ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি: বিনামূল্যে ওয়েবসাইট বানানোর নিয়ম

বিনামূল্যে ওয়েবসাইট তৈরি করার নিয়ম:  আসসালামুআলাইকুম Onlineincomebd.net এর আজকের পোস্টে আপনাকে স্বাগতম। আমরা আজকের পোস্টে জানব ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করার পদ্ধতি সহ আপনি কিভাবে সেই ফ্রি ওয়েবসাইট থেকে টাকা আয় করবেন সেই সম্পর্কেও।

তাই ধৈর্য ধরে সম্পূর্ন পোস্টটি পড়ে আপনিও অনলাইনে আয় করার যাএা শুরু করুন আজ থেকেই।

বিনামূল্যে ওয়েবসাইট তৈরি
বিনামূল্যে ওয়েবসাইট তৈরি

একটা সময় মানুষের ধারণা ছিল কোডিং নোলেজ ছাড়া ওয়েবসাইট তৈরি অসম্ভব এমনকি অনেকে এখনও মনে করে থাকেন এটি। কয়েক বছর আগেও কথাটি সত্য ছিল কিন্তু এখন ওয়েবসাইট তৈরির ব্যপারে এক বিপ্লব এনেছে CMS(Content management system) গুলো।

CMS হলো এমন কিছু প্ল্যটফর্ম যেখানে সিম্পল ড্র্যগ এন্ড ড্রপ করে আপনি সহজেই তৈরি করে ফেলতে পারেন যেকোন ওয়েবসাইট। এমন কিছু CMS হলো :- wordpress, blogger, wix, weebly ইত্যাদি।এসব CMS দিয়ে ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়?

না। সব CMS ফ্রী নয়। কারন অনেক CMS ব্যবহার করতে হলে আপনার হোস্টিং কিনতে হবে। ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরির জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় CMS হলো Blogger.com. কিভাবে ফ্রি ওয়েবসাইট বানানো যায় সেটি জানার আগে জেনে নিই একটি র ওয়েবসাইট তৈরির খরচ কত হয়।

একটি ওয়েবসাইট তৈরির খরচ কত হয়?

একটি ওয়েবসাইট তৈরির জন্য প্রথমত দরকার হয় একটি ডোমেইন। ডোমেইন হলো একটি ওয়েবসাইটের নাম এটি.com,.org,.info ইত্যাদি হতে পারে।

একটি ডোমেইনের মূল্য ৯৯ টাকা থেকে শুরু করে ৭০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। ডোমেইনের পর দরকার হোস্টিং। হোস্টিংয়ের জন্য কমপক্ষে ১০০ টাকা মাসিক খরচ হবে এবং যদি বাৎসরিক নিতে চান তাহলে ১০০০ টাকা খরচ হবে। এগুলো একটি ওয়েবসাইট তৈরির প্রাথমিক খরচ।

এছাড়াও আপনাকে এক সময় প্রিমিয়াম থিম কিনতে হবে টাকা দিয়ে। অনেক সময় অনেক প্রিমিয়াম প্লাগইনের ও দরকার হয়। কিন্তু আমরা আপনাকে আজকে দেখাব কিভাবে সম্পূর্ন বিনামূল্যে ওয়েবসাইট তৈরি করবেন।

অবশ্যই পড়ুন:



ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন কেন?

আমরা যারা ব্লগিং করতে আগ্রহী কিন্তু তাদের মধ্যে বেশিরভাগ থাকে স্টুডেন্ট যাদের ইনভেস্ট করার মতো যথেষ্ট টাকা থাকে না। অথবা অনেকেই ইনভেস্ট করতে পারে না তারা চাইলে ফ্রি ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারে।

ফ্রি ওয়েবসাইটে ব্লগিং করেও ইনকাম করা সম্ভব। অনেকেরই এমন ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে ফ্রি ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করা যায় না। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।

