ইউটিউবের নতুন নিয়ম কানুন ২০২৩ – ইউটিউব কপিরাইট নিয়ম (আপডেট)

আপনি যদি ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ইউটিউবের নিয়ম কানুন জানতেই হবে। ইউটিউবের নিয়ম-কানুন ভালোভাবে জানা খুবই জরুরি যদি ইউটিউবে সফল হতে চান।

ইউটিউব এর নিয়ম কানুন ভালোভাবে জানা ছাড়া আপনি কোন ভাবে একটি ইউটিউব চ্যানেল কে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারবেন না/youtube চ্যানেলের জনপ্রিয় করতে পারবেন না।

ভালোভাবে সকল কাজ করার পরেও, একটি ভুলের কারণে আপনার স্বপ্নের youtube চ্যানেলটি বাতিল করে দিতে পারে youtube।

একজন সফল ইউটিউবার হওয়ার জন্য আপনাকে ইউটিউব নতুন আপডেট এর জন্য চোখ ও কান খাড়া রাখতে হবে।

আজকে আমাদের এই পোস্টে আমরা “ইউটিউবে নতুন নিয়ম কানুন ২০২২৩”, ” ইউটিউব কপিরাইট নিয়ম/ আইন (Copyright Rules)”, ” YouTube মনিটাইজেশন শর্ত (YouTube Monetization Rules)”, “YouTube পলিসি” এর ব্যাপারে বিস্তারিত জানব ইনশাআল্লাহ।

ইউটিউবের নতুন নিয়ম কানুন ২০২১
ইউটিউবের নতুন নিয়ম কানুন ২০২২

ইউটিউবের আইন বা নিয়ম কেন আপনাকে মানতে হবে?

ইউটিউব কর্তৃপক্ষ তাদের ভিডিও প্রকাশকদের জন্য কিছু নির্দিষ্ট নীতিমালা দিয়ে উল্লেখ্য দিয়েছে, যা অবশ্যই তাদের মেনে ইউটিউব চ্যানেলটি পরিচালনা করতে হবে।

আপনি যদি ইউটিউবে সফলতা পেতে চান বা ইউটিউব ভালো কিছু করতে চান ২০২৩ সালে তবে, ইউটিউব এর নিয়ম নীতি ভালো করে মেনে তবেই ইউটিউব এ কাজ করতে হবে। তা না হলে আপনি ইউটিউব থেকে ভালো কিছু অর্জন করতে পারবেন না।

ইউটিউবের নিয়ম কানুন ২০২৩ (YouTube Rules 2023)

এখন ইউটিউবের নিয়ম নীতি যতখানি কঠিন পূর্বে কিন্তু ততটা কঠিন ছিল না। ইউটিউবে ভিডিও প্রকাশকরা কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করার কারনেই ও ইউটিউব সম্পর্কিত অন্যান্য নীতিমালা ভঙ্গ করার কারণেই ইউটিউবেন নিয়মকানুন এতটা কঠিন হয়ে গিয়েছে।

এতে আমরা ইউটিউবে ভালোমানের ভিডিও পাওয়ার পাশাপাশি, প্রকৃত মেধা সম্পন্ন ব্যক্তিদের ইউটিউব ব্যবহার করে ভালো কিছু করার ভালো সুযোগ তৈরি হয়েছে। ইউটিউব এর এই কঠিন নিয়ম-নীতিগুলো ইউটিউবে দর্শক ও ভিডিও প্রকাশক উভয়েই লাভবান হয়েছে।

অবশ্যই দেখবেন: 



# অন্যের ভিডিও, অডিও, ছবি ব্যবহার করবেন না

আপনি অবশ্যই একটি ভিডিও থেকে ধারণা নিতে পারবেন। কিন্তু কোনমতেই সেই ভিডিওতে ব্যবহার করা কোন ভিডিও, অডিও, বা ছবি আপনি আপনার ভিডিওতে ব্যবহার করতে পারবেন না।

অন্যের ভিডিও অডিও ছবি আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ব্যবহার করলে আপনার ইউটিউব চ্যানেল টি কপিরাইট স্ট্রাইক (Copywright Strike) এর আওতায় পড়ে যেতে পারে।

