কি-ওয়ার্ড রিসার্চ কি?: কিভাবে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করতে হয়? 

কি-ওয়ার্ড রিসার্চ কি? কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করার নিয়ম:  আমরা সবাই জানি, ব্যবহারকারীদের সুবিধার্থে গুগল প্রতিনিয়ত আপডেট দিয়ে যাচ্ছে, আর এসইও (SEO) ফিল্ডেরও লেখাপড়া বেড়েই যাচ্ছে! এই যে কিছুদিন আগে গুগল গত বছরের সব নিরীক্ষা শেষে একটি লাস্ট কোর আপডেট দিয়েছে।

যদিও এসইও এর পরিধি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে আরও আর উন্মোচিত হচ্ছে নতুন নতুন দিক,ঘটছে নানা সংযোজন-বিয়োজন – কিন্তু কিছু জিনিস সবসময় একই থেকে যাচ্ছে। যার মধ্যে অন্যতম হলো কি-ওয়ার্ড রিসার্চ (Keyword Research) , যার অবদান আজ পর্যন্ত একটুও কমেনি। যার প্রয়োজনীয়তা তা দিনকে দিন বেড়ে যাচ্ছে।

আর কেনই না বাড়বে না কি ওয়ার্ড রিসার্চের কদর? ব্লগিং, এফিলিয়েশন, ইউটিউবিং, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে একটা ভাল মানের প্রোফাইল বানানো, ইত্যাদি থেকে শুরু করে ঠিক কোথায় এর প্রয়োজন কম- বলতে পারেন! এসইও তথা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনে কিওয়ার্ড রিসার্চ ছাড়া অন্ধকারে ঢিল মারার সমান। 

আর যদি আপনি এসইও ফিল্ডে এসে কিওয়ার্ড রিসার্চ (What is Keyword Research) কি? কিভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ (How to do Keyword Research) করতে হয়? – এসব নিয়ে না জানেন, তবে শুরুতেই ঝরে পড়ার সম্ভাবনা অনেকগুণ বেশি।

 একটা ভাল কি-ওয়ার্ড হলো এসইও এর ফুসফুস। আর গুগলে রেংক করতে হলে কি-ওয়ার্ড রিসার্চের বিকল্প নেই। তাই এই দুনিয়ায় পা রাখতে হলে, প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে কিওয়ার্ড কি? কিওয়ার্ড রিসার্চ কি? কিওয়ার্ড রিসার্চ কেন গুরুত্বপূর্ণ? কিভাবে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করতে হয়? ইত্যাদি নিয়ে।

আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের সংক্ষিপ্ত আকারে সব আলোচনা করকর চেষ্টা করব। তাহলে, চলনু শুরু করা যাক। 

কি-ওয়ার্ড রিসার্চ কি? কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করার নিয়ম
কি-ওয়ার্ড রিসার্চ কি? কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করার নিয়ম

আর্টিকেলে যা যা আছেঃ

কিওয়ার্ড কি ? (What is Keyword)

আমরা অনলাইনে এসে মূলত যেটি নিয়ে অথবা লিখে সার্চ ইঞ্জিনগুলো যথা Google, Bing, YAHOO, Duck Duck Go, কিংবা ইউটিউব অথবা অন্য যে কোন ফোরামে সার্চ করি, সেটিই হচ্ছে মূলত কি-ওয়ার্ড (Keyword)। যেমন- এই আর্টিকেলটি আপনি পড়ছেন কিওয়ার্ড কি, বা কিওয়ার্ড রিসার্চ কি, বা কিভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে হয়, কিংবা কিওয়ার্ড রিসার্চ কেন গুরুত্বপূর্ণ, এমন বাক্য গুলো গুগলের সার্চ বক্সে লিখে অথবা ভয়েস সার্চ করে। তার মানে হলো এখানে এই বাক্য গুলোই হচ্ছে কি-ওয়ার্ড। 

ঠিক একই ভাবে ইউটিউবের সার্চ বক্সে গিয়ে এভাবে যা লিখে আমরা সার্চ করি, সেগুলো হলো ইউটিউব ভিত্তিক কি-ওয়ার্ড।

আপনারা একটু লক্ষ্য করলেই দেখবেন আমরা ফেসবুক (Facebook), রেডিট (Reddit),কোরা (Quora), টুইটার (Twitter),  ইত্যাদি প্লাটফর্মে গিয়েও কিন্তু এভাবে সার্চ করি। এই সার্চ করা শব্দ অথবা বাক্য গুলোই আসলে একেকটি কি-ওয়ার্ড।

আপনার জন্য: 

কি ওয়ার্ড কত প্রকার? (Types of Keywords) 

আমি আমার গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে যে টুকু বুঝেছি , সেটি হলো- আসলে কি -ওয়ার্ডে সেভাবে প্রকারভেদ করা ঠিক নয়। এগুলো মূলত করা হয়, আমাদের বোঝার সুবিধার্থে ।

তাছাড়া লিখতে গেলে এমনিতেও আশে পাশের থেকে নানা রিলেভেন্ট কি -ওয়ার্ড ঢুকে পড়ে লেখাতে। আর এখনতো আবার কি -ওয়ার্ড স্টাফিং-এর (Keyword Stuffing) দিন শেষ। তবুও বোঝার জন্য আমি কয়েকটি ভাগে কি -ওয়ার্ডস ভাগ করে ফেলছি । 

  • লং টেইল কিওয়ার্ড (Long Tail Keyword) 
  • শর্ট টেইল কিওয়ার্ড (Short Tail Keyword) 
  • এলএসআই টাইপ কিওয়ার্ড (LSI type Keyword) 

লং টে ইল কি ওয়ার্ড (Long Tail Keyword): 

যখন আমরা কি-ওয়ার্ড নিয়ে কাজ করি বা ক্লাস্টারিং করি, তখন আমরা অনেক ধরনের কি-ওয়ার্ডই দেখতে পাই। অনেকেই ২/৩ শব্দের বেশি হলে, সেটাকে লং টেইল কি-ওয়ার্ড বলে থাকেন । আসুন একটি উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি আরো ক্লিয়ার করা যাক। 

ধরুন আমি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং নিয়ে জানতে চাই বা লিখতে চাই। সেক্ষেত্রে আমার মূল বা সীড (Seed) কিওয়ার্ড হল সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

এখন আপনি কি-ওয়ার্ড রিসার্চের সময় দেখবেন আরো রিলেভ্যান্ট কিছু বড় বড় কি-ওয়ার্ড পাওয়া যাবে। যেমন – কিভাবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শেখা যায়বা “নতুনদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং”, ইত্যাদি এ ধরনের।

দেখুন এখানে মূল বা ফোকাসড কি-ওয়ার্ডের আগে পিছে অন্য শব্দ চলে এসেছে, এবং এটিরও আলাদা সার্চ ভলিউম রয়েছে। এই ধরনের কি-ওয়ার্ড সাধারণত তথ্য ভিত্তিক অথবা প্রশ্ন টাইপের হয়ে থাকে। এছাড়াও সচরাচর ভাল রিসার্চের মাধ্যমে লং টেইল কিন্তু লো কম্পেটেটিভ এবং বেশ ভাল সার্চ ভলিউমের কি-ওয়ার্ড পাওয়া যায়। অনেক এসইও এক্সপার্টরা নতুনদের লং টেইল কি ওয়ার্ড নিয়ে কাজ করার নির্দেশ দেয়।

আপনার ওয়েবসাইটটি যদি একদম নতুন হয়, তবে এই ধরনের বড় কি-ওয়ার্ড দিয়ে বেশ সহজেই সার্চ ইঞ্জিনের ১ম পেজে আসা সম্ভব! কারন এই কি-ওয়ার্ড গুলোতে কম্পিটিশন অনেক কম কিন্তু সার্চ ভলিউম ভালো।