এমন অনেক দৃষ্টান্ত আছে যারা ফ্রি ওয়েবসাইট দিয়েই গুগোলে টপ রেংকে রয়েছে। এবং ভালো অংকের টাকা আয় করছে।এবং শুরুতেই যদি ফ্রি ওয়েবসাইট দিয়ে শুরু করেন এবং সফল হন তাহলে ইনভেস্ট করে নতুন ওয়েবসাইট বানাতে আপনি অনুপ্রেরিত হবেন।

এছাড়া আমি মনে করি প্রত্যেকেরই শুরুটা ফ্রি ওয়েবসাইট দিয়ে করা উচিত তার কারণ হলো আমরা অনেকেই শুরুতে অনেক ভুল করি, এসব ভুল থেকে নতুন অনেক কিছু শিখতে পারি এবং অভিজ্ঞতা হয়।

যদি প্রথমেই টাকা খরচ করে ওয়েবসাইট বনিয়ে ফেলি তাহলে আমাদের অনেক ভুলের জন্য আমাদের টাকা নষ্ট হয় কিন্তু যদি শুরুটা ফ্রী ওয়েবসাইট দিয়ে করি তাহলে আমাদের কোন ক্ষতির সম্মূখ হতে হচ্ছে না।

বিনামূল্যে ওয়েবসাইট তৈরির সুবিধা এবং অসুবিধা

আমরা ফ্রীতে ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য জনপ্রিয় প্ল্যটফর্ম blogger কে ব্যবহার করব।তাই এখন আমরা Blogger এর সুবিধা এবং অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করব।
সুবিধা :-
১) এইখানে আপনি একটি বেসিক লেভেলের মানসম্মত ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন।
২)এই প্ল্যাটফর্মটি এসইও ফ্রেন্ডলি কারন এটি গুগলেরই আওতাধীন।
৩) অন্য কোন প্ল্যাটফর্মে ফ্রি হোস্টিং দিলেও আপনাকে ডোমেইন কিনতে হবে।কিন্তু ব্লগারে ফ্রি ডোমেন+হোস্টিং দুটিই পাবেন।
৪) ব্লগারে আপনাকে যে ডোমেইনটি দিবে সরটি হলো blogger.com এর সাবডোমেইন।কিন্তু এই সাবডোমেইনের বিশেষত্ব হচ্ছে এটি দিয়ে আপনি খুব সহজে গুগোল এডসেন্সের এপ্রুভাল পেয়ে যাবেন যদি আপনার ওয়েবসাইট এডসেন্সের সকল শর্ত মানে।যেটি অন্য কোন সাবডোমেইনে পাবেন না।
৫)এটিতে খুব সহজে গুগোল এনালাইটিকস যুক্ত করতে পারবেন।
৬) পেইড ওয়েবসাইটে যেসব এসইও সেটিংস রয়েছে তার প্রায় অর্ধেক সেটিংস ফ্রিতে দিবে এই প্ল্যাটফর্ম আপনাকে।
৭) চাইলে খুব সহজে নিজের কাস্টম ডোমেইন দিয়েও ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন।

৮) এটির মধ্যমে সহজেই মোবাইল দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন।

অসুবিধা :-
১) এই প্ল্যাটফর্মটি বেসিক লেভেলের এবং সম্পূর্ণ Html এবং Css based। তাই খুব এডভান্স লেভেলের ফিচার গুলো এখানে পাবেন না।
২) ব্লগিংয়ের জন্যই এটি নির্মিত। ই-কমার্স বা এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চাইলে এই প্ল্যালফর্ম আপনার জন্য নয়।
৩) এডভান্স কিছু করতে হলে Html এবং css সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।
৪) এই প্ল্যাটফর্মে ওয়েবসাইট তৈরি করলে তার প্রকৃত মালিক আপনি হবেন না। কারন এটি গুগোলের হোস্টিংয়ে রয়েছে। তাই আপনি যদি তাদের কোন কনডিশন ভঙ্গ করে ওয়েবসাইট তৈরি করেন তাহলে তারা সেটি বন্ধ করে দিবেন।
৫) আপনি যদি ব্লগারে আপনার ওয়েবসাইট তৈরি করে তা এডসেন্সের মাধ্যমে মনিটাইজ করেন তাহলে আপনার রেভিনিউ কম আসবে কারন ব্লগার এবং এডসেন্স দুটিই গুগোলের আওতায় । এবং আপনাকে ফ্রি হোস্টিং দেওয়ার কারনে গুগোল আপনার আয় থেকে ছোট একটি অংশ কেটে রাখবে।(যদি আপনি আয় করেন তবেই এই টাকা কাটবে এবং এটির পরিমান খুব কম)
৬) অন্য প্ল্যাটফর্ম গুলোই কোন প্রকার সমস্যা হলে তা প্লগইন দিয়ে সলভ করা যায়।কিন্তু এখানে কোন প্লাগইন ব্যবহার করা যায় না তাই সমস্যা গুলো কোডিং করেই ফিক্স করতে হয়।

