ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম | কিভাবে প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করবেন?

ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম ২০২৩: Youtube নামটির সাথে অপরিচিত এমন মানুষ পাওয়াটা খুবই কঠিন। বর্তমানে আমরা সবাই কোন না কোন ভাবে Youtube এর সাথে জড়িত আছি। 

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক সমস্যার সমাধান আমরা পাচ্ছি Youtube এর মাধ্যমে। আমরা অনেকেই Youtube এ নিজেদের কন্টেন্ট ও শেয়ার করছি। কন্টেন্ট শেয়ার করার জন্য আমাদের দরকার একটি ইউটিউব চ্যানেল।

কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না কিভাবে একটি প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হয়। এখন হয়ত অনেকের মনেই প্রশ্ন আসতে পারে কেন প্রোফেশনাল ভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হবে?  তার উত্তর জানার আগে চলুন সামান্য করে জেনে নিই Youtube সম্পর্কে।

আর্টিকেলে যা যা আছেঃ

ইউটিউব কি?

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম হলো ইউটিউব। এটি ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখ গঠিত হয়। বর্তমানে প্রায় ২ বিলিয়ন ইউজার রয়েছে ইউটিউবে।

এটিকে গুগোলের পরে দ্বিতীয় জনপ্রিয়  সার্চ ইন্জিনও বলা হয়। এটি গুগোলেরই একটি অঙ্গসংগঠন। ইউটিউব এ বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখিয়ে Youtube কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন গড়ে ১৩০০ মিলিয়ন ডলার আয় করেন।

যা বাংলাদেশী টাকায় ১০ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা (প্রায়)। এবং এই টাকার ৫০% তারা দেয় ইউটিউব কন্টেন্ট ক্রিয়েটরসদের।

তাহলে বুঝতেই পারছেন এত কোটি মানুষ এবং এত কোটি টাকার একটি প্ল্যালফর্মে প্রফেশনালিটি ছাড়া আপনার টিকে থাকা অসম্ভব। একটু খেয়াল করলেই দেখব সবাইতো ইউটিউব চ্যানেল খুলে প্রায় ৩৮ মিলিয়ন চ্যানেল রয়েছে Youtube এ কিন্তু সবাই কেন আয় করতে পারেনা।

তার একমাত্র উত্তর হলো তাদের কোন ধারনা নেই কিভাবে একটি প্রফেশনাল youtube চ্যানেল খুলবেন তা নিয়ে। ৩৮ মিলিয়ন চ্যানেলের মধ্যে কয়েকটি চ্যানেলই সফল হয় এবং তারা সবাই প্রোফেশনাল।

তাই ইউটিউবে সফল হতে চাইলে অবশ্যই প্রোফেশনাল ভাবে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে হবে।

চলুন জেনে নিই একটি প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম সহ একটি প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কি কি লাগবে।

ইউটিউব চ্যানেল কি?

ইউটিউব চ্যানেল হল এমন একটি জায়গা যেখানে কনটেন্ট ক্রিয়েটররা (ইউটিউব চ্যানেল এর মালিক) ভিডিও আপলোড করতে পারে। এবং ভিউয়াররা সেই ভিডিওগুলি দেখতে পারে।

আমরা ইউটিউবে যে ভিডিওগুলি দেখি তার সবই কোন কোন ইউটিউব চ্যানেল চ্যানেল থেকে আপলোড করা। যারা ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে তাদের কে ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটর বলে।

ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার নিয়ম
ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার নিয়ম

প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কি কি লাগে?/মোবাইল দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম

  1. মোবাইল বা পিসি
  2.  একটি সম্পূর্ণ ভেরিফাইড জিমেইল একাউন্ট
  3.  ইউটিউব এপ
  4. ইন্টারনেট সংযোগ।

অনেকেরই ধারণা ইউটিউব চ্যানেল খুলতে বা ভিডিও বানাতে কম্পিউটার প্রয়োজন। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।  আপনি প্রোফেশনাল মানের চ্যানেল এবং ভিডিও বানাতে পারেন আপনার হাতে থাকা স্মার্ট ফোনটির মাধ্যমে।

আমরা পিসি এবং মোবাইল দুটিতেই প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খোলা দেখাবো। কিন্তু তার জন্য আমাদের দরকার একটি ভেরিফাইড জিমেইল একাউন্ট।

আমাদের পোস্টটি মনোযোগ সহকারে দেখলে মোবাইল দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়মসহ জানতে পারবেন।

অবশ্যই পড়বেন: 



কিভাবে একটি ভেরিফাইড Gmail একাউন্ট খুলবেন?