শর্ট টে ইল কি ওয়ার্ড (Short Tail Keyword): 

উপরের উদাহরণ থেকেই বোঝা যাচ্ছে শর্ট টেইল কি-ওয়ার্ড কাকে বলে বা কিভাবে বুঝতে পারব যে এটি একটি শর্ট টেইল কি-ওয়ার্ড। ওই যে যেটাকে আমি মূল বা ফোকাসড কি-ওয়ার্ড বললাম (সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং), সেই ধরনের ২/৩ শব্দের শব্দগুচ্ছকে Short Tail Keywords হিসেবে সাধারণত চিহ্নিত করা হয়।

এলএসআই কি ওয়ার্ড (LSI Keyword): 

LSI কথাটির পূর্ণ রূপ হচ্ছে “Latent Semantic Indexing”. প্রায় সময়ই লং টেইল কি-ওয়ার্ড আর এলএসআই কি-ওয়ার্ডের মধ্যে পার্থক্য করতে ঝামেলা লেগে যায়। নিচের উদাহরণটি ভাল ভাবে লক্ষ্য করুন, প্রয়োজনে শর্ট টেইল কি-ওয়ার্ডের সংজ্ঞাটি আবার ভাল করে দেখে আসুন। 

তাহলে আমরা একটা মেইন কি-ওয়ার্ড ধরে নিয়ে উদাহরণটি দিচ্ছি, সেটি হচ্ছে ‘Social Media Marketing’. এখন গুগলে গিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া লিখে নরমালি সার্চ করলেও দেখবেন ফেসবকু , ইউটিউব, টুইটার, লিনকডইন, কোরা, ইন্সটা, পিনটারেস্ট, রেডিট, ইত্যাদি গুগল নিজে থেকেই সাজেস্ট করবে বা দেখাবে। কেন? – কারণ এগুলো প্রায় সবই সোশ্যাল মিডিয়ার অন্তর্ভুক্ত। আর সব প্লাটফর্মেইর্মে মার্কেটিং করা হয়। এবং, সবচেয়ে বড় ব্যাপার এগুলো লিখে মানষু সার্চ করে। 

আশা করি, বিষয়গুলো কিছুটা হলেও আপনাদের বোঝাতে পেরেছি। আর সার্চ ভলিউম (SV), সিটিআর (CTR), সিপিসি (CPC), ইত্যাদি নিয়ে জানা না থাকলে, শুধু SEO Glossary লিখে সার্চ করে এসব টার্মস নিয়ে খুব সহজেই জেনে নিতে পারবেন। 

এছাড়াও অনেকেই এফিলিয়েট মার্কেটিং-এর (Affiliate Marketing) জন্য কি-ওয়ার্ড রিসার্চের ক্ষেত্রে কি-ওয়ার্ডকে দুটি নামে ডাকে। 

  • ইনফো (Informative Keyword) কিওয়ার্ড 
  • বায়িং বা মানি (Buying/Money Keyword) কিওয়ার্ড 

ইনফো কি-ওয়ার্ড (info key-word)

যখন ইউজার কোনো ইনফো বা তথ্যের সন্ধান করে তখন যে কি-ওয়ার্ড ইউজ করে সেগুলোকে ইনফো কি-ওয়ার্ড বলে। এই খানে ইউজারের মূল উদ্দেশ্য হলো ইনফো জানা তাই আপনার আর্টিকেলে প্রপার ইনফো প্রোভাইড করতে হবে। যেমন:- “How to do keyword research properly ” একটি ইনফো কি-ওয়ার্ড।

বায়িং বা মানি কি-ওয়ার্ড (Buying / money keyword) 

যখন ইউজার কোনো কিছু কিনতে চায় তখন যেসব কিওয়ার্ড ব্যবহার করে সেগুলো হলো বায়িং কি-ওয়ার্ড। এক্ষেত্রে ইউজার যখন কোনো কিছু কিনতে চাইছে তাই আপনাকে এমন সব ইনফরমেশন আর্টিকেলে প্রভাইড করতে হবে যেন ইউজার জিনিসটি সহজেই কিনতে পারে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটাররা তাদের অ্যাফিলিয়েট লিংক এসব কি-ওয়ার্ডে প্লেস করতে পারে বলে মানি কি-ওয়ার্ডও বলে থাকে এগুলোকে। যেমন :- “Best earphone under 500 tk ” একটি বায়িং কি-ওয়ার্ড।

কিওয়ার্ড রি সার্চ কি ? (What is Keyword Research) 

এ পর্যন্ত আসতে আসতে আপনারা নিশ্চিতভাবেই কিওয়ার্ড কি? কিওয়ার্ড কত প্রকার হতে পারে? কোন ধরনের কিওয়ার্ডস কি নামে ডাকা বা চেনা হয়? এবং কেন? তা জেনে বা বঝেু গেছেন।

এখন আমরা ঢোকার চেষ্টা করব মূল পর্বে। এখন জানব কিওয়ার্ড রিসার্চ (Keyword Research) জিনিসটা আসলে কি! এতক্ষন তো খালি কিওয়ার্ড, Keyword বলে বলে মাথা খেয়ে ফেললাম, কাজের কাম এইবার শুরু। 

কিওয়ার্ড রিসার্চ হচ্ছে এমন একটা প্রক্রিয়া যেখানে আমরা বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত, ও সেট করা ক্রাইটেরিয়ার মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছুশব্দ বা শব্দগুচ্ছ (Phrase) বের করব, যা মানুষজন সার্চ ইঞ্জিন তথা Google, Bing, YAHOO, Duck Duck Go, YouTube-এ সার্চ করে থাকে বা করতে পারে।

তার মানে কিওয়ার্ড রিসার্চের মাধ্যমে আসলে জানা যায় মানুষজন কি কি লিখে সার্চ করছে। এমনকি কোন এলাকা বা জোন থেকে সার্চ করছে, কারা সার্চ করছে- সেটাও জানা সম্ভব। 

এই গবেষণার সময় আপনি বেশিরভাগ সময়-ই লো কম্পেটিটিভ কি-ওয়ার্ড বের করতে চাইবেন। তারপর আপনি যেটাকে মূল বা ফোকাসড কি-ওয়ার্ড হিসেবে সিলেক্ট করতে চাচ্ছেন সেটা শর্ট না কি লং টেইল কিওয়ার্ড, তার LSI Keywords কি কি হতে পারে- জানতে চাইবেন। আরও খুজতে চাইবেন এটির সার্চ ভলিউম (SV) কত, কিওয়ার্ড ডিফিকাল্টি (KD) কেমন, ইত্যাদি এসব-ও জানতে চাইবেন।

তাছাড়াও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নির্বাচিত করতে চাওয়া কি-ওয়ার্ডটি লো নাকি হাই কম্পিটিটিভ কি-ওয়ার্ড সেটি বোঝার জন্য কম্পিটিটর এনালাইসিস (Competitor Analysis) করা! এই সব মিলিয়ে-ই আসলে যে গবেষণা চালানো হয়, সেটাকেই কিওয়ার্ড রিসার্চ (Keyword Research) করা বলে। 

কিওয়ার্ড রিসার্চ কেন গুরুত্বপূর্ণ? (Importance of Keyword Research)

On Page SEO এর মলূ কেন্দ্রবিন্দুহচ্ছে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ। আপনি ব্লগিং (Blogging) করবেন বা একটা ওয়েবসাইট বানিয়ে তাতে ভিজিটর আনবেন- এগুলোর প্রথম শর্তই হচ্ছে খুব ভাল মানের কিওয়ার্ড রিসার্চ করা।

আপনি যদি না-ই জানেন মানুষ কি লিখে সার্চ করছে, কি কি জানতে চাইছে, কোনটার চাহিদা কেমন, মার্কেট কেমন, তবে কিভাবে সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করবেন! এছাড়াও কি-ওয়ার্ড রিসার্চ আপনাকে Content Plannong, SEO, email outreach, Content Promotion, Lead Generation-এও সাহায্য করবে।

তবে এবার নিজেই ভাবনু কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করার প্রয়োজনীয়তা কতটুকু, কতখানি! 