কেন Blogger.com?

Blooger হলো গুগলেরই একটি প্ল্যাটফর্ম। এখানে কোন খরচ ছাড়াই আপনি একটি ভালো মানের ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলতে পারেন। বর্তমানে এটিই জনপ্রিয় কারন এটি সবচেয়ে সহজ এবং নিরাপদ।

গুগলের প্ল্যাটফর্ম হওয়ায় এর নিরাপত্তা নিয়ে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন। অনেকেই ওয়েবসাইট মনিটাইজ করেন গুগোল এডসেন্সের মাধ্যমে।

এখান থেকে আপনি সরাসরি পেয়ে যাবেন গুগোল এডসেন্স কানেক্ট করার অপশন। একটির ওয়েবসাইট গুলো হয় মোবাইল ফ্রেন্ডলি। এছাড়াও গুগোলের প্ল্যটফর্ম হওয়ায় এটির SEO সহজ।

Blogger এ ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি লাগে?

Blogger খুব সহজ এবং জনপ্রিয় CMS. এটিতে বিনাখরচে ব্লগ সাইট খুলতে আপনার দরকার শুধু একটি জিমেইল একাউন্ট। আপনি চাইলে কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করতে পারেন না চাইলে সাব ডোমেইন দিয়েই আপনার ওয়েব তৈরি করতে পারেন।

আর দেখুন:

কিভাবে ব্লগারে এ ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন

Step 1:– প্রথমে blogger.com ওয়েবসাইটে যাবেন।তারপর এমন ইন্টারফেস দেখবেন।

ফ্রিতে ওয়েবসাইট তৈরি করার উপায় Step 2: তারপরে “Create Blog” লিখায় ক্লিক করবেন।আপনার জিমেইল দিয়ে সাইন ইন করবেন।

জিমেইল একাউন্ট দিয়ে লগইন করুন
Step 3:- তারপর আপনার জিমেইল দিয়ে সাইন ইন করার পর আপনার ওয়েবসাইটের টাইটেল দিবেন।

ওয়েবসাইটের টাইটেল দিন
Step 4:- তারপর আপনার সাইটের url দিবেন।
{যদি বলে address not available তাহলে url এর সাথে সংখ্যা যুক্ত করবেন}

ওয়েবসাইটের এড্রেস দিন

 

 

step 5:- তারপর আসবে ডিসপ্লে নেইম দেওয়ার অপশন এখানেও আপনার ওয়েবসাইটের নাম দিবেন। তারপর ফিনিস এ ক্লিক করবেন

ওয়েবসাইটের ডিসপ্লে নাম দিন

এখন আপনি ফ্রীতে ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেললেন।

কিন্তু এখন আপনার ওয়েবসাইটে কিছুই নেই। তাই আপনার ওয়েব সাইটকে ডিজাইন অর্থাৎ সেটিংস করতে হবে।

ব্লগার ওয়েবসাইট সেটিংস ও কাস্টমজেশন

ব্লগারে ওয়েবসাইট তৈরির পর এমন একটি ইন্টারফেস দেখবেন।

ওয়েবসাইট সেটিংস ও কাস্টমজেশন

এখানে বাম পাশে অনেক সেটিংস দেখতে পারছেন চলুন যেনে নিই এসব সেটিংস কিভাবে ব্যবহার করবেন।