আপনি যার ভিডিও অডিও বা ছবি কপি করবেন সে চাইলে আপনাকে কপিরাইট স্ট্রাইক দিতে পারবে তার ইউটিউব চ্যানেল থেকে। এটিই হল কপিরাইট ( Copywright Strike)। আপনার ইউটিউব চ্যানেলের যদি একে একে একসাথে তিনটি কপিরাইট স্টাইক এসে যায় তাহলে আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি ইউটিউব থেকে ডিলিট হয়ে যাবে সারা জীবনের জন্য। এটাই হল YouTube এর কপিরাইট পলিসি।

আপনার জন্য: ইউটিউব এসইও: YouTube ভিডিও #1 এ নিয়ে আসুন

কপিরাইট ফ্রি ভিডিও 

আমি আগেই বলেছি, আপনি চাইলেই যেকোন ভিডিও ক্লিপ আপনার ভিডিওতে ব্যবহার করতে পারবেন না। আপনি যে ভিডিওটি ইউটিউবে আপলোড করবেন সেটি প্রকৃত মালিক আপনাকে হতে হবে। তা না হলে যে কোন সময় আপনি যে ভিডিওটি আপনার ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করবেন সেই ভিডিওর মালিক আপনাকে কপিরাইট স্টাইক দিতে পারে। তাই মনোনিবেশ করতে হবে সব সময় নিজের ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করার।

তবে অনলাইনে কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে যেখান থেকে আপনি ভিডিও ক্লিপ আপনার ইউটিউব ভিডিওতে ব্যবহার করতে পারবেন। ওই ওয়েবসাইটগুলি তাদের ভিডিও ইউটিউবে সবাইকে ব্যবহার করার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে।

তাই সে সকল ওয়েবসাইট থেকে ভিডিও ক্লিপ ডাউনলোড করে আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ব্যবহার করলে তারা কোন কপিরাইট স্ট্রাইক আপনাকে দেবে না।

এরকম কয়েকটি জনপ্রিয় কপিরাইট ফ্রি ভিডিও ক্লিপ ডাউনলোড ওয়েবসাইট হচ্ছে:

কপিরাইট ফ্রি মিউজিক (Audio)

আপনি যেমন অন্যের ভিডিও ক্লিপ আপনার ভিডিওতে ব্যবহার করতে পারবেন না ঠিক তেমনি অন্যের অডিও বা মিউজিক ও আপনার ভিডিওতে ব্যবহার করতে পারবেন না।

আপনি যদি ইউটিউবে কপিরাইট ফ্রি মিউজিক এর নিয়ম তোয়াক্কা না করেন তাহলে হয়তোবা কোন এক সময় গিয়ে  অডিও মিউজিক এর কারনে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে স্টাইক এসে যেতে পারে।

ইউটিউব আপনার ভিডিওতে মিউজিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে খুবই সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে। তবে আপনি ইউটিউব অডিও লাইব্রেরি থেকেই কপিরাইট ফ্রি মিউজিক আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও তে ব্যবহার করতে পারবেন। ইউটিউব লাইব্রেরীতে (YouTube Audio Libary) শুধুমাত্র ইউটিউবারদের জন্য “Copywright Free Music”  ইউটিউব কর্তৃপক্ষ দিয়ে দিয়েছে। যাতে ইউটিউব এরা খুব সহজে মিউজিক ভিডিও তাদের ভিডিওতে ব্যবহার করতে পারেন কোন প্রকার সমস্যা ছাড়া।

তাছাড়াও আপনি অনলাইনে কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে সেখান থেকেও আপনি খুব সহজেই কপিরাইট ফ্রি অডিও মিউজিক ডাউলোড করে আপনার ভিডিওতে ব্যবহার করতে পারবেন, এতে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে কোন সম্যসা হবে না। কেননা সেই ওয়েবসাইটগুলো ইউটিউবারদের জন্য কপিরাইট ফ্রি ইউটিউব অডিও তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে।

এমন কয়েকটি ওয়েবসাইট হচ্ছে:

কঁপিরাইট ফ্রী ছবি (Picture)

ইউটিউব ভিডিও প্রকাশকদের জন্য তাদের ভিডিওতে ছবি ব্যবহার ক্ষেত্রে একই নিয়ম প্রযোজ্য যেরকম ভিডিও অডিও ক্ষেত্রে। ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও আপনাকে সতর্ক হতে হবে আপনার ইউটিউব ভিডিওতে ব্যবহারকৃত ছবির যেন প্রকৃত মালিক আপনি হন।