Step 1 :- গুগলে গিয়ে সার্চ করুন “Gmail account ” এবং নিচের ছবিতে দেখানো লিংকে ক্লিক করুন

 

জিমেইল একাউন্ট তৈরি Step 2:- ক্লিক করার পর এমন একটি ইনটারফেস আসলে “Add account ” এ ক্লিক করুন।

ইউটিউব চ্যানেলের জন্য জিমেইল তৈরি

 

Step 3:- তারপরে এমন ইন্টারফেস আসলে “create account ” এ ক্লিক করুন।

প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার নিয়ম

Step 4 :- Create account -এ ক্লিক করার পর এমন option আসলে “For myself ” এ ক্লিক করুন।

ইউটিউব চ্যানেল তৈরি

Step 5:- First name এর জায়গায় আপনার চ্যানেলের নামের প্রথম অংশ Last name এর জায়গায় দ্বিতীয় অংশ দিয়ে Next -এ ক্লিক করুন।

ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম

Step 6:- তারপরে আপনার Date of birth এবং Gender সিলেক্ট করে Next -এ ক্লিক করুন।

জিমেইল বেসিক তথ্য

Step 7:- তারপর আপনাকে আপনার পছন্দ মত Gmail সিলেক্ট করতে বলবে।  সিলেক্ট করে Next চাপুন।

পছন্দ মত Gmail সিলেক্ট

Step 8:- এবার আপনাকে আপনার Gmail এর পাসওয়ার্ড দিতে বলবে। কঠিন একটি পাসওয়ার্ড দিবেন এবং একই পাসওয়ার্ড নিচে “confirm” লিখা ঘরে ও দিয়ে Next ক্লিক করতে হবে।

Gmail এর পাসওয়ার্ড

Step 9:- এবার আপনাকে আপনার মোবাইল নাম্বার ভেরিফাই করতে হবে। Phone number লিখা ঘরে আপনার ফোন নাম্বার দিয়ে Next-এ ক্লিক করতে হবে। তারপরে আপনার মোবাইলে একটি কোড আসবে ওটা Submit করতে বলবে। কোড সাবমিটের পর আপনার মোবাইল ভেরিফাই হয়ে যাবে।

মোবাইল ভেরিফাই

Step 10:- তারপরে আপনাকে আপনার একাউন্ট টা রিভিউ করাবে।  রিভিউ করে Next এ ক্লিক করতে হবে।  তারপর Google এর কিছু terms and condition দিবে সেখানে Agree ক্লিক করলেই আপনার একাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে।

Google এর কিছু terms andGoogle এর কিছু terms and condition condition

Warning

১) আপনার একাউন্টে আপনার বয়স ১৮ বছরের বেশি দিতে হবে।  ১৮ বছরের কম দিলে Adsence পেতে সমস্যা হতে পারে। তাই ১৮ বছর হিসাব করে Date of birth দিতে হবে।

২) পাসওয়ার্ড অবশ্যই অনেক কঠিন দিতে হবে। সংখ্যা, প্রতীক, বড় ও ছোট হাতের অক্ষর মিলিয়ে দিতে হবে।

৩) আপনার ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করবেন অবশ্যই।

কিভাবে একটি প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খুলবেন

একটি ইউটিউব চ্যানেল প্রফেশনাল হওয়ার কিছু শর্ত থাকে সেগুলো হলো :-

১) প্রফেশনাল ভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হবে।

২) ইউটিউব চ্যানেল অপটিমাইস করতে হবে।

৩) ভিডিও হতে হবে প্রোফেশনাল মানের।

চলুন এবার এই তিনটি বিষয় নিয়ে বিস্তরিত ভাবে জানি। 

ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম :-

ইউটিউব চ্যানেল দুই প্রকারের :-

১) Personal Youtube channel.

২) Brand Youtube channel.

আমরা যারা ফেইসবুক ব্যবহার করি তারা হয়ত জানি আমরা একটি আইডি খুলেই ফেইসবুকের সব কাজ করতে পারি। কিন্তু যারা ফেইসবুকে প্রফেশনাল কোন কাজ করে তারা ফেইসবুক পেইজ ইউস করে তাদের কাজ করেন।  ঠিক তেমনই যারা ইউটিউবে প্রফেশনাল ভাবে কাজ করে তাদের দরকার Brand Youtube channel.