Post —
উপর দিক থেকেই প্রথম সেটিংসটি হলো Posts। এখানে ক্লিক করে আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন পোস্ট করতে পারব৷ পোস্ট করার জন্য নিচের ছবির মতো “New post ” লিখায় ক্লিক করতে হবে।

ফ্রি ওয়েবসাইট সেটিংস

তারপর এমন একটি ইন্টারফেস আসবে। এখানের প্রত্যেকটি অপশনকে A,B,C,D দিয়ে চিহ্নিত করে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

ওয়েবসাইট সেটিংস

A:- A হলো টাইটেল বার এখানে আপনার পোস্টের টাইটেল দিবেন।

B:- B অপশনটি দিয়ে আপনি সিলেক্ট করতে পারবেন কিভাবে আপনি পোস্টটি লিখবেন। যদি Compose view দেন তাহলে নরমাল টেক্সট এর মাধ্যমে পোস্টটি করবেন। যদি Html দেন তাহলে কোডিং করে লিখতে হবে পোস্টটি। যদি Compose view দিয়ে লিখেন তাহলে কোডিং অটোমেটিক হয়ে যাবে তাই এটা দিয়ে লিখাই উত্তম।

C:- C অপশনটি দিয়ে আপনি আপনার টেক্সট এডিট করতে পারবেন। টেক্সট বোল্ড করা ফন্ট সাইজ ঠিক করা ইত্যাদি বিষয় এই অপশন দিয়ে করতে হবে

D:- এই জায়গায় আপনি আপনার টেক্সট লিখবেন।
E:- E এর মধ্যে দুটি অপশন রয়েছে “Preview ” এবং “Publish” Preview তে ক্লিক করলে আপনার পোস্টটি পাবলিস এর পর কেমন হবে তা দেখাবে। আর Publish এ ক্লিক করলে আপনার পোস্টটি হবে

F:- F এর মধ্যে ৫ টি সেটিংস রয়েছে। চলুন এগুলো নিয়ে বিস্তারিত জানি।

  • Labels :- আপনার পোস্টটি কোন ক্যাটাগরিতে রাখবেন ঐ ক্যাটাগরি সিলেক্ট করবেন এখানে।
  • Published time:- আপনি যদি আপনার পোস্ট কোন নির্দিষ্ট সময়ে পাবলিস করতে চান তাহলে এখান থেকে ঐ টাইম সিলেক্ট করে দিলে তা অটোমেটিক হয়ে যাবে।
  • Permalink :- আপনার ওয়েবসাইটের লিংক কেমন হবে এটা এখান থেকে সেটিং করতে পারবেন।
  • Location :- কোন লোকেশন থেকে পোস্টটি করছেন চাইলে তা সিলেক্ট করে দিতে পারেন। এটা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়
  • Options :- আপনার পোস্টে কেউ কমেন্ট করতে পারবে নাকি পারবে না তা এইখানে সেটিং করতে পারবেন।
    Post এর যাবতীয় সেটিংস আসা করে বুঝেছেন।

তার পরবর্তী অপশন হলো Stats
Stats:– এখানে আপনি দেখতে পারবেন আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটরস সংখ্যা এবং কোথা থেকে মানুষ ভিজিট করছে তা। এখানে তেমন কোন সেটিংস নেই।

Comments:- কেউ যদি আপনার পোস্টে কমেন্ট করে তাহলে তা এই অপশনে গিয়ে দেখতে পারেন।

Earnings :- আপনি যদি গুগোল এডসেন্সের সাথে আপনার ওয়েবসাইটকে মনিটাইজ করতে চান তাহলে এই অপশন থেকে সরাসরি কানেক্ট করতে পারেন এডসেন্সের সাথে।

Pages:–
Pages অপশনটিতে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য প্রয়োজনীয় পেইজ ক্রিয়েট করতে পারবেন যেমন:- Privacy policy, about us ইত্যাদি।পোস্টের মতোই আপনি একই সিস্টেমে পেইজ ক্রিয়েট করতে পারবেন।