এজন্যই কিওয়ার্ড রিসার্চ (Keyword Research) হচ্ছে এসইও ক্যাম্পেইনের (SEO Campaign) মলূ মন্ত্র। 

নিজের সাইটে ভিজিটর আনা যায় দইুটি উপায়ে- 

  • বিজ্ঞাপন (Paid ADs) 
  • অর্গার্গনিক (Organic) 

বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাইটে ভিজিটর আনার জন্য প্রয়োজন অর্থ, আর অর্গার্গনিকভাবে ট্রাফিক বাড়ানোর জন্য হচ্ছে সঠিকভাবে এসইও অপ্টিমাইজেশন করা। আর Organic SEO এর শুরুটাই হয় কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করার মধ্য দিয়ে। 

ভাল কি-ওয়ার্ড রিসার্চ না হলে, অনেক ভাল মানের আর্টিকেল লিখেও লাভ হয় না, ভিজিটির তথা ট্রাফিক আসে না। একটি মানসম্মত কি-ওয়ার্ড রিসার্চ আপনাকে টার্গেটের্গে ড অডিয়েন্স সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা তৈরি করে দেয়। তারমানে আপনি আসলে কাদের জন্য আর্টিকেল লিখবেন, এবং তাদের চাহিদা কি কি উক্ত টপিকের উপরে।

আপনার ভিজিটররা আসলে আপনার কাছে কি চাচ্ছে। আর এই যুগে গুগলে র্যাংক করার অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে ইউজার স্যাটিস্ফেকশন (User Satisfiction)

অর্থাৎ, এই ২১-তম শতাব্দীতে কিওয়ার্ড রিসার্চ এর অপর আরেকটি নাম হচ্ছে মার্কেট রিসার্চ! 

যেমন ধরুন- আপনি দেখলেন মোবাইল এসইও (Mobile SEO) নিয়ে তেমন কোনো আর্টিকেল সার্পে (SERP) নেই। তারমানে এটি একটি লো কম্পিটিটিভ কি-ওয়ার্ড। তাহলে সব দেখা মানে মার্কেট রিসার্চ করে এই মোবাইল এসইও-এর সামনে পিছনে কিছুঅর্থবহ শব্দ যুক্ত করে সহজেই এটিকে “সুপার লো কম্পিটিটিভ” কি-ওয়ার্ডে রূপান্তর করে ফেলতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনি আর্টিকেলের টাইটেল দিতেই পারেন এভাবে “সহজে মোবাইল এসইও শেখার উপায়”- মানে SEO Optimized আর্টিকেলের টাইটেল আর কি! 

তবে মনে রাখবেন,

আপনার সাইটটি সার্চ ইঞ্জিনে আরও ভাল পজিশনে নিয়ে যেতে কিছুব্যাপার বাকি থেকেই যায়। যেমন- 

  • অন সাইট অপটিমাইজেশন (On Site Optimization) 
  • লিনক বিল্ডিং (Link Building) 
  • টেকনিক্যাল এসইও (technical SEO) 

এরকম আর কিছুবিষয়াদি। 

তবে পাঠক, এতোক্ষণে কি-ওয়ার্ড রিসার্চের গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা কতখানি তা আপনাদের বুঝে যাবার কথা। নিচের সাব টপিকে কিওয়ার্ড ডিফিকাল্টি নিয়ে একটুকথা বলে যাচ্ছি, যেন কোনও কিছুতেই আপনাদের অসম্পূর্ণতা থেকে না যায়। 

কি -ওয়ার্ড ডিফিকাল্টি (KD) কি ? 

যখন আপনি বিভিন্ন টুলস (ফ্রি বা পেইড) দিয়ে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করবেন, তখন KD নামে একটি সাইডবার চোখে পড়বে, এটারই পূর্ণ রূপ হচ্ছে কি-ওয়ার্ড ডিফিকাল্টি। এটি আবার এসইও ডিফিকাল্টি ও কি-ওয়ার্ড কম্পিটিটশন প্যারামিটার হিসবেও পরিচিত।

এটির সহজ মানে হচ্ছে- টুলস আপনাকে একটা ধারণা দেয় যে উক্ত কি-ওয়ার্ড নিয়ে কাজ করে সার্পে Rank করানো কতটা সহজ বা কঠিন। আসুন এক নজরে কি-ওয়ার্ড ডিফিকাল্টির প্যারামিটারে চোখ বলিু য়ে নেয়া যাক- 

  • সহজ (১০
  • মিডিয়াম (১১৩০
  • কঠিন (৩১৭০)
  • খুব কঠিন (৭১ বা তার উপরে

কিওয়ার্ড ডিফিকাল্টি আবার কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে- 

  • ডোমেইন অথোরিটি 
  • পেইজ অথোরিটি (এঙ্গেজমেন্ট, সোশ্যাল শেয়ার, ব্যাকলিনক, ইত্যাদি এরকম
  • কোয়ালিটি কনটেন্ট 

গুগল যদিও তার র্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর হিসেবে ডোমেইন অথোরিটিকে গুরুত্ব দেয় না বলে থাকে, কিন্তু তারাই যখন আবার ইউজার এক্সপেরিয়েন্স নিয়ে কথা বলে, এবং সেখানে একটা পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে- প্রায় ২২% ইউজার নতুন সাইট থেকে খুব দ্রুত চলে যায় বা মুভ করে! তাই অন্য দইুটি ফ্যাক্টরের সাথে ডোমেইন অথোরিটি এখনও ম্যাটার করে গুগলে র্যাংক করতে গেলে, বা সার্পের ১ম পেজে সহজেই জায়গা করে নিতে চাইলে। 

আরও দেখুন: 

কিভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ শুরু করবেন? (How to Start Keyword Research) 

আমরা আস্তে আস্তে কি-ওয়ার্ড রিসার্চের গভীর থেকে গভীরে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। চোখ লেগে আসলে, একটু চোখেমখেু পানি দিয়ে আসুন! কারণ, মস্তিষ্কের আসল খেলা কেবল শুরু হতে যাচ্ছে। 

কিওয়ার্ড রিসার্চের পূর্বে অবশ্যই আপনাকে ঠিক করে ফেলতে হবে কোন টপিক বা নিশ নিয়ে আপনি ব্লগিং বা ওয়েবসাইট তৈরি করবেন। 

ধরুন আপনি একটা টপিক সিলেকশন করে ফেলেছেন- যার নাম ট্রাভেলিং বা ভ্রমণ সম্পর্কিত কাজ করতে আপনি ইচ্ছুক। আগে বিভিন্ন ফোরাম, গুগুল ট্রেন্ডস থেকে জানার চেষ্টা করুন এটি কি ধরনের টপিক বা কি-ওয়ার্ড হতে পারে?

