাশি ব্লগের ভিজিটরদের এবং গুগলের অ্যালগোরিদমে ভাল র‍্যাংক করবে।

ব্লগ এর ডিজাইনিং এর জন্য থিম খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্যে আপনার পছন্দনীয় ডিজাইন করতে পারেন।

আর দেখুন: 



বিভিন্ন রকমের ব্লগঃ

আমি এখন এখানে বিভিন্ন রকমের ব্লগ সম্পর্কে খুব অল্প করে কথায় বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।

এখানে বিভিন্ন রকমের ব্লগ সম্পর্কে বলার কারণ হল আপনি যেন বিভিন্ন রকমের ব্লগ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পান এবং হাতে-কলমে আপনার যেই বিষয় পছন্দ সে বিষয়ে আপনি ব্লগ লিখতে পারেন।

ফুড ব্লগঃ
প্রথমে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা আলোচনা করতে চাই ফুড ব্লগিং নিয়ে।

ফুড ব্লগিং সম্পর্কে আপনার ইউটিউবে অথবা বিভিন্ন জায়গায় ফুড ব্লগ সম্পর্কে বহু আলোচনা দেখে থাকবেন। ফুড ব্লগার রা খাদ্য নিয়ে বিভিন্ন রকম রিভিউ দিয়ে থাকে।

ফুড ব্লগিং খুবই জনপ্রিয়। ভাল মানের রেস্টুরেন্ট খুজে পাওয়া, রেস্টুরেন্টে খাবারের দাম, খাবারের মান ইত্যাদি খাবার সম্পর্কিত নানা বিষয় জানতে মানুষ ফুড ব্লগার দের সহায়তা নিয়ে থাকে।

ট্রাভেল ব্লগঃ
ট্রাভেল ব্লগিং হচ্ছে আরেক ধরনের ব্লগ যেখানে ব্লগার রা ভ্রমণ সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা, হোটেলে থাকার অভিজ্ঞতা, কোন জায়গার দর্শনীয় স্থান কি কি এসব নিয়ে আলোচনা করে থাকেন।
ট্রাভেল ব্লগিং খুবই জনপ্রিয় ধারার ব্লগিং এর মধ্যে একটি।

এডুকেশনাল ব্লগঃ
এখানে ব্লগাররা এডুকেশন সম্পর্কিত বিষয়ে আলোচনা করে থাকেন।

এখানে ব্লগাররা সাধারণত আলোচনা করার পাশাপাশি বিভিন্ন রকম ভিডিও দিয়ে থাকেন যেন স্টুডেন্টদের বুঝতে সুবিধা হয়।

এডুকেশনাল ব্লগিং বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্লগ গুলোর মধ্যে অন্যতম যার ব্যাপক চাহিদা আছে এবং শিক্ষাকে বিস্তারে এই ধরণের ব্লগের ব্যাপক ভূমিকা আছে।

বিজনেস ব্লগঃ
বিজনেস ব্লগিং হচ্ছে এমন ধরনের ব্লগ যেখানে বিভিন্ন বিজনেস সম্পর্কে বিভিন্ন রকম আলোচনা থাকবে।

বিভিন্ন রকম ব্যবসার মাধ্যম, কোন ব্যবসায় কি সুবিধা, কোন ব্যবসা করার ক্ষেত্রে কি কি কাগজপত্র লাগবে এসব এই ধরণের ব্লগের আলোচ্য বিষয়।

খেলাধুলার ব্লগঃ
খেলাধুলার ব্লগে বিভিন্নরকম খেলা যেমন ক্রিকেট,ফুটবল, রেসলিং এর বিভিন্ন রকম তারকাদের সম্পর্কে এবং এই খেলাগুলোর সর্বশেষ অবস্থা ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

খেলাধুলার সবচাইতে বেশি পাঠক সাধারণত হয় যারা ছাত্র তারা।

খেলাধুলা ব্লগ গুলোতে খেলাধুলার বিভিন্ন রকম জিনিসপত্র এফিলিয়েট মার্কেটিং করা হয়।