Layout :–
আপনার ওয়েবসাইটের কোনদিকে কি থাকবে হেডারে কি থাকবে, সাইড বারে কি থাকবে তা Layout অপশনে গিয়ে কনট্রোল করতে পারবেন। আপনার ওয়েবসাইটের লগোও এই অপশনে গিয়ে এড করতে পারবেন।

Themes :-
এখানে গিয়ে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য থিম সিলেক্ট করতে পারবেন অথবা নতুন কোন থিম আপলোড দিতে পারবেন। আপনার ওয়েবসাইটের কালার, height, weight ইত্যাদি সকল বিষয় এখান থেকে কনট্রোল করতে পারেন। ওয়েবসাইটকে মোবাইল অপটিমাইজড ও করতে পারবেন এখান থেকে।

সেটিংস:–
আপনার ওয়েবসাইটের সার্চ ডেসক্রিপশন, টেগ লাইন, গুগোল এনালাইটিকস কানেক্ট ইত্যাদি যাবতীয় সেটিংস এখান থেকে করবেন।

এসব অপশন গুলো সম্পর্কে জানা খুবই দরকার ফ্রীতে ওয়েবসাইট তৈরির জন্য।

আর দেখতে পারেন: 

ব্লগারে ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করার ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সেটিংস

১) কিভাবে লগো যুক্ত করবেন?
প্রায় প্রত্যেকটা ওয়েবসাইটে লগো থাকে।লগো একটা ওয়েবসাইটকে প্রোফেশনাল লুক দেয়। ব্লগারের ওয়েবসাইটেও আপনি লগো এড করতে পারবেন চলুন জেনে নিই কিভাবে।

Step1:- প্রথমে Layout অপশনে যান।
Step2:- তারপর “header” লিখার ডান পাশে Edit বাটনে ক্লিক করুন।


Step3:– তারপর আপনার সামনে একটি মেনুবার আসবে যেখানে আপনার ওয়েবসাইটের title, description লিখার বক্স থাকবে এবং তার নিচে “choose file” এ ক্লিক করে আপনার লগোটা সিলেক্ট করে আপলোড করে দিবেন।

সাইড বার সাজান

সাইড বার কেমনে সাজাবেন?
ওয়েবসাইটে এক পাশে পোস্ট থাকে আরেক পাশে কিছু অপশন থাকে যেমন:- রিসেন্ট পোস্ট, রিলেটেড পোস্ট, এডস ইত্যাদি। এসব কিভাবে যুক্ত করবেন তা জেনে আসি।
Step 1:- Layout অপশনে যাবেন।
Step2:– Side bar লিখার নিচে Add Gadgets লিখায় ক্লিক করবেন।

Add Gadgets লিখায় ক্লিক করুন
Step3:– তারপর সমস্ত অপশন আসবে যেটি দিতে চান সেটিতে ক্লিক করলেই এড হয়ে যাবে।

কিভাবে Google Adsence যুক্ত করব?
ব্লগারে সরাসরি এডসেন্সের সাথে যুক্ত করার সিস্টেম আছে। চলুন দেখে নিই কিভাবে যুক্ত করব এডসেন্স।
Step1:- প্রথমে Earning অপশনে যাবেন।

এডসেন্সের সাথে যুক্ত করুন
Step2:– তারপর ওখানে ” Connect to adsense ” লিখায় ক্লিক করবেন। (এডসেন্স যুক্ত করার আগে আপনাকে যেই ইমেইল দিয়ে blogger একাউন্ট খুলেছেন সেই ইমেইল দিয়ে একটি এডসেন্স একাউন্ট খুলে নিতে হবে।যদি আপনার ওয়েবসাইট এডসেন্সের জন্য এপ্রুভ করানো না থাকে তাহলে Apply to adsense লিখা আসবে ওখানে ক্লিক করে আগে ওয়েবসাইট এপ্রুভ করিয়ে নিতে হবে)

ওয়েবসাইট গুগোল রেংকে আনার ১০ টি টিপস:-

১) প্রথমেই চিন্তা করে নিতে হবে আপনি কি টপিক নিয়ে ব্লগিং করবেন। এমন একটি টপিক পছন্দ করুন যেটায় আপনার আগ্রহ এবং জ্ঞান দুটিই আছে। যেটায় আপনি কোন স্বার্থ ছাড়া কাজ করে যেতে পারবেন।

