টিকটকে ভাইরাল হওয়ার উপায় ২০২৪ – আপনার ভিডিও ভাইরাল করুন

টিকটকে ভাইরাল হওয়ার উপায়: একটা সময় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিল ইউটিউব। কিন্তু বর্তমানে এই জায়গা প্রায়ই দখল করে নিয়েছে টিকটক। টিকটিকের যাত্রা শুরু হয় শর্ট ভিডিও দিয়ে। ছোট ছোট ভিডিও ক্লিপই আপলোড করা যেতো টিকটকে। এবং দেখা যায় মানুষ এসব শর্ট ভিডিও প্রচুর দেখছে।

তাই ইউটিউব এবং ফেসবুকও তাদের শর্ট ভিডিও ফিচার নিয়ে আসে৷ যেটি রিলস নামে পরিচিত। আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব টিকটক ভিডিও ভাইরাল হওয়ার/টিকটকে ভাইরাল হওয়ার উপায় নিয়ে কয়েকটি কার্যকরী উপায় নিয়ে। তাহলে চলুন শুরু করি।

টিকটকে ভাইরাল হওয়ার উপায়
টিকটকে ভাইরাল হওয়ার উপায়

আপনাকে এখনই বলে রাখতেছি, আপনি যদি টিকটকে ভাইরাল হওয়ার উপায় ২০২৪ সালে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান। তাহলে অবশ্যই আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়বেন। আপনি শেষ পর্যন্ত পড়লে আশা করি টিকটকে ভাইরাল হওয়ার উপায় নিয়ে ভালো জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন। যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই tiktok এ আপনার ভিডিও ভাইরাল করতে পারবেন।

অবশ্যই দেখবেন:



টিকটকে ভাইরাল হওয়া বলতে কি বুঝায়? (What Is Tiktok Viral?)

টিকটকে ভাইরাল হওয়ার উপায় জানতে হলে আপনাকে প্রথমে বুঝতে হবে টিকটকে ভাইরাল বলতে কি বুঝায়? ওয়েল আপনার ভিডিও যখন ভালো রিচ হবে এবং ভালো এনগেজমেন্ট পাবেন আপনি সেটিই হলো ভাইরাল হওয়া।

এখন প্রশ্ন হলো রিচ কিংবা এনগেজমেন্ট কি? 

টিকটক রিচ কি:- আপনার ভিডিও টি কত মানুষের কাছে পৌঁছালো তা হলো ভিডিও’র রিচ। অথবা অন্য ভাবে বলা যায় ভিডিওতে ভিউস সংখ্যাও রিচকে মিন করে। যদি ভালো ভিউ হয় তাহলে ভিডিওটি অনেক মানুষের কাছে পৌঁছালো তার মানে রিচ ও বেশি। 

টিকটক এনগেইজমেন্ট কি?:- যখন কেউ আপনার ভিডিওতে লাইক দিবে অথবা ভিডিও দেখার পরে সেটি শেয়ার দিবে এবং আপনার একাউন্টকে ফলো দিবে তখন সেটিকে এনগেইজমেন্ট বলে।

অর্থাৎ লাইক কমেন্ট শেয়ার এবং ফলো দেওয়ার মাধ্যমে আপনার অডিয়েন্স আপনার সাথে এনগেইজড থাকার বিষয়টি এনগেইজমেন্ট বলে। 

একটি ভিডিও ভাইরাল হতে হলে আপনার ভিডিওতে রিচ এবং এনগেজমেন্ট দুটিই থাকতে হবে। তা নাহলে শুধু রিচ অথবা শুধু এনগেজমেন্ট দিয়ে আপনি ভালো কিছু করতে পারবেন না।

আজকাল ফেইক লাইক, কমেন্ট এবং ভিউস কেনা পাওয়া যায়। কিন্তু দেখা যাবে এসব ফেইক রিচ এবং এনগেজমেন্ট আপনার একটি ভিডিওতেই সীমাবদ্ধ থাকবে। পরবর্তী ভিডিওতে আবারও রিচ এবং এনগেজমেন্ট ডাউন হবে।