গ্রুপ ব্লগঃ
গ্রুপ ব্লগিং একটি বিশেষ ধারার ব্লগিং।এর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এখানে অনেক রকম ব্লগাররা এসে একটি ওয়েবসাইটে সুনির্দিষ্টভাবে লিখে থাকেন।


এখানে বিভিন্ন রকম ব্লগার রা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখেন এবং তারা সাধারণত প্রতিষ্ঠিত ব্লগার হন।

এই ব্লগ থেকে অনেক রকম লেখা পাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রকম ব্লগারদের লেখার স্টাইল সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় এবং অনেক ভিন্ন বিষয় ও ধাচের ধারণা পাওয়া যায়।

প্রাইভেট ব্লগঃ
নাম শুনেই বুঝতে পারছেন যে এটা কারো নিজস্ব ব্যক্তিগত ব্লগ হবে।

এখানে লেখক বিশেষভাবে তাঁর পছন্দনীয় বিভিন্ন রকম বিষয় তা হোক বই পড়া অথবা ঘোরাঘুরি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ব্যক্তিগত লেখা লিখে থাকেন এবং সাধারণত এরকম ব্লগ বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে করা হয়ে থাকে না। লেখা তার আগ্রহ থেকে তার নামে এমন ব্লগ খুলেন।

টেক ব্লগঃ
টেক রিলেটেড প্রোডাক্ট যেমন মোবাইল, ক্যামেরা, স্মার্টওয়াচ, ল্যাপটপ ইত্যাদি সম্পর্কিত রিভিয় থাকে এখান।

মানুষজন এসব ব্লগ থেকে টেক রিলেটেড প্রোডাক্ট এর সম্পর্কে জানার পাশাপাশি কেনার সময় ও এসব ব্লগ পড়ে থাকে।

রিভিউ ব্লগঃ
রিভিউ ব্লগিং হল যেখানে ব্লগাররা বিভিন্ন রকমের বই, ডকুমেন্টারি ইত্যাদি সম্পর্কে রিভিউ দিয়ে থাকে।

এই ব্লগের ব্লগাররা বইটি সম্পর্কে তাদের মতামত, তাদের কি অনুভূতি হয়েছে এসব লিখে থাকেব।

এই ধরনের ব্লগের লেখাগুলো অত্যন্ত ছোট হয়ে থাকে।
এ ধরনের লেখাগুলো পড়ে পাঠকেরা সিদ্ধান্ত নেন যে তারা বইটি কিনবেন কি কিববেন না কিংবা ডকুমেন্টারি টা দেখবেন কি না এই সম্পর্কে।

ছোট ছোট রিভিউ ব্লগের এই লেখাগুলো পাঠকের সময় বাচায়।
কর্পোরেট ব্লগঃ
কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর লক্ষ্য থাকে কিভাবে তারা আরো বেশি মানুষের কাছে তাদের কোম্পানির বার্তা পৌঁছাতে পারে।

এই লক্ষ্যে তাদের কেউ কেউ বিভিন্ন রকম বিষয় নিয়ে ব্লগ খুলে তাদের কোম্পানির নামে।

কর্পোরেট কোম্পানিগুলো তাদের ব্লগ লেখার জন্য ভাল ভাল রাইটার দের অনেক টাকা দিতে থাকে। ব্লগ ও কর্পোরেট কোম্পানিগুলো র একটি প্রচার মাধ্যম হিসেবে পরিচিত।

সর্বশেষ vlogging নামে এক ধরনের বিশেষ ব্লগ কথা বলতে চাই।

এ নামের আগে blog এর b এর জায়গায় v আছে। এই v দ্বারা ভিডিও প্রকাশ করে এই রকম ব্লগ কে বুঝানো হয়।

এইরকম vlog তৈরি করা অনেকের জন্য সবচাইতে সহজ কারণ এটার জন্য আপনারা কিছুই লাগবে না লাগবে শুধু একটি ক্যামেরা এবং মাইক্রোফোন।