২) যদি টপিক সিলেক্ট করে ফেলেন তাহলে ঐ টপিকটা নিয়ে ভালো ভাবে রিসার্চ করুন। মানুষের কাছে ঐ টপিকটা কেমন মূল্যবান। ঐ টপিক লিখে কয়জন সার্চ করে সব ডিটেইলস দেখুন। আপনি অবশ্যই এমন একটি টপিক সিলেক্ট করবেন যেটায় সার্চ বেশি হয় এবং কম্পিটিটর কম।

৩) টপিক সিলেক্ট করার পর আসে ওয়েবসাইট খোলার পালা। ওয়েবসাইট যেহেতু ফ্রি প্ল্যাটফর্মে খুলবেন তাই আপনি কোন ডোমেইন পাবেন না। পাবেন সাবডোমেইন।এই সাবডোমেইন টা এমন রাখবেন যেনো এটা আপনার টপিক রিলেটেড হয়।

৪) আপনার ওয়েবসাইট খোলার পর আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে ভালো রেসপন্সিব একটি থিম। ব্লগারে ডিফল্ট কিছু থিম থাকে যেগুলো ব্লগিং ওয়েবসাইটের জন্য মানানসই নয় তাই ভালো এবং ফ্রি থিম পেতে এই লিংকে যেতে পারেন:- https://gooyaabitemplates.com/
৫) থিম সিলেক্ট করার পর থিকটিকে ভারো ভাবে নিজের পছন্দমতো কাস্টমাইজেশন করতে হবে। কাস্টমাইজ করার সময় দর্শকের দিকটা বিবেচনা করতে হবে।পৃথিবীর সবচেয়ে অগোছালো মানুষটাও কখনো অগোছালো জিনিস পছন্দ করবে না তাই পুরা ওয়েবসাইটকে গোছালো ভাবে কাস্টমাইজ করতে হবে কয়েকটি ক্যাটাগরি তৈরি করে প্রত্যেক ক্যাটাগরির জন্য হোম পেইজের মেনুবারে আলাদা আলাদা অপশন দিবেন।

৬)কাস্টমাইজেশনের পর আপনাকে পোস্ট করতে হবে। পোস্ট করার সময় কয়েকটি বিশেষ দিকে নজর রাখতে হবে যদি আপনি সফল ব্লগার হতে চান।চলুন আলোচনা করি সেসব বিষয় নিয়ে :-

  • কি-ওয়ার্ড:- কি-ওয়ার্ড হলো আপনার পোস্ট সম্পর্কিত সেই সকল বাক্য যা লিখে মানুষ গুগোলে সার্চ করে। যেমন :- আপনি পোস্ট করবেন ওজন কমানোর ২০ টি উপায় নিয়ে। ওজন কমানোর উপায় হবে আপনার ফোকাস কি-ওয়ার্ড অর্থাৎ মানুষ “ওজন কমানোর উপায়” দিয়ে সার্চ করলে আপনার পোস্টটি দেখবেন।কিন্তু মানুষ শুধু ওজন কমানোর উপায় দিয়েই সার্চ করবে না অনেকেই সার্চ করবে “কিভাবে ওজন কমাবো” “কি করলে ওজন কমবে” এসব হবে আপনার রিলেটেড কি-ওয়ার্ড এসব কি-ওয়ার্ড গুলো আপনার পোস্টে থাকতে হবে। কিন্তু ফোকাস কি-ওয়ার্ড টা বেশি থাকতে হবে যাতে গুগোল বুঝতে পারে আপনার পোস্টটি কি নিয়ে। আবার কেউ কিন্তু “রহিমের ওজন কিভাবে কমাবে” এটি লিখে সার্চ করবে না তাই এটি আপনার পোস্ট রিলেটেড হলে এটিকে কি-ওয়ার্ড বলা যায় না। তাই কি-ওয়ার্ড নিয়ে ভালোভাবে রিসার্চ করে তবেই পোস্ট লিখবেন।
  • আর্টিকেল কোয়ালিটি :- আপনার কমপিটিটরসরা যেমন পোস্ট করেছে সেটি দেখবেন এবং তাদের চেয়ে বেশি ইনফরমেশন দিয়ে আরও কোয়ালিটিফুল পোস্ট করতে চেষ্টা করবেন।
  • আর্টিকেল ইমেজ:– আপনার ইমেজ গুলোর নাম, ক্যপশেন অবশ্যই আপনার ফোকাস কি-ওয়ার্ড রাখবেন।
  • সার্চ ডেসক্রিপশন :– প্রত্যেক পোস্টের একটি সার্চ ডেসক্রিপশন অপশন থাকে ওখানে আপনার পোস্ট সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখবেন এবং ওখানে অবশ্যই আপনার ফোকাস কি-ওযার্ড রাখবেন

