শেয়ার্ড হোস্টিং কি?, দাম, সুবিধা, কেন কিনবেন?

হোস্টিং ব্যবহারকারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত এবং জনপ্রিয় একটি হোস্টিং হলো শেয়ার্ড হোস্টিং (Shared Hosting)। কিন্তু আমরা এই শেয়ার্ড হোস্টিং সম্পর্কে কতটুকু জানি? যতটুকুই জানেন না কেন আজকের এই পোস্ট পড়ে আপনি শেয়ার্ড হোস্টিং নিয়ে অনেক কিছুই জানতে পারবেন এই ব্যপারে আমি আশাবাদী।

আজকের এই পোস্টে আমরা আপনাদের শেয়ার্ড হোস্টিং নিয়ে বিষদ একটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। চলুন শুরু করা যাক।

আর হ্যাঁ অবশ্যই, বিস্তারিত জানার জন্য আপনাকে শেষ পর্যন্ত এই শেয়ারেড হোস্টিং কি আর্টিকেলটি পড়তে হবে। শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনি এই শেয়ার্ড হোস্টিং (Shared Hosting) সম্পর্কিত ভালো একটি ধারণা পেয়ে যাবেন।

শেয়ার্ড হোস্টিং কি?

শেয়ার্ড হোস্টিং কি? – What Is Shared Hosting?

শেয়ার্ড হোস্টিং (Shared Hosting) হলো এমন এক ধরনের হোস্টিং যেখানে একটা ফিসিক্যাল সার্ভারকে অনেক জন শেয়ার করে ব্যবহার করেন। ইউজাররা অনেক অল্প দামে সার্ভারের রিসোর্স গুলো ব্যবহার করতে পারেন।

একটি শেয়ার্ড সার্ভার একশোটার মতো ইউজার হোস্ট করতে পারেন। প্রত্যকটা ইউজারই শেয়ার্ড সার্ভারের ডাটা বেস, ডিস্ক স্পেস, ইমেইল একাউন্ট এর মতো ফিচার গুলো ব্যবহার করতে পারে। সিস্টেমের রিসোর্স গুলো ডিমান্ড অনুযায়ী কাস্টমারসদের শেয়ার করা হয়৷ এবং সবাই RAM, CPU, MySQL server, Apache server এবং Mail server থেকে একটা পার্সেন্টেজ ব্যবহার করার সুযোগ পায়।

সবচেয়ে কম খরচে ওয়েবসাইট লাইভ করার ভালো একটা মাধ্যম হলো শেয়ার্ড হোস্টিং ব্যবহার করা৷ এই ধরনের হোস্টিং গুলো ছোট ওয়েবসাইট বা ব্লগ সাইটের জন্য ভালো যাদের হাই কনফিগারেশন এবং হাই ব্যান্ডউইথ লাগে না। যদিও হাই ট্রাফিক সাইট গুলোর জন্য শেয়ার্ড হোস্টিং যথেষ্ট না।

যাদের এত টেকনিক্যাল নলেজ নেই তাদের জন্য একটা রিয়েল লাইফ উদাহরণ দিয়ে বুঝাই। আপনি নিজের প্রাইভেট গাড়িতে করেও অফিসে যেতে পারেন আবার লোকাল গাড়িতেও। আপনার প্রাইভেট গাড়িতে গেলে খরচ অনেক বেশি হবে অন্যদিকে লোকাল গাড়িতে গেলে খরচ অনেক কম হবে। প্রাইভেট গাড়িতে গেলে আপনি প্রতিদিন সময়মত অফিসে পৌঁছাতে পারবেন অন্যদিকে লোকাল গাড়িতে হলে কখনো আপনি লেইট হতে পারেন, বাস মিস করতে পারেন অথবা বাসে সিট না পেয়ে দাড়িয়ে যেতে হতে পারে।