তাই চেষ্টা করবেন আপনার একাউন্টের রিচ এবং এনগেজমেন্ট অর্গানিকলি বাড়াতে৷ প্রতিটা ভিডিও অর্গানিকলি ভাইরাল করতে। তা কিভাবে করবেন আসুন সেটি জেনে নিই। 

টিকটকে ভাইরাল হওয়ার উপায় (Ways To Go Viral On Tiktok)

টিকটক বর্তমানের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম। যদি আমার টিকটক ভিডিও ভাইরাল হয় তাহলে আপনার অনেক আর্নিং অপরচুনিটি তৈরি হবে। এখন আমি আপনাদের টিকটকে ভাইরাল হওয়ার উপায় এর সবচেয়ে ইফেক্টিভ কিছু ট্রিকস শেয়ার করব। আসুন শুরু করি:- 

কোয়ালিটি কন্টেন্ট 

কথায় আছে কন্টেন্ট ইজ কিং। আপনার অনলাইন জগতে ভালো কিছু করতে হলে আপনাকে আপনার কন্টেন্টের কোয়ালিটি এনসিউর করতে হবে। যদি ভালো কন্টেন্ট বানান তাহলে আজ না হয় ভাইরাল হবেনই।

আপনারা অনেকেই প্রশ্ন করবেন কোয়ালিটি কন্টেন্ট কি? একটা কোয়ালিটি কন্টেন্টে কি কি বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে? কোয়ালিটি কন্টেন্টের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলে এটি অডিয়েন্সের ভালো লাগতে হবে।

যদি আপনি এন্টারটেইনমেন্ট কন্টেন্ট বানান তাহলে খেয়াল রাখতে হবে আপনার অডিয়েন্স যেনো এন্টারটেইন হয় আর যদি আপনি ইনফরমেটিভ ভিডিও বানান তাহলে খেয়াল রাখবেন আপনার অডিয়েন্স যেনো সঠিক এবং উপযুক্ত ইনফরমেশন পায়। 

নিয়মিত কন্টেন্ট দেওয়া

অনলাইন রিলেটেড যেকোনো কাজেই স্কিলের পাশাপাশি আরেকটি জিনিস দরকার সেটি হলো ধৈর্য। আপনি হয়ত রাতারাতি ভাইরাল হয়ে যাবেন না। রাতারাতি লক্ষ লক্ষ ফলোয়ারস গেইন করতে পারবেন না।

কিন্তু আপনি যদি নিয়মিত পরিশ্রম করে লেগে থাকতে পারেন তাহলে একদিন সফল হবেনই৷ আপনি হয়ত প্রথমে তেমন ভিউস বা লাইক কমেন্ট পাবেননা।

কিন্তু আপনাকে নিয়মিত কন্টেন্ট আপলোড করতে হবে। যত পারেন তত কন্টেন্ট আপলোড করবেন৷ আবার বেশি কন্টেন্ট আপলোড করতে গিয়ে কোয়ালিটির দিকে কমফ্রোমাইজ করলে হবেনা৷ কোয়ালিটি এবং রেগুলারিটি দুটিই একসাথে মেইনটেইন করবেন। 

সঠিক নিশ বাছাই করা 

নিশ মানে হলো আপনি যে টপিক নিয়ে ভিডিও বানাবেন সেটি। আপনাকে অবশ্যই এমন কোনো বিষয় নিয়ে ভিডিও বানাতে হবে যেটা মানুষ দেখে।

আপনি যদি এমন কোনো নিশ নিয়ে ভিডিও বানান যে ভিডিওর অডিয়েন্স খুবই কম তাহলে আপনার ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম৷ টিকটকে বেশিরভাগ সময়ই এন্টারটেইনমেন্ট ভিডিও ভাইরাল হয়। তার কারন ছোট বড় যেকোনো মানুষই এন্টারটেইনমেন্ট রিলেটেড ভিডিও দেখবেন।

তাই আপনি সঠিক ভাবে রিসার্চ করে কোন টপিকে ভালো অডিয়েন্স থাকবে ঐ টপিকে ভিডিও তৈরি করুন। 