এভাবে আপনি একে একে পোস্ট করবেন।পোস্ট কোথাও থেকে কপি করবেন না।

৭) Privacy Policy, Contact with us, About us এই তিনটি পেইজ অবশ্যই খুলতে হবে।তাই এই পেইজ গুলো খুলে রাখবেন।

৮) আপনার ওয়েবসাইটের নামে একটি ফেইসবুক পেইজ ক্রিয়েট করবেন।

৯) অবশ্যই ওয়েবসাইটের ডেসক্রিপশনে আপনার ওয়েবসাইটের সম্পর্কে ভালো ভাবে লিখবেন।

১০) সর্বশেষে এসইও করতে হবে।এসইও দুই প্রকার :-

  •  on page seo
  • off page seo

On page seo
On page seo’র ক্ষেত্রে কিছু বিষয় কাজ করে যেমন:-

  • কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করা।
  • সঠিক কি-ওয়ার্ড সঠিক জায়গায় সঠিক পরিমানে ব্যবহার করা।
  • ওয়েবসাইটের স্পিড ভালো হওয়া। তাই থিম সিলেক্ট করার আগে এটি নিশ্চিত করে নিবেন।
  • H2 ট্যাগ ব্যবহার করা।
  • ইমেজে কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করা।
  • সার্চ ডেসক্রিপশনে ঠিকঠাক কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করা।

এই বিষয় ঠিকঠাক করে করলে আপনার On page SEO হয়ে যাবে। এখন আসা যাক Off page SEO নিয়ে।

Off page SEO
Off page SEO করার জন্য নিচের বিষয় গুলো অনুসরণ করুন।

  • বিভিন্ন গেস্ট পোস্টিং সাইটে গিয়ে আপনার ওয়েবসাইটের সম্পর্কে লিখে ওয়েবসাইট লিংক দিয়ে Backlink তৈরি করবেন।
  • গুগোল সার্চ কনসোলে সাইট ম্যাপ সাবমিট করবেন।
  • গুগোল সার্চ কনসোলে প্রতিটি পোস্টের লিংক ইনডেক্স করবেন

উপরোক্ত সকল বিষয়ের দিকে গুরুত্ব দিলে আমি আসা করছি আপনি ওয়েবসাইট থেকে ভালো কিছু পাবেন। আসা করি এখন আপনি ফ্রীতে ওয়েবসাইট তৈরি সম্পর্কিত সকল বিষয় বুঝেছেন তাহলে দেরি কেন? এবার নিজেই ওয়েবসাইট তৈরি করুন।

ফ্রী ওয়েবসাইট সংক্রান্ত বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন এবং উত্তর

১)ফ্রীতে ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করা যায়?
উত্তর:– অবশ্যই যায়। এক্ষেত্রে বহুল জনপ্রিয় পদ্ধতি হলো এডসেন্স।আর blogger এর ফ্রি ওয়েবসাইট যদি সব শর্ত মানে তবে তা এপ্রুভাল পাবে।

[ Warning:– অনেকেই মনে করেন গুগোল এডসেন্সের কিছু ক্যাটাগরির এডস ইসলামে বৈধ নয়। তাই মুসলিম পাঠকরা এই বিষয়ে ভালোভাবে জেনে উক্ত ক্যাটাগরি ব্লক করে দিবেন]