এখানে লোকাল বাস হলো শেয়ার্ড হোস্টিং এবং প্রাইভেট গাড়ি হলো ভিপিএস। শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের একটা বড় সুবিধা হলো রিজেনএবল দাম কিন্তু দাম কম হওয়ার পরেও অনেক সময় অনেক লিমিটেশনে পড়তে হয় শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে।

শেয়ার্ড হোস্টিং আসলে একটি এন্ট্রি লেভেল হোস্টিং যেটি যেকোন ওয়েবসাইট শুরুর ক্ষেত্রে ভালোই কাজ করে। এখানে যেসব রিসোর্স আছে সেগুলো দিয়ে যেকোন এন্ট্রি লেভেল লোকাল বিজনেস, স্টার্ট আপ, পার্সোনাল সাইট রান করানো যাবে।

অনেকেই আছেন যারা ওয়েব হোস্টিং নিয়ে তেমন কোনো আইডিয়া রাখেনা তাদের জন্য শেয়ার্ড হোস্টিং ভালো। কারন বেশিরভাগ শেয়ার্ড হোস্টিং প্যাকেজ অনেক ইউজার ফ্রেন্ডলি কন্ট্রোল প্যানেল এবং খুব সহজেই প্রয়োজন মতো ওয়েবসাইট ফাইল আপলোড, জিমেইল একাউন্ট খোলা এবং ডাটাবেস এড করা যায়।

শেয়ার্ড হোস্টিং অনেক জনপ্রিয় কারন এটা অনেক কস্ট এফিসিয়েন্স। যেহেতু একটা সার্ভার অনেকেই শেয়ার করে ব্যবহার করে তাই এটার ইনডিভিজুয়াল খরচ অনেক কম হয়।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন: 



শেয়ার্ড হোস্টিং কিভাবে কাজ করে? – How Does Shared Hosting Work?

আমরা জেনে এসেছি শেয়ার্ড হোস্টিং অনেক গুলো সাইট হোস্ট থাকে। এই সাইট সংখ্যা কখনো কয়েক শত থেকে কয়েক হাজার হতে পারে ডিপেন্ড করে হোস্টিং-এ এভেইএবল রেম, ড্রাইভ স্পেস, প্রোসেসিং স্পিড এর উপর৷ শেয়ার্ড সার্ভার একটা ডেডিকেটেড সার্ভার মতোই কিন্তু এই সার্ভারটা অনেকজন ক্লায়েন্টের সাথে শেয়ার হয়। প্রতিটি ক্লায়েন্টের ইউজার একাউন্ট ফাইল এবং যেকোনো এপ্লিকেশন সার্ভারে একটি ভিন্ন পার্টিশনে স্টোর করা হয়। কোন ইউজার অন্য কারো ডাটার একসেস পারবেনা এবং রুটও করতে পারবেনা।

কেন শেয়ার্ড হোস্টিং কিনবেন? – Why Buy Shared Hosting?

শেয়ার্ড হোস্টিং কেনার অনেক কারন আছে চলুন একটু দেখে আসি কারন গুলো :-

কম দাম:– সবচেয়ে কম দামের হোস্টিং হলো শেয়ার্ড হোস্টিং। যারা একেবারেই নতুন এবং যথেষ্ট ইনভেস্টমেন্ট নেই হোস্টিং এর জন্য তাদের জন্য এটা বেস্ট চয়েস। একটি এন্ট্রি লেভেল ওয়েবসাইট রান করার মতো সব রিসোর্সই এই শেয়ার্ড হোস্টিংয়ে আছে। আপনি যদি একটু খরচ করে শেয়ার্ড হোস্টিং কোনো প্যাকেজ তাহলে আনলিমিটেড ডিস্ক স্পেস, ব্যান্ডউইথ এবং ওয়েবসাইট এডের সুযোগ পাবেন।