ফলো দ্যা ট্রেন্ড

আপনি যে টপিকে ভিডিও বানাচ্ছেনই না কেন আপনি সব সময় চেষ্টা করবেন ট্রেন্ড ফলো করতে। বর্তমানে কোন টপিক বেশি চলছে। কোন টপিক নিয়ে মানুষ বেশি আগ্রহী সেগুলো নিয়ে কন্টন্ট বানানোর চেষ্টা করুন৷ যেকোনো জায়গাই আপনাকে ভাইরাল হতে হলে অবশ্যই ট্রেন্ড ফলো করতে হবে। 

ভিডিও লেন্থ

টিকটকে প্রথমে শুধু শর্ট ভিডিও দেওয়ার সিস্টেম থাকলেও এখন আপনি সর্বোচ্চ ৫ মিনিট পর্যন্ত ভিডিও দিতে পারবেন৷ কিন্তু দেখা যায় ১৫-২০ সেকেন্ডের ভিডিও গুলোই বেশি ভাইরাল হয়। তাই আপনি চেষ্টা করবেন ভিডিও লেন্থ ১৫-২০। সাধারণত মানুষ একটি ভিডিওতে বেশিক্ষণ টাইম স্পেন্ড করতে চাইনা। তাই শর্ট ভিডিও-ই বেশি দেখে।

এনগেইজড উইথ অডিয়েন্স

আপনার অডিয়েন্সের সাথে যখন আপনি এনগেজড থাকবেন তখন দেখবেন আপনার রিচ এবং এনগেজমেন্ট বাড়ছে। এনগেইজড থাকা মানে হলো অডিয়েন্সের কমেন্টের রিপ্লাই দেওয়া।

আপনি চাইলে অডিয়েন্স থেকে আপনার পরবর্তী ভিডিওর আইডিয়া নিতে পারেন। অডিয়েন্স থেকে নানা প্রশ্ন কালেক্ট করে সেগুলোর উত্তর দেওয়া যেটাকে আমরা কিউএনএ ভিডিও বলি। সম্ভব হলে তাদের সাথে মিটআপের আয়োজন করা। আপনি আপনার অডিয়েন্সের সাথে যত মিশবেন আপনার অডিয়েন্স সংখ্যাও তত বাড়বে। 

প্রোপার হ্যাশট্যাগ ও টাইটেল ব্যবহার করা 

টিকটকে ভিডিও ভাইরাল করার জন্য আপনাকে ভিডিও ভালোভাবে অপটিমাইজড করতে হবে যেনো মানুষ সার্চ করে আপনার ভিডিও খুঁজে পায়। আর তার জন্য আপনাকে ভালো ভাবে রিসার্চ করতে হবে। রিসার্চ করে সঠিক টাইটেল এবং হ্যাশট্যাগ ব্যাবহার করবেন ভিডিও তে। 

ভালো এডিটিং করা

আপনার ভিডিও ভালো এডিট করতে পারলেই অডিয়েন্স পুরো ভিডিও দেখবে। না হয় দেখবে না৷ তার জন্য আপনাকে ভিডিওতর সুন্দর কালার গ্রেডিং অথবা ইফেক্ট ব্যবহার করতে হবে৷ আর মনে রাখবেন ভিডিও’র সাউন্ড কোয়ালিটি যেনো ভালো এবং স্পষ্ট হয়৷ 

সুন্দর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ব্যবহার

আপনার ভিডিওর কোয়ালিটি এবং এনগেজমেন্ট কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিবে একটি সঠিক এবং সুন্দর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক। কোন ভিডিওর সাথে কেমন মিউজিক দেওয়া যাবে সেটা আপনাকে রিসার্চ করে বের করতে হবে। আপনি কল্পনাও করতে পারবেনা একটি পারফেক্ট ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক আপনার ভিডিওর কোয়ালিটি এবং এনগেজমেন্ট ম্যাজিক্যালি বাড়িয়ে দিবে।