আর তা না হলে ইউটিউব ভিডিও এর অডিও-ভিডিও ব্যবহারের নিয়ম অনুযায়ী আপনি আপনার ইউটিউব ভিডিওতে অন্যের ছবি ব্যবহার করার জন্য কপিরাইট স্ট্রাইক পেয়ে যেতে পারেন।

তবে অনলাইনে অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে কঁপিরাইট ফ্রী ইমেজ ডাউনলোড করার। সেই সকল ওয়েবসাইট ভিজিট করে আপনি খুব সহজে আপনার ইউটিউব ভিডিওর জন্য কপিরাইট ফ্রি ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন।

আর সরাসরি আপনি গুগল থেকে ছবি অনুসন্ধান করে “Creative Commons licenses” এ ক্লিক করে কপিরাইট ফ্রি ছবি ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন।

# অশ্লীল ভিডিও বা ছবি ব্যবহার করবেন না

YouTube পর্নোগ্রাফি বা অ্যাডাল্ট কন্টেন্টের জন্য নয়। আপনার ভিডিওতে যদি এই ধরনের কোন কিছু থাকে, তাহলে ভিডিওটি আপনার নিজের হওয়া সত্বেও আপনি সেটি ইউটিউবে আপলোড করতে পারবেন না। তাহলে আপনার ভিডিওটি Nudity & sexual content policies আওতায় পড়ে যাবে।

এই প্রসঙ্গে মনে রাখবেন যে ইউটিউব আইন প্রয়োগকারীদের সাথে যথাসম্ভব সহায়তা করে এবং শিশুদের শোষণের ঘটনা দেখতে পেলে অভিযোগ জানাই।

# অসম্পর্কিত ভিডিও টাইটেল বা ছবি ব্যবহার করবেন না

ইউটিউবে অসম্পর্কিত ভিডিও টাইটেল বা ছবি ব্যবহার স্প্যাম এর আওতায় পড়ে। এ বিষয়ে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে ইউটিউবে বেশি ভিউ পাওয়ার জন্য আজেবাজে শব্দ ভিডিও টাইটেল ভিডিও ডিসক্রিপশনে ব্যবহার করা যাবে না।

অসম্পর্কিত ভিডিও টাইটেল বলতে বুঝায় আপনার ভিডিও হচ্ছে এক বিষয়ের কিন্তু আপনি টাইটেল লিখলেন অন্য বিষয়ে, মানে যেটি আপনার ভিডিওর সাথে যায় না।

# সোশ্যাল মিডিয়াতে অতিরিক্ত শেয়ার করবেন না

অতিরিক্ত কোন জিনিস ভালো না সেটা আমরা সবাই জানি। ইউটিউব ভিডিও ক্ষেত্রেও সেই একই কথা প্রযোজ্য। আপনার ইউটিউব ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে অতিরিক্ত শেয়ার করার কারণে আপনার ইউটিউব মনিটাইজেশন ডিজেবল হয়ে যেতে পারে।

কারণ গুগোল সবসময় চায় কোয়ালিটি ভিজিটর বা ট্রাফিক। ইউটিউব ভিডিও কোয়ালিটি ট্রাফিক বলতে বোঝায় ইউটিউবে আপনার টপিক এর বিষয়ে যারা সার্চ করতেছে সেসকল ভিজিটরকে।

এখন আপনি যদি ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করেন তারা তো আপনার কোয়ালিটি ট্রাফিক হবে না। আর যদিও হয় তবে সেটা অনেক কম। সেজন্য ইউটিউব অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার পছন্দ করেনা।

ইউটিউব মনিটাইজেশন নীতিমালা ২০২৩

আপনার ইউটিউব চ্যানেল থেকে টাকা আয় করার জন্য আপনার ইউটিউব চ্যানেলের মনিটাইজেশন পেতে হবে। ইউটিউব মনিটাইজেশন পাওয়ার জন্য ইউটিউব মনিটাইজেশন এপ্লিকেশন এর নতুন কন্ডিশন পূরণ করতে হবে।