ফেক্সিবল:– এখন হোস্টিং প্রোভাইডার গুলো খুব সহজেই শেয়ার্ড হোস্টিং প্যাকেজ আপডেট করার সুযোগ দিচ্ছে তাই আপনি চাইলেই যেকোনো সময় আপনার প্ল্যান আপডেট দিতে পারেন।

ম্যানেজ করা সহজ:- শেয়ার্ড হোস্টিং ম্যানেজ করা অনেক সহজ এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি। যেকোন মানুষ খুব সহজেই এটি ব্যবহার করতে পারেন। এখন হোস্টিং প্রোভাইডার গুলো ইজি এবং অরগানাইজড কন্ট্রোল প্যানেল প্রোভাইডা করে যার কারনে এটি ব্যবহার আরো সহজ হয়েছে।

অনেক ডোমেইন হোস্ট করতে পারবেন:– আপনি চাইলে আপনার শেয়ার্ড হোস্টিংয়ে একের অধিক ডোমেইন হোস্ট করতে পারবেন৷ কতটি পারবেন এটি আপনি কোন প্ল্যান পারচেজ করেছেন তার উপর নির্ভর করে। কোনো প্ল্যানে ৫ টা কোনটাই ১০ টা কোনটাই আবার আনলিমিটেড। আপনাকে জাস্ট ডোমেইন আলাদা ভাবে কেনা লাগবে। হোস্টিং একটিতেই সব হোস্ট করতে পারবেন।

মেইনটেইনেইনসের ঝামেলা নেই:– শেয়ার্ড হোস্টিং নিলে অন্য হোস্টিং গুলোর মতো মেইনটেইনেইসের ঝামেলা থাকবে না৷ কারন এটি এমনে লো মেইনটেইনেইনস এবং যদি কোনো সমস্যা হয় ও তাহলে হোস্টিং প্রোভাইডার তাদের আইটি এক্সপার্ট দিয়ে এগুলো ফিক্স করাবে এবং তারাই সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখবে এই বিষয়ে। আপনাকে এ বিষয়ে কোন চিন্তাই নিতে হবেনা।

ডায়ানামিক সাইট রান করা যায় :- ফেসবুক, টুইটার, কোরা এগুলো হলো ডায়ানামিক ওয়েবসাইট। আপনি চাইলে এধরণের ওয়েবসাইটও শেয়ার্ড হোস্টিংয়ে রান করাতে পারবেন। আবার চাইলে ওয়ার্ডপ্রেস, জোমলার মতো সিএমএস ব্যবহার করেও সাইট রান করতে পারেন। শেয়ার্ড হোস্টিং দিয়ে আপনি চাইলে যেকোন পিএইচপি স্ক্রিপ্টও রান করাতে পারবেন কোন সমস্যা ছাড়া।

শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের অসুবিধা:-

স্পিড :- বাকি সব হোস্টিং এর তুলনায় শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের স্পিড এবং পারফরম্যান্স কম ভালো। তবে আপনি যদি সঠিকভাবে ওয়েবসাইট অপটিমাইজেশন করতে পারেন তাহলে মোটামুটি ভালো স্পিড পেতে পারেন।

ট্রাফিক :- যদি সাইটে অনেক ট্রাফিক আসে তাহলে সাইট ডাউন হয়ে যায় লোড নিতে পারে না।

রিসোর্স লিমিটেশন:- সব ধরনের রিসোর্স নিজের ইচ্ছে মতো ইউজ করা যায় না কিছু লিমিটেশন থাকে।

শেষ কথা :-

আজকের এই পোস্টে আপনাদের শেয়ার্ড হোস্টিংস্টিং নিয়ে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করছি উপকৃত হয়েছেন।

যদি আপনার কাছে শেয়ার্ড হোস্টিং (Shared Hosting) সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকে তাহলে আমাদেরকে কমেন্ট করে আপনার প্রশ্ন জানাতে পারেন। আমরা সব সময় আমাদের ভিজিটরের কমেন্টের মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top