Brand youtube channel সাধারণত ইউটিউব এর মোবাইল এপ দিয়ে খোলা যায় না। আপনি যদি মোবাইলে Brand Youtube channel খুলতে চান তাহলে ক্রোম ব্রাউজার থেকে ডেস্কটপ মোড অন করে Youtube.com website এ যেতে হবে এবং তারপর থেকে এই নিয়ম গুলো অনুসরণ করুণ।

আর দেখতে পারেন: 



Android মোবাইল/ পিসি দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম :-

Step 1 :- Youtube.com -এ গিয়ে ডান দিকে উপরে প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করে Settings এ ক্লিক করুন।

ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম

Step 2:- তারপরে “create a new channel” এ ক্লিক করুন

ইউটিউব চ্যানেল তৈরির নিয়ম

Step 3 :- Brand Account name এর খালি ঘরে আপনার চ্যানেলের নাম লিখুন। এবং “create ” এ ক্লিক করুন।

ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার নিয়ম

এবার হয়ে গেল আপনার ইউটিউব চ্যানেল। আমরা প্রোফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল তৈরির একটি শর্ত পূরন করেছি এখন পরের শর্ত হলো চ্যানেল অপটিমাইস বা সেটিং।

ইউটিউব চ্যানেল সেটিং বা অপটিমাইজেশন :-

Step 1 :- Youtube.com -এ প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করে Your channel এ ক্লিক করলে আপনার চ্যানেলটি আসবে।  ওখান থেকে “CUSTOM CHANNEL” এ ক্লিক করলে আপনাকে Youtube studio তে রিডিরেক্ট করা হবে

ইউটিউব চ্যানেল সেটিং

Step 2:- Youtube studio তে বাম দিকের মেনু বার থেকে “Customization” -এ ক্লিক করুন।

ইউটিউব চ্যানেল অপটিমাইজেশন

Step 3:- তারপরে ক্লিক করুন Basic info তে।

Basic info

Step 4:- 

Basic info ইউটিউব চ্যানেলের

উপরের ছবিটি লক্ষ করুন যেখানে Basic info’র সব সেটিংস কে A,B,C,D,E,F দিয়ে চিহ্নিত করা হয়ে হয়েছে। চলুন যেনে নিই এগুলো বিস্তারিত।

A:- A তে দেখা যাচ্ছে একটি পেনসিন আইকন।  এটির মাধ্যমে আপনি আপনার চ্যানেলের নাম পরিবর্তন করতে পারবেন।অনেকেই মনে করেন Youtube চ্যানেল নাম পরিবর্তন করা যায় না। যেটি একটি ভুল ধারণা।

B:- B হলো চ্যানেল ডেসক্রিপশন box। আপনার চ্যানেলটি কি বিষয়ে, কেমন  কন্টেন্ট থাকবে এই নিয়ে বিস্তারিত লিখবেন এই Box এ। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ সেটিংস। এই ডেসক্রিপশনটি আপনাকে ভালো ভাবে লিখতে হবে।  আপনি  আপনার টার্গেটেড কি-ওয়ার্ড এখানে ব্যবহার করতে পারেন।

C:- C হলো language বা ভাষা যু্ক্ত করার একটি অপশন। মনে করুন আপনি বাংলায় ভিডিও বানিয়েছেন এই ভিডিও চলে গেল চাইনিস একজন এর কাছে তাহলে সে কখনও আপনার ভিডিও দেখবে না।  তাই আপনার কন্টেন্ট যেই ভাষায় এখানে সে ভাষাটি যুক্ত করবেন। এবং এটির মাধ্যমে ইউটিউব আপনার ভিডিও আপনার সিলেক্ট করা ভাষার মানুষদের কাছেই পরিবেষন করবে।

D:- D হলো আপনার চ্যানেল Url। আপনি সবাইকে আপনর এই url টি শেয়ার করবেন।  এই লিংকে কেউ ক্লিক করলে  সরাসরি আপনার চ্যানেলটি পাবে।

E:– E হলো লিংক এড করার অপশন। আপনি আপনার সব সোশাল লিংক এখানে ADD LINK এ ক্লিক করে এড করবেন। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

F:- F হলো জিমেইল যুক্ত করার অপশন। অনেকেরই ধারনা Gmail যুক্ত করলে কেউ সহজে আপনার একাউন্ট হ্যাক করবে তা সম্পূর্ন ভুল কথা। আপনি সঠিকভাবে সব কিছু করলে কেউ আপনার চ্যানেল বা একাউন্ট হ্যাক করতে পারবে না। আর Gmail যুক্ত করলে আপনার চ্যানেল পাবে প্রোফেশনাল লুক।  কেউ যদি আপনাকে sponsor করতে চাই তারা অবশ্যই আপনার Gmail এ মেইল করবে। তাই আমাদের সঠিক Gmail টাই ব্যবহার করব এখানে।