তারপর আপনি আপনার পছন্দ মতন কোন বস্তুর ভিডিও করে আপনি আপনার সোশ্যাল মিডিয়া অথবা ইউটিউবে ছেড়ে দিতে পারেন।

vlogging এর মাধ্যমে অনেক ব্লগার দেশে-বিদেশে অনেক খ্যাতি অর্জন করেছেন। Food vlogger, travel vlogger হওয়া যায় এরকম ব্লগ এর সাহায্যে।

এছাড়াও আছে আরও বিভিন্ন রকমের ব্লগ। এখানে আমরা আলোচনাটি আর বৃদ্ধি করতে চায় না।

আপনাদের এখানে আমার বিভিন্ন রকম vlog সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল যেন আপনারা ব্লগিং সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পান এবং আপনারা যদি ব্লগিং শুরু করতে চান তবে কোন বিষয়ে শুরু করবেন তার সম্পর্কেও ধারণা পান।

ব্লগিং থেকে আয়ের উপায়ঃ

ব্লগিং করে আয় এর বিভিন্ন রকম উপায় আছে।  যেমন আপনি যদি অন্যের ব্লগে লিখেন তবে আপনি যদি কোনো এক্সপিরিয়েন্স রাইটার হন তবে সেই ব্লগে লেখার জন্য সেই ব্লগের মালিক আপনাকে টাকা দিবে। আর এটা এটা ছাড়াও আপনি নিজের ব্লগ খুলতে পারেন।

নিজের ব্লগ খুলে আয় করার সবচেয়ে সহজ উপায় বলবো আমি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।

এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য অসাধারণ সব সুবিধা আছে।ধরুন কোনো টেক blogger মোবাইলের রিভিউ করল। মোবাইলে রিভিউ নিয়ে ব্লগের মধ্যে সে মোবাইলের বিভিন্ন দিক যেমন ক্যামেরা, মোবাইলের ব্যাটারি, মেমোরিইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করল।

তারপর লেখার শেষে মোবাইলটি কোথা থেকে পাওয়া যাবে সে সম্পর্কে লিংক দিল।

লিংকে ক্লিক করে যদি তার ব্লগ পড়তে আসা কেউ মোবাইল কিনে তবে সেখান থেকেই পেয়ে সে একটা শেয়ার পাবে আর এটাই হল এফিলিয়েট মার্কেটিং। এমাজন এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য বর্তমানে সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ছাড়াও ব্লগিং করে আপনি আরও বিভিন্ন ভাবে টাকা পেতে পারেন।

যেমন গুগলের বিজ্ঞাপন গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আপনি টাকা পেতে পারেন।

অথবা আপনার ব্লগিং এর ওয়েবসাইটে অন্য কেউ বিজ্ঞাপন দিলে তা থেকেও আপনি টাকা পেতে পারেন।

ব্লগের ডোনেশন থেকে আপনি অর্থ সংগ্রহ করতে পারেন, ব্লগের সাবস্ক্রিপশন ফি থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে পারেন।

ব্লগের মেইলগুলো তৃতীয় কোনো পক্ষের কাছে বিক্রি করে আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

মূলত ওয়েবসাইট ও ব্লগ থেকে আয়ের এর উৎস উৎস প্রায় একই।

আমাদের ওয়েবসাইট “ওয়েবসাইট থেকে আয়ের সহজ উপায়” লেখাটি পড়ে আপনারা দেখতে পারেন।

ব্লগিং এর জন্য কিছু টিপসঃ

ব্লগিং এর জন্য আমি আপনাদের কিছু টিপস শেয়ার করতে চাই আশা করি তা আপনাদের কাজে লাগবে।

