ডিজিটাল মার্কেটিং কি?: কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন?

ডিজিটাল মার্কেটিং কি?: কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন?: আসসালামুআলাইকুম onlineincomebd.net এর আজকের পোস্টে আপনাকে স্বাগতম। আজ আমরা জানব “ডিজিটাল মার্কেটিং” সম্পর্কে।

নিঃসন্দেহে, বর্তমান যুগে ডিজিটাল মার্কেটিং বিশ্বের সকল জনপ্রিয় মার্কেটিং ব্যবস্থার মধ্যে অন্যতম । কেননা এটি তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় হওয়ার পাশাপাশি বর্তমানে মাঝারি এবং প্রবীণ প্রজন্মের কাছেও বেশ গ্রহনয্যোগ্য হয়ে উঠেছে।

বর্তমানে  মার্কেটাররা তাদের পণ্য এবং পরিষেবার মার্কেটিং এর জন্য একটি নির্ভরযোগ্য চ্যানেল হিসাবে ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবহার করছে। ডিজিটাল মার্কেটিং গ্রাহক এবং ভোক্তাদের সাথে ইলেক্ট্রনিক কমিউনিকেশনের মাধ্যমে একটি সুস‌ম্পর্ক  গড়ে তুলে।

প্রযুক্তিতে অগ্রগতির কারণে ডিজিটাল মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এবং সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং ব্যবহার ক্রমাগত বেড়েই চলছে।

সফল ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য গ্রাহকের আচরণ এবং ডিজিটাল মার্কেটিং কি সেটি বুঝা অ্ত্যন্ত জরুরী। তো চলুন জেনে আসি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সকল খুটিনাটি।

ডিজিটাল মার্কেটিং
ডিজিটাল মার্কেটিং

ডিজিটাল মার্কেটিং কি? (What is Digital Marketing)

মার্কেটিং ব্যবসায়ের একটি অস্থিতিশীল, পরিবর্তনশীল এবং গতিশীল ক্রিয়াকলাপ। বিভিন্ন সংকট এবং শক্তির ঘাটতি, মুদ্রাস্ফীতি, অর্থনৈতিক মন্দা, উচ্চ বেকারত্ব, মরণশক্তি, মরণ সংস্থাগুলি, সন্ত্রাসবাদ ও যুদ্ধ এবং কিছু শিল্পে দ্রুত প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের প্রভাবগুলির কারণে মার্কেটিং এর ভূমিকা নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। ডিজিটাল মার্কেটিং বর্তমান বিশ্বে একটি বিশাল গুঞ্জন তৈরি করেছে।

ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে মূলত ডিজিটাল চ্যানেলগুলোতে সমস্ত মার্কেটিংয়ের কৌশল প্রয়োগ করা কে বুঝায়। এই মার্কেটিং ব্যবস্থায় পণ্য প্রচারের জন্য এসএমএস, সার্চ ইঞ্জিন, ইমেইল, ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া এবং মোবাইল ডিভাইসগুলির মতো পরিষেবা ও বিভিন্ন উৎস ব্যবহার করা হয়।

ডিজিটাল মার্কেটিং পদ্ধতির “ডিজিটাল” বা সর্বাধুনিক প্রকৃতি বর্তমান সময়ে এটিকে যেকোন ব্যক্তির ব্যবসা্র প্রচারের জন্য অত্যন্ত সাশ্রয়ী মাধ্যম করে তুলেছে। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ব্যবহার কোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং লক্ষ্যের উপর নির্ভর করে।

এক কথায়, ডিজিটাল মার্কেটিং হল আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কোন পন্য বা পরিসেবার মার্কেটিং করা। প্রধানত ডিজিটাল মার্কেটিং ইন্টারনেট এর উপর নির্ভরশীল, তবে এখানে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে মোবাইল ডিভাইস, বিজ্ঞাপন প্রদর্শন, এবং সকল প্রকার আধুনিক মাধ্যম সমূহের ব্যবহার।

আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং এ নতুন হন তবে এটি আপনার কাছে কিছুটা জটিল মনে হতে পারে