সব সেটিংস করার পরে ডান দিকে উপরের Publish-এ ক্লিক করবেন।

Step 4:-

Basic info ইউটিউব চ্যানেল এর

এবার Branding অপশনে গিয়ে উপরের ছবি টি লক্ষ্য করুন।

Banding অপশনের সেটিংস গুলোকে A,B,C, দিয়ে চিহ্নিত করা হলো। এবং এই অপশন গুলো নিয়ে বিস্তরিত আলোচনা করা হলো।

A:- A হলো আপনার চ্যানেলের প্রোফাইল পিকচার যুক্ত করার অপশন। প্রোফেশনাল ভাবে কাজ করতে হলে অবশ্যই আপনর চ্যানেলের একটি নিজস্ব লোগো বানিয়ে নিতে হবে। এবং এই লগো প্রোফাইল পিকচারে এড করবেন। আপনর প্রোফাইল পিকচারটি অবশ্যই ৯৮x ৯৮ হতে হবে এবং ৪ এমবি বা তার কম হতে হবে।

B:- আমরা ইউটিউবে বিভিন্ন চ্যানেল দেখলে দেখবো হোম পেজের উপরের দিকে একটি ব্যানার থাকে। যেটি প্রত্যেক চ্যানেলেরই থাকা প্রয়োজন। B হলো এই ব্যানার যুক্ত করার অপশন।  আপনার ব্যনার এমন কিছু হতে যেটা আপনার চ্যানেলকে প্রেজেন্ট করে। এটি হবে ২০৪৮x১১৫২ এবং ৬ এমবি বা তার কম।

C:- আমরা ইউটিউব এ ভিডিও দেখার সময় দেখি কোন ভিডিওর কোনায় ঐ চ্যানেলের প্রোফাইল পিকচার বা অন্য কোন ছবি থাকে। এটি মূলত Video watermark। আপনি চাইলে আপনার প্রোফাইল পিকচার বা লগোটি এখানে এড করতে পারেন।  যেটি ১৫০x১৫০ এবং ১ এমবি বা তার কম হতে হবে।

সব শেষে Publish এ ক্লিক করবেন

Step 5:- এবার চলে যান Layout অপশনে। এবং নিচের ছবিটি লক্ষ্য করুন।

Layout অপশন

Layout অপশনের সেটিংস গুলোকে A,B,C,D দিয়ে চিহ্নিত করা হলো। এবং এই অপশন গুলো নিয়ে বিস্তরিত আলোচনা করা হলো।

A:- A হলো ট্রেইলার।  যারা আপনার চ্যানেল subscribe করেনি তারা আপনার চ্যানেলে প্রবেশ করলে একটি ট্রেইলার ভিডিও দেখবে এটি যুক্ত করার অপশন হলো A। এই ট্রেইলার ভিডিওতে আপার চ্যানেলে কি ধরনের কন্টেট কেন দেওয়া হয় সব ডিটেইলসে বলবেন।

B:- আপনার চ্যানেলে প্রবেশ করলে এটি ভিডিও নিজে নিজে চালু হয়ে যাবে এটি যুক্ত করার অপশনটি হলো B। একে ফিচার ভিডিও বলে। আপনার চ্যানেলে সব থেকে জনপ্রিয়(বেশি ভিউস পাওয়া) ভিডিও এখানে দিবেন।

C:- আপনি আপনার চ্যানেলের হোম পেইজ কোনো ভিডিও বা প্লে লিস্ট এড করতে চাইলে C অপশনটি দিয়ে করবেন।  আপনার চ্যানেলের সব ভিডিও প্লেলিস্ট আকারে হোম পেইজে সাজাবেন এতে চ্যানেল দেখতে ভালো লাগে।

সব শেষে Publish এ ক্লিক করবেন।

আমরা পূরণ করলাম ২ টি শর্ত। সর্বশেষ শর্ত হলো প্রোফেশনাল মানের ভিডিও তৈরি করা। চলুন জেনে নিই এটি সম্পর্কে।