মানে কিছুকিছুটপিক থাকে সিজনাল, সারা বছর তেমন ভ্যালুথাকে না, একটা নির্দিষ্ট সময়ে এর ভ্যালুবাড়ে। এখন ট্রাভেলিং যেহেতু একটি অনেক বড় একটা টপিক, তাই আরও ছোট টপিক সিলেক্ট করার চেষ্টা করুন।

কারণ গুগল এখন খুব স্পেসিফিক কাভার করা টপিক ভিত্তিক সাইটকে মূল্যায়ন করে। ধরলাম আমি ট্রাভেলিং এর জন্য ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি নিয়েই শুধু একটা সাইট বানাবো।

বিভিন্ন ক্রাইটেরিয়া (মার্কেট রিসার্চ) মেপে দেখলাম এই টপিক বা নিশ নিয়ে কাজ করা যায়। এরপর এর সাব টপিক বের করার চেষ্টা করতে হবে। ট্রাভেলিং করতে গেলে মানুষের অনেক কিছুই প্রয়োজন হয়। যেমন ব্যাকপ্যাক, তাবু, জতা , সাইকেল, হাইকিং এর জিনিসপাতি, ভাড়ার বাইক, হোটেল, ইত্যাদি। তাহলে এগুলো হচ্ছে এখানে সাব টপিক। এই সাব টপিক ধরে ধরে আলাদা করে কি-ওয়ার্ড বের করে আর্টিকেল লিখে পুরো মেইন টপিক বা নিশ (ট্রাভেলিং সরঞ্জামাদি) খুব ভাল করেই কাভার করা সম্ভব। 

এভাবে মলূ টপিক ও সাব টপিক মিলিয়ে সার্চ ভলিউম সহ অনান্য প্যারামিটার থেকে যাচাই করে কি-ওয়ার্ড বেশ সহজেই বের করা যেতে পারে। 

কি -ওয়ার্ড রিসার্চ টুলসের ধরন

আমরা যখন একটা টপিকের উপর কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করব তখন বিভিন্ন প্রকার টুলসে ও এক্সটেনশনের সাহায্য নেব। এই টুলস আমাদের এই Keyword Reserch প্রক্রিয়াকে ত্বরানিত করে। অনালাইনে রিসার্চের জন্য দইু ধরনের টুলস দেখতে পাওয়া যায়- 

  • ফ্রি টুলস 
  • পেইড টুলস 

ফ্রি টুলস মানে যেখানে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করার জন্য অর্থ খরচ করতে হয় না, আর পেইড টুলস ঠিক তার উল্টোটা। তবে আমি কি-ওয়ার্ড রিসার্চ খুব ভাল করে সম্পন্ন করার জন্য পেইড টুলসগুলোই ব্যবহার করার জন্য উদ্বুদ্ধ করব। 

কিভাবে ফ্রি -তে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করা যায়? 

আপনি যদি কি-ওয়ার্ড রিসার্চের শুরুর দিকে অর্থ খরচ করতে ইচ্ছকু না হন, তবে আশা হারানোর কিছুনেই। ফ্রি রিসার্চ করার জন্য বেশ কিছুটুলস ও ব্রাউজার এক্সটেনশন অনলাইনে এভেলেইবল আছে। এবং, সবচেয়ে বড় কথা এগুলো অনেক কার্যকরী যদিও সময় একটুক্ষেপণ হয়। কারণ প্রায় সময়ই ম্যানুয়ালি চেক করতে হয়। আসুন আর কথা না বাড়িয়ে কিছু ফ্রি কি-ওয়ার্ড রিসার্চ টুলস ও এক্সটেনশন সম্পর্কে জেনে আসি। 

Google Keyword Planner:

এটি আমার অন্যতম পছন্দের একটি কি-ওয়ার্ড রিসার্চ টুলস। তাছাড়া এটি গুগলের একটি প্রোডাক্ট, যাতে আপনি সরাসরি গুগলে সার্চ করা কি-ওয়ার্ডস বা টপিক নিয়ে ধারণা পেয়ে যাবেন।

তবে এটি মলতূ ডিজাইন করা হয়েছে যারা গুগলে এড ক্যাম্পেইন করে থাকেন, তাদের জন্য। কিন্তু তাতে কি? দারুণ সব টপিক ও কি-ওয়ার্ডের লিস্ট এমন থরে থরে সাজানো অস্থায় খুব কম ফ্রি কি-ওয়ার্ড রিসার্চ টুলসেই পাওয়া যায়।

তাছাড়া যেহেতু এড ক্যাম্পেইনারদের টার্গেটর্গে করে এটি বানানো হয়েছে, তাই কোন বিজ্ঞাপনদাতা একটি কি-ওয়ার্ডের জন্য কত বিড করেছেন সেটিও জানা যায়। 

Google Keyword Planner (GKP) দেখতে অনেক আকর্ষণীয় ও সাজানো গোছানো। যেমন নিচের চিত্রটি দেখুন (আমি এখানে Coffe কে মেইন কি-ওয়ার্ড হিসেবে সিলেক্ট করেছি)- 

keyword Planner
keyword Planner

উপরের চিত্রটি লক্ষ্য করলেই দেখতে পাচ্ছেন এটি মাসিক সার্চ ভলিউম সহ একদম কম্পিটিশন এনালাইসিস করে দেখিয়ে দিচ্ছে।

এই টুলস দিয়ে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করতে চাইলে আপনাকে এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে কাজ করতে হবে। যেখানে আপনি Language Select, Region, Enter Keyword, etc অপশন পাবেন।

তবে এখানে আপনি বাংলা কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করতে পারবেন না। এবং এই টুলসটি মূলত ফোকাসড কি-ওয়ার্ড নিয়ে কাজ করতে সাহায্য করে। 

এই ধরনের বাধ্যবাধকতা পুষিয়ে নিতে আপনি সেক্ষেত্রে চলে যেতে পারেন ‘Answer the Public’ নামের টুলসটিতে। যেখানে আপনি খুব সহজেই আপনার ফোকাসড কি-ওয়ার্ড নিয়ে মানুষের আগ্রহ সম্পর্কে আরও বেশি জানতে পারবেন। তথা Related search, LSI নিয়ে আপনার এই ধরনের সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন।

আর গুগল কি-ওয়ার্ড প্লানার ব্যবহার করতে চাইলে আপনার একটি গুগল একাউন্ট থাকতে হবে। এবং এটি দিয়ে গুগল Adwords-এ একটি আইডি সেট আপ করতে হবে। 

তবে সবকিছুমিলিয়েই Google Keyword Planner একটি শক্তিশালী গুগল ভিত্তিক ডাটাবেজ। এটির সঠিক ব্যবহার নিঃসব্দেহে আপনাকে কি-ওয়ার্ড রিসার্চের ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে রাখবে। আর যেহেতুএটি সরাসরি গুগলের সাথে সম্পর্কিত, তাই এসইও এর ক্ষেত্রেও এটি অনেক ফলপ্রসূ। 

Keyword Surfer

এটি আমার সব থেকে পছন্দের একটি ফ্রি কি-ওয়ার্ড রিসার্চ টুলস। এটি গুগল ক্রোমে এক্সটেনশন হিসেবে ইউজ করা যায়। এর মানে আপনি ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ ছাড়া এটির ব্যবহার করতে পারছেন না। Keyword Surfer একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় কি-ওয়ার্ড রিসার্চ টুলস।

এখানে আপনি কি-ওয়ার্ড আইডিয়া জেনারেট করা সহ সার্চ ভলিউম ও রিজিওন বা অঞ্চল ভিত্তিক রিসার্চ করতে পারবেন। নিচের চিত্রটি দেখুন- 

Keyword Surfer
Keyword Surfer

দেখেন, এখানে সার্চ ভলিউম সহ সিমিলার কি-ওয়ার্ড পর্যন্ত শো করছে। এছাড়াও গুগল সার্চ বক্সের নিচের মত এই রিসার্চ টুলসের নিচের দিকেও কিছুটপিক রিলেটেড কি-ওয়ার্ড শো করে। তার চেয়ে বড় সুখবর হচ্ছে Keyword Surfer দিয়ে বাংলাতে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করা যায়।

পড়তে পাড়েন: 

Ubersuggest Tool:

Ubersuggest হচ্ছে বিখ্যাত ব্লগার Neil Patel এর ব্যবহৃত ও তাদের দ্বারা ডিজাইনকৃত আরেকটি সুপরিচিত কি-ওয়ার্ড রিসার্চ টুল। আমার কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করার হাতে খড়ি হয়েছিল এটি দিয়েই। পুর্বে যদিও ফ্রি-তে অনেক কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করা গেলেও এখন আর সম্ভব হয় না। এখন প্রতি ২৪ ঘন্টায় মাত্র ৩টি কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করা সম্ভব। 

এটির আরেকটি ভাল দিক হচ্ছে- এখানে আপনি বাংলায় কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করতে পারবেন। এটি মোটামুটি ফ্রি হলেও এখানে প্রফেশনালিজমের সাথে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করা যায়। Ubersuggest-এ কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করতে গেলে SV, SD/KD, CPC, PD, Trend, etc অনেক ফিচার্স রয়েছে। নিচের ছবিটি দেখুন।

Ubersuggest
Ubersuggest

এছাড়াও আরও বেশ কিছুফিচার্স রয়েছে। Competitor Analysis, Content Gap, Related Ideas, ইত্যাদি সহ ডীপ রিসার্চের জন্য এই টুলটি ইতোমধ্যে বেশ বিশ্বস্ততা অর্জন করেছে। 

Ubersuggest টুলটি আপনি তাদের ওয়েব সাইটে গিয়ে এবং ক্রোম এক্সটেনশন – দুইভাবেই ব্যবহার করতে পারবেন। 

Keyword Tool

এই কি-ওয়ার্ড টুল দিয়ে আপনি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষাতেই ফ্রি’তে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করতে পারবেন। সেদিক দিয়ে বিবেচনায় এটি একটি লাভজনক টুলস।

এটিতে রিসার্চ করতে হলে, প্রথমেই আপনাকে এদের ওয়েবসাইটে ঢুঁমারতে হবে। এবং, কোন কি-ওয়ার্ড বা টপিক নিয়ে রিসার্চ করতে চাচ্ছেন সেটি একদম ১ম সার্চ কনসোলে টাইপ করতে হবে। আর তারপর ২য় বক্সে গিয়ে যে ভাষায় রিসার্চ করতে চাচ্ছেন সেটি সিলেক্ট করে সার্চ বাটনে ক্লিক করবেন। 

Keyword Tool এর মাধ্যমে আপনি আপনার কি-ওয়ার্ডের সার্চ ভলিউম (Search Volume-SV) সিপিসি (CPC), এবং কম্পিটিশন সম্পর্কে ধারণা পেতে চাইলে, টাকা খসাতে হবে! 

keywordtool.io
keywordtool.io

এছাড়াও আপনি এখানে টার্গেটের্গে ড কি-ওয়ার্ডের সাথে সম্পর্কিত রিলেটেড কি-ওয়ার্ড নিয়ে ধারণা পেয়ে যাবেন। আর এগুলো আপনি অতি সহজেই আপনার কনটেন্টে ব্যবহার করে সেটিকে আরও এসইও ফ্রেন্ডলি করতে পারবেন।

পেইড কি-ওয়ার্ড রিসার্চ টুলস (Paid Tools)

আসুন প্রথমেই কিছু পেইড কি-ওয়ার্ড রিসার্চ টুলসের নাম জেনে নেওয়া যাক- 

  • SEMRush
  • Ahrefs
  • Keyword Everywhere
  • KW Finder
  • Long Tail Pro
  • MOZ Keyword Explorer
  • SpyFu (স্পাইফু) 
  • (Majestic) ম্যাজেস্টিক
  • Market Samurai (মার্কেট সামুরাই) 
  • ইত্যাদি ইত্যাদি… 

এবার উপরোল্লিখিত টুলস হতে  অল্প কিছু পেইড টুলস নিয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করা যাক। 

SEMRush:

যদি আপনি টাকা খরচ করে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করতেই চান, তবে আমি আপনাকে হাইলি রিকোমেন্ড করব SEMRush ব্যবহার করার জন্য। এটি এই সময়ের সব থেকে বেস্ট Paid Keyword Research Tool-দের মধ্যে একদম ১ম সারির দিকে রয়েছে। এমনকি আপনি আপনার কম্পিটিটর সাইটে গিয়ে তাদের কি-ওয়ার্ড চুরি করতে পারবেন এই টুলসটির মাধ্যমে। মানে যেসব কি-ওয়ার্ডের জন্য আপনার কম্পিটিটর সাইটস গুগলে র‍্যাংক করে আছে, সেটা জানতে পারবেন।

SEMRush
SEMRush

দেখতে সুন্দর না! এই টুলের মাধ্যমে আপনি Top Organic Keywords, Top Search Positions, Phrase Match Report নিয়ে একদম বিস্তারিত জানা যায়। তবে SEMRush ব্যবহার করে আপাতত বাংলায় কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করা সেই অর্থে সম্ভব হচ্ছে না।

Ahrefs:

পেইড কি-ওয়ার্ড রিসার্চ টুলসের মধ্যে আমার আরেকটি প্রিয় অস্ত্র হচ্ছে Ahrefs. এটি আপনার সামনে শুধু কার্যকরী Keywords-ই তুলে নিয়ে আসবে। যদিও এটিকে অনেকে শুধু Link Building Tool হিসেবে বলে থাকে।

কিন্তু Backlink কাউন্ট করার পাশাপাশি Keyword Research, Content Gap, Competitor Analysis করতে এটি প্রায় অতুলনীয় পর্যায়ের। Ahrefs মাধ্যমে একই টপিকের উপর টনকে টন কি-ওয়ার্ড বের করা সম্ভব। 

যেখানে অন্যান্য কি-ওয়ার্ড শুধু সার্চ ভলিউম, ক্লিক এসব দেখায়, সেখানে Ahrefs উক্ত টপিকটি সার্চ ইঞ্জিনের ১ম পেজে র‍্যাংক করতে কতগুলো Backlink প্রয়োজন- সেটিও শো করে। 

Ahrefs
Ahrefs

তবে এই টুলটি একদম আনকোরা নতুন কি-ওয়ার্ড আইডিয়া জেনারেট করতে পারে না। Ahrefs শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট কি-ওয়ার্ডের সাপেক্ষে বিভিন্ন ভ্যারিশনের লাখ লাখ কি-ওয়ার্ড প্রদান করতে সিদ্ধহস্ত। আর সবচেয়ে বড় কথা মাত্র এক শব্দের (Single term) কি-ওয়ার্ড টাইপ করে লাখখানেক বিভিন্ন ভ্যারিয়শনের কি-ওয়ার্ড বের করাতে Ahrefs এর জুড়ি মেলা ভার! 

এছাড়াও এটি দিয়ে বাংলাতেও কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করা যায়। 

Keyword Everywhere:

এই টুলটি আগে ফ্রি’তে ব্যবহার করা গেলেও এখন এটি পেইড টুলস। ফ্রি’তে সর্বোচ্চ ৩টি কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করা যায় এখন। Keyword Everywhere নামটির মধ্যেই এর সমস্ত গুণাগুণ আসলে প্রকাশ করা হয়ে গেছে। এই টুল ব্যবহারের আরেকটি চমৎকার সুবিধা হচ্ছে কি-ওয়ার্ড রিসার্চের সময় সমস্ত কি-ওয়ার্ডস ক্রোম ব্রাউজারের সাইড বারে শো করে। 

Keyword Everywhere সার্চ ভলিউম, সিপিসি দেখানোর পাশাপাশি কম্পিটিশন নিয়েও ধারণা দিয়ে দেয়। এছাড়া এই টুলের আরেকটি দারুণ ফিচার হচ্ছে ‘People Also Search for’. যার মাধ্যমে আপনার ফোকাসড কি-ওয়ার্ড নিয়ে ও তার বাইরে সেটি নিয়ে মানুষ আর কি কি জানতে চাইছে সেটা সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যাবেন। এই ব্যাপারটি নিঃসন্দেহে আপনার Keyword Research প্রক্রিয়াকে আরও ইফেক্টিভ করবে। 