সেলিব্রেটিদের সাথে ডুয়েট করা

টিকটকে অনেক সেলিব্রেটি আছে যাদের অনেক ফ্যান ফলোয়ারস আছে। আপনি তাদের সাথে নানা ডুয়েট ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। প্রথমত টিকটকে ডুয়েট ভিডিও গুলো মানুষ বেশি দেখে। দ্বিতীয়ত যাদের অলরেডি অনেক বড় ফ্যান বেস আছে তাদের সাথে ডুয়েল করলে আপনার রিচ বাড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। 

টিকটক গেমে পার্টিসিপ্যান্ট করা

টিকটকে নানা সময় কতগুলো গেম আসে। যেগুলোতে পার্টিসিপ্যান্ট করে ভিডিও তৈরি করলে ভালো রিচ আসে। চেষ্টা করবেন সেসব গেম গুলোতে রেগুলার পার্টিসিপ্যান্ট করতে। 

কন্ট্রোভারশিয়াল ভিডিও না বানানো 

অনেকেই চাই নানা কন্ট্রোভারশিয়াল ভিডিও বানিয়ে ভাইরাল হতে। এটা থেকে দূরে থাকবেন। কি দরকার মানুষের ঘৃণা নিয়ে ভাইরাল হওয়ার? আপনি হয়ত আজকে ভাইরাল হলেন এমন ভিডিও বানিয়ে কিন্তু কালকে তো কেউ আপনার ভিডিও দেখবে না৷ তাই এমন কাজ থেকে দূরে থাকবেন। মানুষের ইমোশনে আঘাত করবে এমন কোনো টপিকে ভিডিও পাবলিশ করবেনা দয়া করে। 

কন্টেন্ট ড্রাফট না করা 

আমরা যখন কোনো ভিডিও পাবলিশ করি তারপরে কোনো সমস্যা হলে আমরা ড্রাফট করে আবার ইডিট করে পাবলিশ করি। এতে এনগেজমেন্ট কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে অনেক। তাই চেষ্টা করবেন সবকিছু চেক করেই ভিডিও পাবলিশ করতে আর যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে একদম রিমুভ করে আবার পাবলিশ করুন। 

টিকটকে ভাইরাল হওয়ার উপায় FAQs

টিকটকে ফলোয়ারস কিনে ভাইরার হওয়া যায়? 

আপনি ফলোয়ারস কিনে ইনিসিয়ালি কিছু রিচ পেলেও পেতে পারেন। তবে যেহেতু কেনা ফলোয়ারস মেক্সিমামই ফেইক। তাই কয়েকদিন পরে আপনার এনগেজমেন্ট একদম ডাউনে যাবে৷ তখন আপনার টাকাও লস। এজন্য ফলোয়ারস কেনাকে কখনো এপ্রেসিয়েট করি না। অর্গানিক্যালি রিচই করাই সবচেয়ে ভালো।

কি করলে এনগেজমেন্ট ডাউন হয়?

যদি আপনি রেগুলার কন্টেন্ট নানদেন তাহলে এনগেজমেন্ট ডাউন হতে থাকে। আর অনেকেই বলে ফেইক ফলোয়ারস নিলে এনগেজমেন্ট ডাউন হয়। 

টিকটকে ভাইরাল হওয়ার উপায় নিয়ে শেষ কথা,

আশা করছি আপনাদের টিকটকে ভাইরাল হওয়ার উপায় নিয়ে বিস্তারিত ধারণা দিতে পেরেছি। সততা এবং পরিশ্রমের সাথে কাজ করলে অবশ্যই সফলতা পাবেন৷ যদি পোস্টটি পড়ে উপকৃত হন তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য।

আপনি যদি নিয়মিত টেকনোলজি পোস্ট বা অনলাইন ইনকাম সম্পর্কিত পোস্ট দেখতে চান। তাহলে আমাদের ওয়েব সাইটে নিয়মিত আসতে পারেন। আমরা নিয়মিত বাংলা ভাষায় প্রযুক্তি বিষয়ক ও অনলাইন বিষয়ক আর্টিকেল প্রকাশ করি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top