তবে বিভিন্ন দিক থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং আমাদের সনাতন মার্কেটিং ব্যবস্থার চেয়ে আলাদা নয়।

কেননা উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো তাদের লিড এবং গ্রাহকের সাথে পারস্পরিক সম্পর্ক বিকাশের চেষ্টা করে। এখানে প্রধান ভিন্নতা হিসেবে থেকে যায় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গুলোর ব্যবহাহৃত মার্কেটিং চ্যানেল ।

আপনি সর্বশেষ গুরুত্বপুর্ন যেই জিনিসটি ক্রয় করেছেন তার কথাই না হয় চিন্তা করুন, সম্ভবত আপনি বাড়ি কিনেছেন, কাউকে আপনার ছাদ ঠিক করতে নিয়োগ করেছেন বা আপনার অফিসে কাগজ সরবরাহকারী বদলেছেন।

তা যা-ই হোক না কেন, সর্বপ্রথম আপনি সম্ভবত ইন্টারনেট অনুসন্ধান শুরু করেছিলেন, আরও কিছু শিখেছেন এবং সবার সেরা বিকল্পটার সন্ধান করেছেন।

সন্দেহাতীতভাবে আপনার চূড়ান্ত কেনার সিদ্ধান্ত ছিল মুলত আপনার বন্ধু বা পরিবারের পরামর্শ, এবং ইন্টার্নেটে আপনার রিসার্চ থেকে প্রাপ্ত মুল্য, বৈশষ্ট্য এবং উপকারী দিকগুলোর উপর ভিত্তি করেই।

আপনি খেয়াল করলে দেখবেন, আজকাল আমাদের বেশিরভাগ ক্রয়ের সিদ্ধান্ত গুলো অনলাইনেই শুরু হয়।

এখানেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর আবশ্যকতা টা অনুভুত হয় আর বিভিন্ন উপায়ে আপনার পন্য বা পরিসেবা বিক্রির ক্ষেত্রে সনাতন মার্কেটিং ব্যবস্থার চেয়ে এটি আপনাকে একধাপ এগিয়ে রাখবে।

আপনার জন্য আরও পোস্ট: 

প্রচলিত মার্কেটিং এবং ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য

অনেক সময় দেখা যায় , ছোট ব্যবসার ক্ষেত্রে কোন ধরণের মার্কেটিং করতে হবে তা নিয়ে বেশ জটিলতার স্মমুখীন হয়, কারণ তাদের বাজেট কেবল যেকোন এক বা অন্যটিতে প্রসারিত হবে, উভয়ক্ষেত্রে না।

যদিও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা খুব একটা সহ্জ কাজ নয়, কারন সেখানে অনেক প্রশ্নের উদয় হয়, উদাহরনস্বরুপ- মার্কেটিং এর কোন পদ্ধতিটি আমাকে সর্বাধিক পরিমাণ বিক্রয় এবং মুনাফা দেবে? আমার মার্কেটিং কাজ করছে কিনা আমি কীভাবে জানতে পারি? আমার মার্কেটিং এর সাথে আমার কাকে বিশ্বাস করা উচিত? আমি নিজে এটা করা উচিত? এই ব্যপারগুলো পরিষ্কার করার জন্য, সংবাদপত্র এবং বিভিন্ন ম্যাগাজিনে মুদ্রণ বিজ্ঞাপনের ব্যবহার দেখে এসেছি প্রচলিত মার্কেটিংয়ের একটি সহজ উদাহরণ হতে পারে।

এছাড়া মেইলবক্সে ফ্লায়ার, টিভি কিংবা রেডিওর বিজ্ঞাপন গুলো সনাতন মার্কেটিং ব্যবস্থার উৎকৃষ্ট উদাহরন।

অন্যদিকে, কোন ব্যবসায় যখন ওয়েবসাইট তৈরিতে বিনিয়োগ করে, ফেসবুক, টুইটার এবং ইউটিউবের মতো বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের ব্র্যান্ডিং ও নামের বিজ্ঞাপন দেয়, তখন এই জাতীয় মার্কেটিং কৌশলকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলে।

ধীরে ধীরে আমরা এর সম্পর্কে আর অনেক বিস্তারিতভাবে জানব।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের উপকারিতা