KWFinder:

Keyword Research করার জন্য আরেকটি ভাল পেইড টুল হচ্ছে KWFinder. এটি পেইড হলেও এখানে ৩টি কি-ওয়ার্ডস ফ্রি’তে রিসার্চ করা যায়। এখানে আপনি অতি সহজেই শুধুমাত্র ইমেইল দিয়েই একাউন্ট ক্রিয়েট করে নিয়ে কাজ করতে পারবেন। 

KWFinder
KWFinder

উপরের চিত্রে দেখতেই পারছেন এটির মাধ্যমে কি-ওয়ার্ড রিসার্চের সময় আপনি সার্চ ভলিউম, কি-ওয়ার্ড ডিফিকাল্টি, CPC, PPC সব দেখতে পারবেন।

এছাড়াও KWFinder আপনার প্রতিদ্বন্দীর ব্যাকলিঙ্ক সম্পর্কেও একটা ধারণা দিয়ে দেয়। এবং, এই সবকিছু আপনাকে আপনার কাঙ্খিত কি-ওয়ার্ড নিয়ে একটা স্বচ্ছ ধারণা পেতে সাহায্য করে। 

অন্যান্য বিভিন্ন মাধ্যমে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ

আমরা তো এতক্ষণ ফ্রি ও পেইড বিভিন্ন প্রকার টুলস নিয়েই এটা সেটা বলে গেলাম, জেনে গেলাম। কিন্তু আপনি ম্যানুয়াল রিসার্চ বলেও একটা কথা মার্কেটে প্রচলিত আছে বলে শুনে থাকতে পারেন।

আচ্ছা, এটা আবার কি জিনিস! খায় নাকি মাথায় দেয়? এটি আসলে তেমন কিছুই না।

আপনি যখন সার্চ ইঞ্জিন বা গুগলে কিছু লিখে সার্চ করেন, তখন থেকেই আসলে ম্যানুয়াল রিসার্চ করাটা শুরু করতে পারেন। Manual Reaserch কথাটার মানে হচ্ছে কোনও প্রকার টুলসের সাহায্য ছাড়াই নিজ বুদ্ধি ও ন্যাচারালি যা দেখতে পাওয়া যায় সেসব বিষয় নিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়া। 

আসুন, এবার টুলসের বাইরে কিছু ম্যানুয়াল কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করার ব্যাপারে ধারণা নেই। 

Google Auto Suggest:

আমরা যখন যেকোন কিছু লিখে গুগলের সার্চ বক্সে সার্চ দেই, তখন সার্চ বক্সের ঠিক নিচে লেখার সময় বা পরে একই ধরনের কিছু Keyword Phrase গুগল নিজে থেকেই সাজেস্ট করে থাকে।

এটি সাধারণত গুগলের এআই টেকনোলজির ফল। মানে গুগল যেকোন টপিকের রিলেভেন্সি টার্মগুলো কি কি হতে পারে, তা ইউজারকে সাজেস্ট করে থাকে।

যেন ইউজার খুব সহজে তার কাঙ্খিত টপিকটি প্রেস করে তাড়াতাড়ি খুব সহজেই খুঁজে নিতে পারে। নিচের বক্সটি লক্ষ্য করুন যেখানে আমি জাস্ট “কিওয়ার্ড” লিখে সার্চ দিয়েছি গুগলে- 

গুগল অটো সাজেস্ট
গুগল অটো সাজেস্ট

তাতে করে গুগল নিজে থেকেই কিছু অটো সাজেশন দিচ্ছে। যদি কোনও সময় এ রকম না দেখায়, তাহলে কি-ওয়ার্ড বা যেটা লিখেছেন তার পর একটা Space দিলেই হয়ে যাবে। এই Google Auto Suggest প্রক্রিয়াটি কি-ওয়ার্ড জেনারেট করতেও খুব কাজে দেয়। 

YouTube Auto Suggest:

গুগলের মত ইউটিউবেও মানুষজন সার্চ বক্সে গিয়ে পছন্দ বা চাহিদামত জিনিস সার্চ করে। আমরা গুগল অটো সাজেস্ট প্রক্রিয়াটির মত YouTube Auto Suggest থেকেও কি-ওয়ার্ড রিসার্চ বা আইডিয়া জেনারেট করতে পারি। 

এই গুগল ও ইউটিউব অটো সাজেসন কনটেন্ট লেখার সময় অন পেইজ এসইও সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রেও খুব কার্যকরী। 

Related Searches:

গুগলের সার্চ বক্সে কিছু লিখে সার্চ দিলে যেমন সার্চ বক্সের একদম নিচে কিছু সাজেশন ভাসে, ঠিক সেরকম-ই সার্পের একদম নিচের দিকে (পেজের শেষের অংশে) Realated Searches নামে একটি অপশন দেখা যায়। যেখানে মোট ৮টি রিলেটেড কি-ওয়ার্ড দেখতে পাওয়া যায়। যেমন- আমি “কিওয়ার্ড’ লিখে সার্চ করার পর পেজের নিচে যা পেলাম- 

রিলেটেড কিওয়ার্ড
রিলেটেড কিওয়ার্ড

এখান থেকে আমি আইডিয়া নিয়ে যেমন আমি কিওয়ার্ড ভিত্তিক কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করতে পারছি, তেমনি এই বিষয়ে কনটেন্ট লেখার ক্ষেত্রেও তা কাজে দেবে। 

Google Trends:

আপনি যদি বুঝতে চান, গুগলে আপনার কি-ওয়ার্ডের বর্তমান চাহিদা কেমন- তবে Google Trends এর বিকল্প নেই। তাছাড়াও এটি আপনাকে নতুন কি-ওয়ার্ড নিয়েও রিসার্চ করে দেবে। 

এই টুলটি দুইভাবে ব্যবহার করা যায়- 

এক, একটি নির্দিষ্ট কি-ওয়ার্ড লিখে সার্চ করে এর সাথে সম্পর্কিত সমস্ত কি-ওয়ার্ডস বের করতে পারবেন। 

দুই, কি-ওয়ার্ড লিখে সেটির চাহিদা বা জনপ্রিয়তা  কেমন সেটি গ্রাফ আকারে দেখতে পারবেন। যা আপনাকে আপনার সেই কি-ওয়ার্ডের ব্যাপারে একটি চমৎকার আইডিয়া পেতে সাহায্য করবে। 

এছাড়াও আপনি পাশাপাশি দুইটা Keywords রেখে তাদের মধ্যে তুলনামূলক রেজাল্ট গ্রাফ আকারে পাশাপাশি দেখতে পারবেন। যেমন ধরুন- আপনি যদি Facebook Marketing Tiktok Marketing লিখে সার্চ দেন তবে আপনি দেখতে পাবেন যে FB Marketing-এর চেয়ে Tiktok Mareking-এর গ্রোথ রেট তথা গ্রাফের লেভেল উপরে। 

আপনি YouTube-এর ক্ষেত্রেইও এই Google Trends কে যদি কাজে লাগাতে পারেন, দেখবেন দারুণ সব ফলাফল বের করে আনতে পারছেন।  

Google Search Console (GSC):

গুগল সার্চ কনসোল হচ্ছে সব থেকে আন্ডাররেটেড কি-ওয়ার্ড রিসার্চ টুল। এটিকে অনেকি কি-ওয়ার্ড রিসার্চ টুল হিসেবে ভাবতেই পারে না। But believe me it is a golmine for keyword ideas. এর জন্য আপনাকে আপনার গুগল একাউন্ট দিয়ে একটা GSC একাউন্ট খুলে সেখানে লগ ইন করতে হবে। এবং আপনার সাইটে কিছু কনটেন্ট পাবলিশড করা থাকতে হবে। 