কিভাবে মোবাইল/পিসি দিয়ে প্রোফেশনাল মানের ভিডিও বানাবেন

প্রোফেশনাল মানের ভিডিও হতে হলে কিছু শর্ত মানতে হয়। এসব শর্ত মেনে চলে ভিডিও বানালে ভিডিও প্রোফেশনাল হয়।  চলুন জেনে নিই শর্ত গুলো কি কি।

১) ভিডিওর সাউন্ড কোয়ালিটি ভালো থাকতে হবে। এর জন্য আপনি মাইক্রোফোন ইউজ করতে পারেন।

২) উচ্চারন হতে হবে শুদ্ধ এবং বোধগাম্য। যদি আপনার উচ্চারন জনিত কিছু সমস্যা থাকে তাহলে আপনার ভিডিওর প্রোফেশনালিটি নষ্ট হবে। আপনার ভিডিও’র প্রতি আগ্রহ কমবে মানুষের। তাই উচ্চারন ঠিক রেখে ভিডিও বানাবেন।

৩) সুন্দর এবং সহজ ভাবে আপনার আলচ্য বিষয়কে উপস্থাপন করতে হবে। তার জন্য ভিডিও তৈরির আগে অবশ্যই আপনাকে স্ক্রিপ্ট তৈরি করে রাখতে হবে।

৪) কোলাহল মুক্ত জায়গায় ভিডিও তৈরি করতে হবে।

৫) অনেকেই ভিডিও’র সামনে না এসে শুধু ভয়েস দিয়ে ভিডিও তৈরি করে। এটি করবেন না কারন ক্যামেরার সামনে এসে কিছু আলোচনা করলে মানুষের আপনার প্রতি আস্থা জন্মাবে যেটি ক্যামেরার পেছনে থাকলে জন্মায় না।

৬) ভিডিওতে আপনার কন্টেন্ট রিলেটেড একটি ইনট্রো ব্যবহার করতে হবে।

{note :- অনেকেই ভিডিও এডিটিং এপ নিয়ে কনফিউজড থাকে তাই তাদের উদ্দেশ্যে বলছি মোবাইলে বেস্ট ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার হলো Kinemaster, Inshot আর পিসির জন্য Adobe premier pro।}

৭) ভিডিও ব্যাকগ্রাউন্ড যদি সঠিকভাবে চেন্জ করতে পারেন তবেই  আর না হলে করবেন না। কালো বা সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড নিয়ে ভিডিও করবেন। কারন ব্যাকগ্রাউন্ড খুবই সেনসিটিভ বিষয়।যদি ব্যাকগ্রাউন্ড ঠিক না থাকে তাহলে আপনার ভিডিও’র প্রোফেশনালিটি হারাবে।

৮) ভিডিওতে সুন্দর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ব্যবহার করুন। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক অবশ্যই কপিরাইট ফ্রি হতে হবে।

৯) ভিডিওতে কোনায় আপনার সকল সোশাল লিংক দিতে হবে যা স্লাইডের মতো একটির পর একটি আসবে।

১০) এট্রাকটিভ এবং সুন্দর থাম্বনেইল ব্যবহার করতে পারেন। মোবাইল বা পিসি তে সেরা থাম্বনেইল বানানোর ওয়েবসাইট canva.com।

১১) এট্রাকটিভ এবং টপিক রিলেটেড টাইটেল দিতে হবে।

১২) রিলেটেড সকল ট্যাগ ব্যাবহার করতে হবে।

১৩) আপনার ভিডিও রিলেটেড ছোটখাটো ডেসক্রিপশন দিবেন ডেসক্রিপশন box এ

১৪) উপযুক্ত আলোর মধ্যে ভিডিও তৈরি করতে। অতিরিক্ত আলো বা কম আলোয় ভিডিও শুট করবেন না।

১৫) যাবতীয় সোশাল লিংক অবশ্যই ডেসক্রিপশনে দিবেন।

উপরোক্ত সকল শর্ত মেনে আপনি সহজেই তৈরি করতে পাররেন প্রোফেশনাল মানের ভিডিও।

আমরা আমাদের প্রোফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল তৈরির সব শর্ত পূরণ করে ফেলেছি। এখন আমাদের চ্যানেলকে একটা প্রোফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল বলা যায়।

প্রোফেশনাল ইউটিউব চ্যানেলের জন্য কিছু টিপস

১) অবশ্যই আপনার একটা প্রোফেশনাল লগো থাকতে হবে। যেটি আপনার ইউটিউব চ্যানেলকে প্রেজেন্ট করে।