১. আপনি স্থানীয় গ্রাহকের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক গ্রাহক কে টার্গেট করতে পারবেন। এ্রর পাশাপাশি আপনি গ্রাহকের লিঙ্গ, অবস্থান, বয়স এবং আগ্রহ ইত্যাদি নির্দিষ্ট ডেমোগ্রাফির উপর ভিত্তি করে প্রচার ক্যাম্পেইন তৈ্রী করতে পারবেন, অর্থাৎ আপনার ব্যবসায়িক প্রচার অধিক কার্যকর হবে।

২. ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবস্থায় আপনার গ্রাহক কিভাবে পন্য গ্রহন করবে সেটি নিজেই নির্ধারন করতে পারবে । হয়ত কোন একজন ব্যক্তি যখন ব্লগ পোস্ট পড়তে পছন্দ করেন, অন্য একজন ইউটিউব ভিডিও দেখতে পছন্দ করেন, আর তাদের ব্যক্তিগত পছন্দের সেলস চ্যানেলেই হয়ে যায় “ডিজিটাল’’ মার্কেটিং । ঐতিহ্যবাহী মার্কেটিং ব্যবস্থায় গ্রাহকের ব্যক্তিগত পছন্দের অবকাশ থাকেনা। একজন গ্রাহক হিসেবে আপনার যে বিষয়ে খুবই কম আগ্রহ, আপনি নিশ্চয়ই সেই বিষয়ে মেইলবক্সে অযথা মেইল কিংবা যখন তখন অযাচিত ফোনকল পছন্দ করবেন না। এদিক থেকে সুবিধার দ্বার খুলে দেয় ডিজিটাল মার্কেটিং, কেননা এখানে ব্যক্তি তার নির্দিষ্ট পছন্দের উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞাপন সেবা নিতে পারে।

৩. ডিজিটাল মার্কেটিং আপনি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আপনার গ্রাহকের সাথে আন্তঃসম্পর্ক তৈ্রী করতে পারবেন। অন্যদিকে ঐতিহ্যবাহী মার্কেটিং ব্যবস্থায় এই আন্তঃক্রিয়ার সু্যোগ টা থাকে না।

৪. ডিজিটাল মার্কেটিং তুলনামুলক সাশ্রয়ী। যদিও অনলাইনে বিজ্ঞাপনের জন্য একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কে নির্দিষ্ট পরিমান বিনিয়োগ করতে হয়, তবে বাস্তবিক ক্ষেত্রে এই বিনিয়োগ বা ব্যয়ের পরিমান সনাতন মার্কেটিং ব্যবস্থার তুলনায় নিতান্ত কম।

৫. আপনি খুব সহজেই আপনার লেনদেনের ডাটা এবং ফলাফল গুলো রেকর্ড করে রাখতে পারবেন। গুগল অ্যানালিটিক্স এবং বেশিরভাগ সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানে্লের টুলস দ্বারা আপনি যে কোনও সময় আপনার প্রচার ক্যাম্পেইন পরীক্ষা বা পর্যালোচনা করতে পারবেন।

আপনি অনলাইনে আপনার ব্যবসায়ের জন্য কী কাজ করছে বা কী করছে না তা আপনি রিয়েল টাইমে দেখতে পারবেন এবং প্রত্যেকটি ফলাফল কে আরও উন্নত করতে নিজেকে খুব তাড়াতাড়ি মানিয়ে নিতে পারেন।

৬. লেভেল প্লেয়িং ফিলডঃ শক্তিশালী ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবস্থার মাধ্যমে আপনার ব্যবসায়, যেকোন আকার নির্বিশেষে যে কোনও প্রতিযোগীর সাথে প্রতিযোগিতা করতে পারবেন।

ঐতিহ্যবাহী মার্কেটিং ব্যবস্থায় একজন ছোট ব্যবসায়ী একই ফিল্ডের তুলনামুলক বড় ব্যবসায়ীর সাথে প্রতিযোগিতায় হিমশিম খায়, কিন্তু এদিক থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং এ ব্যবসার মাপের কোন প্রভাব থাকে না। অর্থাৎ আপনি একজন সদ্য নতুন ব্যবসায়ী হলেও খুব অল্প ব্যয়ে এবং সফলভাবেই আপনার মার্কেটিং চালিয়ে যেতে পারবেন।