২০১৮ সালের পূর্বে ইউটিউবে মনিটাইজেশন পাওয়া অনেক সহজ ছিল বর্তমান সময়ের চেয়ে। কেননা সেই সময় একটা ইউটিউব চ্যানেলের সর্বমোট ১০,০০০ ভিও হলে ওই চ্যানেল থেকে ইউটিউব মনিটাইজেশন এর জন্য আবেদন করা যেত।

কিন্তু বর্তমান সময়ে একটি ইউটিউব চ্যানেলের এডস্নেস মানে মনিটাইজেশন পাওয়ার জন্য অনেক শর্ত পূরণ করতে হয়। যা আমি মনে করি একজন ইউটিউবার অনেক ধৈর্য্য ও শ্রমের মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব।

শর্তগুলো হচ্ছে:

  • আপনার ইউটিউব ভিডিওয়ের সর্ব মোট দেখার পরিমান ৪,০০০ ঘন্টা হতে হবে। অর্থাৎ আপনার ইউটিউব ভিডিও যখন ইউটিউব দর্শকরা ৪,০০০ ঘন্টা দেখবে ( 4,000 hours watch time ) আপনার ইউটিউব এনালাইটিক্স এর হিসাব অনুযায়ী গত এক বছরে তখন আপনি ইউটিউব মনিটাইজেশন এর জন্য আবেদন করতে পারেন।
  •  ১,০০০ সাবস্ক্রাইবার অর্জন করতে হবে শেষ এক বছরের ভিতর।
  • ইউটিউব এর সকল অফিশিয়াল নিয়ম নীতি অনুযায়ী ঠিক থাকতে হবে।

ইউটিউব চ্যানেল Verification Badge এর নিয়ম

ইউটিউব চ্যানেল “Verification Badge” এর কারণে একটি ইউটিউব চ্যানেলকে অনেক বেশি ট্রাস্ট এর ভ্যালু তৈরি করে ভিওয়ারদের কাছে।

ইউটিউব চ্যানেল “Verification Badge” হচ্ছে আপনি যখন “Verification Badge” আলা ইউটিউব চ্যানেলে ভিজিট করবেন তখন আপনি দেখতে পাবেন ইউটিউব চ্যানেলের নামের উপরে একটি টিকমার্ক রয়েছে। ওই টিকমার্ক টি হল “YouTube Channel Verification Badge”।

ইউটিউব চ্যানেল “Verification Badge” পেতে হলে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে।

  • ইউটিউব চ্যানেল “Verification Badge” এর জন্য আবেদন করতে হলে আপনার ইউটিউব চ্যানেলের কমপক্ষে ১ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার করতে হবে। তা না হলে আপনি “YouTube Channel Verification Badge” আবেদন করতে পারবেন না।
  • ইউটিউব চ্যানেলের কভার ফটো থাকতে হবে।
  • ইউটিউব চ্যানেল লোগো থাকতে হবে।
  • ইউটিউব চ্যানেলে কোনরকম কমিউনিটি গাইডলাইন স্ট্রাইক বা কপিরাইট স্টাইক থাকা যাবে না।

YouTube নিয়ম কানুন FAQ

#কপিরাইট ক্লেইম কি?

কপিরাইট ক্লেইম হচ্ছে “ইউটিউব কপিরাইট স্ট্রাইক” এর মত। তবে সব চ্যানেলে কিন্তু কপিরাইট ক্লেইম দিতে পারেনা। কারন ইউটিউবে যে সকল চ্যানেল গুলির কনটেন্ট আইডি রয়েছে শুধু সেই সকল ইউটিউব চ্যানেল গুলো কপিরাইট ক্লেইম অন্য ইউটিউব চ্যানেলকে দিতে পারে।

সর্বশেষ,

আশাকরি আমাদের আজকের অনলাইন ইনকাম বিডি এর পোস্টটি যারা ইউটিউবে ক্যারিয়ার গড়তে চান তাদের জন্য অনেক হেল্পফুল হবে।

আর আপনার যদি “ইউটিউব নিয়ম কানুন” সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট বক্সে আপনার প্রশ্নটিই করে যাবেন। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো আপনার সমস্যা বা প্রশ্নের সমাধান করার জন্য।

আমাদের কামনা শুভ হোক আপনার ইউটিউব পথ চলা।

আর পোস্ট আপনার জন্য:


Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top