২) উন্নত মানের ব্যানার থাকতে হবে।

৩) ট্রেইলার ভিডিওটা বানানোর ক্ষেত্রে সময় নিয়ে ভালোভাবে বানাবেন এটিই আপনার দর্শককে আপনার চ্যানেল সম্পর্কে বলবে। তাই এটির মানের দিকে জোর দিতে হবে।

৪) ভালো ইনট্রো ভিডিও বানাতে হবে, সেটি অবশ্যই আপনার চ্যানেল টপিকের সাথে মিল রেখে বানাতে হবে।

৫) সকল ধরনের সোশাল মিডিয়ায় একটিভ থাকতে হবে। শুধু ইউটিউব নিয়ে থাকলেই হবে না ইউটিউব থেকে আপনার দর্শকদের বলবেন ফেইসবুকে লাইক করতে ফেইসবুক থেকে বলবেন ইনস্টাগ্রামে ফলো করতে এভাবেই চারদিকে অডিয়েন্স বিল্ড করবেন এবং আপনার কোন ভিডিও পাবলিশ করলে সব সোশাল প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করবেন। 

৬) চেষ্টা করবেন সকল অডিয়েন্সের কমেন্টের রিপ্লাই দিতে।

৭) কনটেন্টের সংখ্যার দিকে না ভেবে মানের দিকে ভাবুন।

৮) প্রথম দিকে ইনকামের চিন্তা মাথায় আনা যাবে না। ভালো কিছু করলে ভালো কিছু পাবেন অবশ্যই।

৯) সাবসস্ক্রাইবার কেনা ভিউস কেনা থেকে বিরত থাকুন পারলে ঐ টাকা দিয়ে ইউটিউব এড দিন কিন্তু ধৈর্য আর ভালো কিছু করলে নিজে নিজেই গ্রো করবেন।

১০) কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করে, সঠিক ট্যাগ ইউস করে ভিডিও এসইও করুন। যত ভালোই কনটেন্ট বানান না কেন এসইও সকলের জন্যই দরকার।

এই ১০ টি প্রো-টিপস আপনার Youtube পথ চলাকে করবে সহজ।

ইউটিউব সম্পর্কিত কিছু বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন এবং উত্তর :-

১) ইউটিউব থেকে কিভাবে আয় করা যায়?

উত্তর:- ইউটিউব থেকে আয় করার সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায় হলো Google adsence কিন্তু বর্তমানে আরও অনেক ভাবেই আয় করা যায় ইউটিউব থেকে যেমন:- Affiliate marketing, sponsorship ইত্যাদি। তা নিয়ে বিস্তারিত জানতে এই পোস্টটি পড়ুন

২) ইউটিউব থেকে কত টাকা আয় করা যায়?

উত্তর :- তা নির্ভর করবে আপনার কনটেন্ট টপিক, অডিয়েন্স এর উপর। কিন্তু ইউটিউব এমন একটি প্ল্যটফর্ম যেখান থেকে কোটি টাকা আয়ের সুযোগ আছে। এবং মানুষ আয় করছেও।

৩) ইউটিউবিং করতে DSLR লাগে?

উত্তর :- বর্তমানে এমন স্মার্টফোন রয়েছে যেগুলো দিয়ে ভালো মানের ভিডিও শুট করা যায় তাই শুরুতেই DSLR এর কোন প্রয়োজন নেই।

৪) মোবাইলে ইউটিউবিং সম্ভব?

উত্তর:- মোবাইলে যেহুতু ভালো মানের ভিডিও তৈরি করা যায় এবং এডিটিং এর জন্য ভালো সফটওয়ার ও রয়েছে তাই মোবাইল দিয়ে ইউটিউবিং করা যায়। কিন্তু চ্যানেল কাস্টমাইজেশন মোবাইল দিয়ে করলে একটু কষ্ট হবে কিন্তু করা যাবে না এমন না।

সর্বশেষ

ইউটিউব একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র যেটার মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে অনেকেরই ক্যারিয়ার। আপনিও পারবেন ইউটিউবকে নিজের ক্যারিয়ার হিসাবে নিতে।

আসা করি আজকের পর থেকে কিভাবে একটি প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খুলবেন তা নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকবে না।

Warning: অনেকের মতে গুগল এডসেন্সের ইউটিউব এডস বা কিছু এডস ক্যাটাগরি ইসলামে হালাল নয় তাই মুসলিম পাঠকরা অবশ্যই এটি সম্পর্কে ধারণা নিয়ে তবেই এটি ব্যবহার করবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top