৭. রিয়েল টাইম রেজাল্টঃ আপনার ব্যবসায়িক অবস্থা বা উন্নতি পর্যালোচনার জন্য আপনাকে অপেক্ষয়া করতে হবে না, যেমন ধরুন আপনাকে আপনার ব্যবসার বুস্ট রেজাল্ট জানার জন্য দিন দিন কে দিন একটি মেইল বা ফ্যাক্সের অপেক্ষা করতে হচ্ছে, নিঃসন্দেহে এটি সময়সাপেক্ষ এবং বিরক্তিকর। অপরদিকে ডিজিটাল মার্কেটিং এ আপনি শুধুমাত্র একটি বাটনের মাধ্যমে আপনার সাবস্ক্রাইবার, সর্বোচ্চ ট্রেডিং সময়, কনভার্শন রেট ইত্যাদি জানতে পারছেন।

৮. একটি সঠিক ডিজাইন সম্বলিত এবং কার্যকর লক্ষ্যযুক্ত ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যাম্পেইন প্রচলিত মার্কেটিং পদ্ধতির চেয়ে অনেক কম খরচে আপনার পন্য সঠিক গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে পারে। ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেলের মাধ্যমে ব্যবসায়িক সংস্থা পণ্য বা পরিষেবার মূল্য প্রদর্শন করে এবং গ্রাহকদের জন্য  সেগুলোর দাম খুব স্পষ্ট এবং স্বচ্ছ করে তোলে।

৯. ব্র্যান্ড ডেভলপমেন্টঃ ব্র্যান্ড ডেভলপমেন্ট বলতে মুলত এটি বুঝায়, একটা সঠিক পরিচর্যার এবং নিয়ন্ত্রিত ওয়েবসাইট খুব উল্লেখযোগ্য পরিমান মুল্য এবং  লিডের যোগান দিতে পারে। ইমেইল মার্কেটিং বা সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলের এর ক্ষেত্রেও ব্যপারটি প্রযোজ্য। অর্থাৎ আপনি খুব অল্প পরিশ্রমে কিছুটা টেকনিক্যালি একটি ব্র্যান্ড ডেভেলপ করতে পারছেন।

১০. ভাইরালঃ আ্পনার ওয়েবসাইট, ইমেইল এবং সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলে ব্যবহার করা “শেয়ার” বাটন কতটা দ্রুত আপনার ব্যবসাকে অন্যের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছে সেটি হয়বা আপনার চিন্তার বাহিরে! ধরুন প্রতি ফেইসবুক ব্যবহারকারীর গড়ে ১৯০ জন ফ্রেন্ড রয়েছে, এর মধ্যে গড়ে ১২% শতাংশ তাদের “লাইকড” পোস্টগুল দেখতে পায়, আক্ষরিক অর্থে আপনার ব্যবসার মেসেজটা ১৫ জন নতুন মানুষএর সামনে উপস্থিত হচ্ছে।

পুল এবং পুশ ডিজিটাল মার্কেটিং

ডিজিটাল মার্কেটিং প্রধানত দুই ধরনের হয়ে থাকে, যার মধ্যে একটি হল “পুল’’ ডিজিটাল মার্কেটিং। এর উদ্দেশ্য হল আপনার ব্যবসা পরিদর্শন করে বা কল টু অ্যাকশনের মাধ্যমে ভোক্তাদের আপনার কাছে আসতে উৎসাহিত করা। পুল ডিজিটাল মার্কেটিং এর কয়েকটি সাধারণ উদাহরণ হল ওয়েবসাইট এবং অন্যান্য ইন্টারনেট ভিত্তিক মাধ্যম। পুল মার্কেটিং প্রায়শই “ইনবাউন্ড মার্কেটিং”  বলা হয়।