এই টুলসের সাহায্যে আপনি “Performance Report”-এ ক্লিক করে সাইটের পারফম্যান্স চেক করতে পারবেন। এবং সেই সাথে জানতে পারবেন কোন কোন টপিক বা কি-ওয়ার্ড আপনাকে গুগুল থেকে সব থেকে বেশি ক্লিক এনে দিচ্ছে। 

তারপর ‘Impressions’ নামে অপশনটিতে ক্লিক করলে আপনি সেই সকল কি-ওয়ার্ডসের ইম্প্রেশন চেক করতে পারবেন; তবে এটা জরুরী নয় যে এটি আপনাকে সেসময় সঠিক নেসাসারি ক্লিক শো করবে। 

এভাবে রিসার্চ করার ফলে আপনি জানতে পারবেন- ঠিক কোন কোন কি-ওয়ার্ডের জন্য আপনি গুগল থেকে দাম পাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে আগামীতে আপনার কি-ওয়ার্ড আইডিয়া জেনারেট করতে ও আরও ভালভাবে কাজ করতে সুবিধে হবে। তাছাড়াও আপনি Google Search Console এবং Google Analytics একত্রে ব্যবহার করতে পারবেন। 

এভাবে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করতে পারলে আপনি আরও সম্ভাবনাময় (Opportunity Keywords) কি-ওয়ার্ডসের সন্ধান পেয়ে যাবেন। এটি প্রফেশনাল মানের কি-ওয়ার্ড রিসার্চ টুল না হলেও আপনি এর মাধ্যমে আপনার কি-ওয়ার্ডের আশেপাশের সমস্ত কি-ওয়ার্ডস সাজানো গোছানো অবস্থায় পেয়ে যাবেন। 

  • তাহলে বোঝা গেল কিভাবে জাস্ট গুগলের ম্যানুয়াল সার্চ, তার ন্যাচারাল ফিচারস ও ডিজাইন থেকেই আমরা কত সহজে দারুণ সব কি-ওয়ার্ড আইডিয়া পেতে পারি? তবে দেখতে হবে, কোন কোন জিনিস আমার কাঙ্খিত টপিকের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই ব্যাপারটিতে একটু লক্ষ্য রাখতে হবে। হাজার হলেও গুগল একটা যন্ত্র বৈ মানুষ তো নয়! 

কিভাবে ফাইনাল কি-ওয়ার্ডস নির্বাচন করবেন? কোন কি-ওয়ার্ডগুলোকে নির্বাচন করবেন? 

সেই শুরু থেকে এখন অব্দি যদি মন লাগিয়ে পড়ে থাকেন, তবে এতোক্ষণে কি-ওয়ার্ড কি? কি-ওয়ার্ড রিসার্চ কি? কি-ওয়ার্ড রিসার্চের গুরুত্ব এবং বিভিন্ন ফ্রি ও পেইড কি-ওয়ার্ড রিসার্চ টুলস নিয়ে আপনি জেনে গেছেন। এছাড়াও ম্যানুয়ালি কিভাবে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করা যায়, সে সম্পর্কেও ধারণা পেয়ে গেছেন। এবার আসুন আলোচনায় যাওয়া যাক, কিভাবে কি-ওয়ার্ড ফাইনালি নির্বাচন করা যেতে পারে সে বিষয়টি নিয়ে। 

শুরুতেই বলে নেই- কি-ওয়ার্ড রিসার্চ প্রক্রিয়া ও নির্বাচন করা সবার এক হবে ব্যাপারটা সেরকম নয়। সবার নিজস্ব একটা করে স্ট্র্যাটেজি থাকা উচিত এক্ষেত্রে। যেমন- আপনি একটি সদ্য জন্মানো ওয়েবসাইটের জন্য যেভাবে কি-ওয়ার্ড বেছে নেবেন, ঠিক একই জিনিস আপনি বেশ ভাল ভিজিটির পাওয়া সাইটের জন্য এপ্লাই করবেন না – এটাই স্বাভাবিক। আচ্ছা চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক। 

  • সবার আগে টপিক বা নিশ সিলেক্ট করে নিতে হবে, সেই সাথে সাব-টপিক। তার মানে যে বিষয়ের উপর ব্লগিং বা সাইট রান করতে ইচ্ছুক আপনি সেটা। টপিক ও সাব টপিকের আইডিয়া জেনারেট করার জন্য বিভিন্ন টুলস, জনপ্রিয় আথোরিটি সাইটস তো দেখবেন-ই। এর সাথে আপনি Wikipedea এর Table of Content, Reddit, Quora থেকে এবং Google Search Console (GSC), Google Trends, Google Analytics – এই সবগুলোকে কাজে লাগাতে পারেন।
  • তারপর একটি বা ততোধিক কি-ওয়ার্ড রিসার্চ টুলসের সাহায্যে ডীপ রিসার্চের মধ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট টপিকের উপর কি-ওয়ার্ড রিসার্চ বা বের করার প্রাথমিক ধাপে নেমে পড়ুন। অতি অবশ্যই ম্যানুয়াল রিসার্চ গুরুত্বের সাথে করবেন। কারণ যন্ত্র আর মানুষের বিবেচনায় সব সময় পার্থক্য থেকেই যাবে। আর গুগল এখন ইউজার এক্সপেরিয়েন্সকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
  • সাইট যদি নতুন হয়, সেক্ষেত্রে লো কম্পেটিটিভ কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর এক্ষেত্রে সব সময় Long Tail Keyword গুলো লো কম্পিটিটিভ হয়ে থাকে।
  • এরপর দেখতে থাকুন বের করতে চাওয়া কি-ওয়ার্ডের সার্চ ভলিউম, কেডি, ট্রেন্ডস, কম্পিটিটর সাইট- এসব। SV, KD, Competitor Analysis- এর জন্য Ahrefs, SEMRush, KWFinder, ইত্যাদি এসবকে কাজে লাগাতে পারেন। আর ট্রেন্ড এনাইলাইসিসের জন্য Gggogle Trend, Google Analytics- কে ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার পরিষ্কার ধারণা আসবে কি-ওয়ার্ডস নিয়ে যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে। 

 

  • CTR মানে হচ্ছে Click Through Rate, আর এখানে আপনি খুঁজে বেড়াবেন অর্গানিক সিটিআর। এটা মনে রাখবেন সার্চ কনসোল শুধুমাত্র আবছা একটা ধারণা দেয় ক্লিক নিয়ে, যেটা পুরো অবস্থা বোঝায় না। আর KD/SD বলতে সোজা ভাষায় বোঝায়- একটি নির্দিষ্ট কি-ওয়ার্ডের সাপেক্ষে অনান্যদের তুলনায় সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাংক পেতে কি রকম কষ্ট হতে পারে তার একটা ধারণা মাত্র। কিছু ক্ষেত্রে নিজের উপর বিশ্বাস থাকলে KD-কে কম গুরুত্ব দেয়াটা ভাল। তবে একেবারে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলে হবে না আবার! নিজের একটা বিবেচনাবোধ বলেও তো কিছু থাকে, নাকি! 