২) ফ্রী ওয়েবসাইট গুলো কতটা নিরাপদ?
উত্তর :- আমাদের দেখানো প্ল্যাটফর্ম ব্লগারে নিরাপত্তা জনিত কোন সমস্যায় পড়তে হবে আমি বিশ্বাস করি।কারন এটি গুগোলের আওতাধীন।

৩) ফ্রি ওয়েবসাইট থেকে কত টাকা আয় করা যায়?
উত্তর :- তার নির্ভর করবে আপনার ওয়েবসাইটের ভাষা, টপিকের উপর।কিন্তু একটি ফ্রি ওয়েবসাইটের ইনকাম আর পেইড ওয়েবসাইটের ইনকামের মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য থাকবেনা যদি উভয়ের মধ্যে ভালো ট্রাফিক থাকে।ইনকামের পূর্বশর্ত ট্রাফিক ফ্রি কিংবা পেইড ওয়েবসাইট হওয়া নয়।

৪) ব্লগারে কি কাস্টম ডোমেইন এড করা যাবে?
উত্তর :- হ্যা এক্ষেত্রে আপনাকে ডোমেইন কিনে নিতে হবে তারপর আপনি ঐ ডোমেইনের সাথে আপনার ওয়েবসাইটকে যুক্ত করতে পারবেন। এটি করার জন্য আপনার কোন হোস্টিংয়ের দরকার নেই।

৫) ব্লগারে সবচেয়ে ভালো থিম কোনটি?
উত্তর:- ব্লগারে সবচেয়ে জনপ্রিয় দুটি থিম হলো Needmag এবং Newspaper। এদুটো খুব রেসপন্সিভ এবং ফাস্ট।
৬) মোবাইল দিয়ে ফ্রি ওয়েবসাইট খোলা যাবে?
উত্তর :– অবশ্যই তবে মোবাইল দিয়ে ওয়েবসাইট খুলতে একটু কষ্ট হবে কারন মোবাইলের স্ক্রিন ছোট। কিন্তু খোলা যাবে না এমনটা না।

৭) কোন টপিকগুলো নিয়ে ব্লগারে ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করলে ভালো হবে?
উত্তর:- নিউজ পোর্টাল, ম্যাগাজিন, ইডুকেশন,প্রোডাক্টনরিভিউ ইত্যাদি বিষয় গুলো নিয়ে ব্লগারে ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। বর্তমানে ই-কমার্স বা এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য অনেক থিম বের হয়েছে চাইলে ওগুলোও ট্রাই করতে পারবেন।কিন্তু আগেই বলেছি ব্লগারে ফিচার লিমিটেড।

৮) ব্লগার নাকি ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করব?

উত্তর:- ব্লগার থেকে ওয়ার্ডপ্রেস অনেক এডভান্স এবং এটিতে রয়েছে সব এডভান্স ফিচার। যদি আপনি ওয়ার্ডপ্রেসের খরচ বহন করতে পারেন তবে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করেন। কিন্তু ব্লগার খুব বিগেনার ফ্রেন্ডলি। তবে আপনার ওয়েবসাইট যখন রেংক করবে ভিজিটর বাড়বে তখন আপনার কিছু এডভান্স ফিচার দরকার হবে সেই সময় আপনাকে ওয়ার্ডপ্রেসে সিফ্ট হতে হবেই।ব্লগার ওয়েবসাইট যেকোন সময়ই ওয়ার্ডপ্রসে সিফ্ট করতে পারেন। অনেকেই প্রথমে ব্লগার দিয়ে শুরু করে পরবর্তীতে ওয়ার্ডপ্রেসে সিফ্ট হয়।

সর্বশেষ

ব্লগিং বিষয়টি ইউটিউবিংয়ের মতো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে দিন দিন। এটিও একটি ব্যবসা যেখানে রয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকার সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ। চেষ্টা করবেন সৎ ভাবে কাজ করতে কিছু না পেলেও সততার মূল্য পাবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top