  • ব্লগ লেখার সময় আপনার পছন্দসই বিষয়ে ব্লগ লেখা শুরু করুন।
  • আপনার পছন্দের বিষয়টি লেখার জন্য নির্বাচন করার পর আপনি এবার সে সম্পর্কিত বিভিন্ন রকম সার্চ কোনটা কতবার হয়েছে এটার জন্য ubersuggest ব্যবহার করতে পারেন। এটা ব্যবহার করলে আপনি কোন বিষয়ে লিখলেই কতজন ওই বিষয়টি সার্চ করেছে তা জানতে পারবেন। পাশাপাশি lsi ওয়ার্ড গুলোর জন্য lsigraph নামক ওয়েবসাইটের সাহায্য নিতে পারেন।
  • আপনি যদি কারো লেখা থেকে এমন কোন অংশ নেন তবে অবশ্যই সেই লেখা লেখকের এর কোটেশন এবং লেখাটি কোথা থেকে প্রকাশিত হয়েছে তা সহ উল্লেখ করুন।
  • অপ্রয়োজনীয়’ লেখা লিখে শুধু শুধু লেখার কলেবর থেকে বৃদ্ধি করা থেকে বিরত থাকুন।
    অপ্রয়োজনীয় বা বিষয়ের সাথে অপ্রাসঙ্গিক লেখা পাঠকের জন্য বিরক্তি র কারণ।
  • ব্লগে বিভিন্ন সময়ে করা পাঠকের মন্তব্যের গুরুত্ব দিন। তাদের মন্তব্যের জোরে নিজের ভুলগুলো খুজে বের করতে চেষ্টা করুন।
  • আপনার ব্লগের প্রচার আপনি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন।
  • আপনি প্রচুর পড়ুন। আপনি যত পড়বেন তত ভালো আপনি লেখক হতে পারবে এটার জন্য আপনি বড় বড় ব্লগারদের লেখা পড়ুন।

বাংলাদেশের কিছু ব্লগিং সাইটঃ

বাংলাদেশে অনেক সফল ব্লগিং ওয়েবসাইট আছে যারা ব্লগ থেকে অনেক টাকা ইনকাম করেছেন।

যেমন গ্রুপ ব্লগ এর কথা যদি আপনি বলেন তবে আমি সামহোয়্যারইনব্লগ, সদালাপ ইত্যাদি ব্লগের কথা বলতে পারি যেখানে ব্লগাররা লেখেন এবং এখানে অনেক পাঠক তাদের লেখা নিয়মিত পড়তে আসেন।

তারপর আমি বলতে পারি যেমন হচ্ছে কর্পোরেট ব্লগের কথা।

যেমন রকমারি ই-কমার্স বইয়ের প্রতিষ্ঠানটি ব্লগে তাদের বইয়ের প্রচারণা করার পাশাপাশি বিভিন্ন রকম লেখা পাঠকদের জন্য তাদের ব্লগে প্রকাশ করে।

আছে techtune এর মত টেকনোলজির জন্য বিখ্যাত ব্লগ।

বাংলাদেশের ব্লগিং এর জন্য অনেক ভালো সুযোগ আছে। আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটে সুন্দর ডিজাইন এবং সুন্দর সুন্দর লেখা দিতে পারেন তাহলে আপনি ভিজিটর খুব সহজেই পাবেন বাংলাদেশে হোক সে ব্লগ ইংরেজি বা বাংলায়।

ব্লগিং একটু বিশেষ ধরনের লেখালেখি। এটি তেমন বিশেষ কোনো কঠিন কাজ না।

আপনি চাইলে আজকে থেকে শুরু করতে পারেন। নিজের ব্লগ খুলে অথবা অন্যের ব্লগে লিখে আপনার ব্লগ লেখক হিসেবে যাত্রা শুরু হতে পারে।

তো কোন বিষয় ব্লগ লেখার চিন্তা ভাবনা করছেন আপনি? জানান আমাদের কমেন্ট বক্সে এবং আমাদের লেখাটি ভাল লেগে থাকলে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার করুন।

ব্লগিং সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের ওয়েবসাইটে করুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top