 

  • আমরা র‍্যাংক করার চেষ্টা করি ইনকাম করার জন্য। সেই জন্য CPC নিয়ে মাথা ঘামানো উচিত। এক্ষেত্রে কিছু জিনিস অবশ্য মাথায় রাখতে হবে। যেমন- গুগল এডভিত্তিক কাজগুলোর জন্য কি-ওয়ার্ডের সিপিসি কম থাকাই স্বাভাবিক। তাই কি-ওয়ার্ড ফাইনালাইজ করার সময় হালকা করে CPC-তে চোখ বুলিয়ে নেবেন। CPC মানে হচ্ছে Cost Per Click. আর সিপিসি’র হিসেব বুঝতে হবে। যেমন- কত সিপিসি হলে লো কম্পিটিটিভ হিসেবে ধরব আর কত হলে মিডিয়াম বা হাই কম্পিটিটিভ ধরব। এবং, ক্ষেত্রে বিশেষে এই লো-হাই-মিডিয়াম আইডিয়ার পরিবর্তন হবে। এই জিনিসগুলো অভিজ্ঞতার সাথে সাথে আয়ত্তে এসে যাবে। 

 

  • এতোক্ষণে বিভিন্ন প্যারামিটার সেট করে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করে থাকলে, আপনার হাজার হাজার কি-ওয়ার্ডের লিস্ট বেশ ছোট হয়ে আসার কথা। তাহলে এরপর  সিলেক্ট করা কি-ওয়ার্ডগুলোকে একটা একটা করে গুগলে সার্চ করে পুনরায় Competitor Anaysis করুন, তাদের Lackings ধরতে, বুঝতে চেষ্টা করুন। এখানে Ahrefs, SEMRush ব্যবহার করে অন্যদের Content Gap, Backlink, etc বের করতে পারেন। এটাই হচ্ছে Competitor Analysis-এর একটা অংশ। লক্ষ্য করলেই দেখবেন শুরু থেকেই কিন্তু আমরা কম্পিটিটর এনালাইসিস করে আসছি, বাদ দেই নি। এটি হচ্ছে ফাইনাল টাচ! 

কি-ওয়ার্ড  রিসার্চের এ পর্যায়ে এসে আর্টিকেল বা কনটেন্ট রাইটিং এর জন্য Short Tail KW, Long Tail KW, LSI, Relevant Keywords –  এসব একটি নির্দিষ্ট আর্টিকেলের জন্য গ্রুপ করে আলাদা করে ফেলতে পারেন। এছাড়াও কনটেন্ট রাইটিং এর জন্য ফাইনালাইজ করা বিভিন্ন নামের, প্রকৃতির কি-ওয়ার্ডের সিনোনিম, রিলেভেন্ট শব্দ/ফ্রেজ ইউজ করতে পারেন। এতে করে লেখাতে ভ্যারিয়েশন আসবে, সেই সাথে কনটেন্টকে সহজেই এসইও ফ্রেন্ডলি হিসবে দাঁড় করানো সহজ হবে। তাহলে On Page SEO-এর ঝামেলা থেকেও পরে মুক্তি পেয়ে যাবেন। 

সবখানেই সার্চ ইনটেন্ট বুঝতে পারলে, ঝামেলা আরও কমে যাবে। Search Intent মানে হচ্ছে একজন এই কি-ওয়ার্ড লিখে যে সার্চ করল, তার চাহিদাটি কি, কি চাচ্ছে সে, কি জন্য এটি সার্চ করছে সে- এগুলো বুঝে কনটেন্ট লিখতে পারলে সেটি ভাল মানের কি-ওয়ার্ড রিসার্চ হবে। সার্চ ইনটেন্টের হিসেবে লিখতে পারলে  ভাল মানের  এসইও ফ্রেন্ডলি কনটেন্ট রাইটিং-এর রাস্তাটাও সরল হয়ে উঠবে। 

Keyword Density কি?

আজকাল আর এই কি-ওয়ার্ড ডেনসিটি নিয়ে কেউ তেমন মাথা ঘামায় না। কারণ গুগল আগের থেকে অনেক স্মার্ট হয়ে গেছে। এখন অনেককিছু একা একাই বুঝে ফেলতে পারে। তবুও এক হাজার শব্দে ৫-৭ বার ফোকাসড কি-ওয়ার্ড কনটেন্টে ইউজ করা যেতেই পারে। তবে জোর করে ঢুকিয়ে দিতে নেই, এতে করে ইউজার বিরক্ত হয়ে গেলে গুগল মামা-ও মাইন্ড করে ফেলবে যে! এই এক হাজার শব্দে ৫-৭ বার মেইন/প্যারেন্ট/ফোকাস কি-ওয়ার্ড ইউজ করার জন্য বলছি- এটিই Keyword Density. নিজে নিজে এবার % এর হিসেব সেরে নিতে পারেন! 

কিছু উঁকিঝুঁকি মারা প্রশ্নোত্তর পর্বঃ 

বেশ কিছু প্রশ্ন খুব পাওয়া যায়। এগুলো কমন;  বিশেষ করে নতুনদের কাছে- 

Long Tail Keyword কিভাবে ব্যবহার করব? জনপ্রিয় কি-ওয়ার্ড কিভাবে যথাযথভাবে প্রয়োগ করব? 

  • দেখুন, এখন SEO-এর দুনিয়ায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। আর এটা চলতেই থাকবে। জনপ্রিয় কি-ওয়ার্ড বলতে কোনও কথা নাই। আর যে সকল কি-ওয়ার্ড গায়ে গতরে বড় মানে লং টেইল কি-ওয়ার্ড তাদেরকে অর্থবহভাবে আর্টিকেলের ভেতরে প্যারাগ্রাফে রাখতে পারেন। অথবা, হেডিং, সাব-হেডিং-এ খুব সহজেই ব্যবহার করে কনটেন্টকে ওয়েল অপটিমাইজড করে ফেলতে পারেন।

ব্লগে কিভাবে কি-ওয়ার্ড ইউজ করব? কিভাবে ব্লগিং আর্টিকেলে কাজ করব?

  • ব্লগিং এর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। পার্থক্য হতে পারে কি-ওয়ার্ড রিসার্চের ধরনে ও সিলেকশনে। সেটা কেমন? আপনি ব্লগিং করার জন্য আর নিশ সাইটের জন্য একই ধরনের বা টাইপের Keywords নিয়ে কাজ করবেন না! নাকি করা উচিত হবে? এটা বুঝে ফেললেই ঝামেলা শেষ। 

সবশেষে… 

এই পর্যন্ত পড়ে থাকলে আপনার কি-ওয়ার্ড রিসার্চ কি এবং কেন, কিজন্য কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করবেন, কিভাবে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করবেনসেসব ভাজা ভাজা বুঝে ফেলার কথা।

তাছাড়া কিছু বেস্ট Keyword Research Tools নিয়েও আলোচনা করেছি, যেখানে কম্পিটিটর এনালাইসিস নিয়েও বকাবাদ্য রয়েছে পরতে পরতে। ওগুলোর কিছু Paid KW Research Tools হলেও বেশিরভাগ-ই কিন্তু Free KW Research Tools. এর মধ্যে আবার সিংহভাগ-ই গুগলের নিজস্ব প্রোডাক্ট। 

আর মনে রাখবেন- যত টুলস দিয়েই কাজ করেন না কেন, যত সময়-ই সেভ হোক না কেন- ম্যানুয়ালি অন্তত কিছু হলেও রিসার্চ করবেন। কারণ ম্যানুয়াল রিসার্চের গুরুত্ব শুরু থেকে আজ অব্দি এসইও জগতে অমলিন, একই রকম কার্যকরী। এটি কি-ওয়ার্ড রিসার্চের ক্ষেত্রে আরও বেশি করে চোখে পড়ে। আর ভাল কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করতে না পারলে, বিশ্বমানের আর্টিকেল লিখেও তেমন ফায়দা নেই। গুগল সাহেব র‍্যাংক দেবে না এত সহজে। 

তাহলে, কি বোঝা গেল?- বোঝা গেল এই যে, Keyword Research হচ্ছে On Page SEO তথা SEO-এর অন্যতম প্রধান কান্ডারী। এনাকে কিছুতেই হাল্কা করে দেখা যাবে না। আজ তবে এই পর্যন্তই। আলবিদা।।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top