দ্বিতীয় ধরণের ডিজিটাল মার্কেটিং হল “পুশ” ডিজিটাল মার্কেটিং । এটি মার্কেটিং এর তথ্য সরাসরি আপনার গ্রাহকদের দিকে ঠেলে দেয়। এর সাধারণ উদাহরণগুলোর মধ্যে এসএমএস, ইমেইল এবং আরএসএস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যা গ্রাহককে কাস্টমাইজড ম্যাসেজ দিয়ে লক্ষ্য করে। পুশ মার্কেটিংকে “আউটবাউন্ড” মার্কেটিংও বলা যেতে পারে।

ডিজিটাল মার্কেটিং কেন গুরুত্বপুর্ন

ডিজিটাল মার্কেটিং এমন সব উপায়ে টার্গেট গ্রাহকের কাছে পৌঁছায় এবং তাদের সাথে জড়িত হওয়ার ক্ষমতা বহন করে যেটি আগে কখনও সম্ভব হয়নি। একটি শক্তিশালী ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল সনাতন মার্কেটিং পদ্ধতির তুলনায় বিনিয়োগের বীপরিতে অনেক বেশি রিটার্ন বা মুনাফা সরবরাহ করতে পারে।

বর্তমানে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ নিয়মিত ইন্টারনেটে অ্যাক্সেস করে যাচ্ছে, রিসার্চ অনুযায়ী একজন ব্যক্তি প্রতিদিন গড়ে ৬ ঘন্টা অনলাইনে ব্যয় করে, আর এটিই যেকোন ব্র্যান্ড এবং ব্যবসায়ের জন্য সুবিশাল সুযোগ উপস্থাপন করে যাচ্ছে।

ইন্টারনেট-সংযুক্ত পোর্টেবল ডিভাইসের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হওয়ায় এই প্রবণতা হ্রাস পাবে না বরংচ বৃ্দ্ধি পেতেই থাকবে। সাম্প্রতিক রিপোর্ট দেখা যায় যে, বিশ্বের স্মার্টফোনের বিক্রয় হার ২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো ফিচার ফোনগুলির বিক্রয়কে ছাড়িয়ে গেছে এবং এটি চলেই যাচ্ছে, এছাড়া গ্লোবাল উইন্ডেক্সের ২০১৪-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে গ্রাহকরা প্রচলিত মিডিয়াগুলির তুলনায় ক্রমাগত অনলাইন মিডিয়াতে বেশি সময় ব্যয় করছেন।

বর্তমানে, ডিজিটাল মার্কেটিং একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে যা মার্কেটিং এর বিভিন্ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাস্টমাইজেশন এবং ব্যাপক ডিস্ট্রিবিউশন বা বিতরণকে একত্রিত করেছে।

ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশলের ক্রমাগত বিকাশ যেকোন ব্র্যান্ড এবং ব্যবসায়িক সংস্থার জন্য সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। এর মধ্যে কয়েকটি হলঃ

ব্র্যান্ডিংঃ ডিজিটাল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম মুলত এর সুযোগ, উপস্থিতি এবং নির্দিষ্ট আপডেটের কারণে ওয়েবে যেকোন ব্র্যান্ডের নিজস্ব ইমেজ তৈরির অভাবনীয় সুযোগ সামনে নিয়ে এসেছে।

সম্পূর্ণতাঃ মাত্র একটি লিঙ্কের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের সুবিধা সমগ্র গ্রাহকদের আরও বৃহত্তর এবং কাস্টমস উপায়ে নির্দিষ্ট ব্যবসায়িক সংস্থার পৌছানোর পথকে সগম করে দেয়।

ব্যবহারযোগ্যতাঃ ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবস্থা অনেক বেশি ব্যবহার বান্ধব, খুব সহজেই একজন গ্রাহক তার কাঙক্ষিত পন্যের কাছে পৌছে যেতে পারছে, এবং এটা বলা বাহুল্য এই ব্যবহার  বান্ধব বৈশিষ্ট্যটি ডিজিটাল মার্কেটিং এর গ্রহনযোগ্যতা কে আরও বাড়িয়ে তুলেছে

ইন্টারঅ্যাক্টিভিটিঃ কথপোকথনের সম্ভাবনা তৈরীর কারনে, বিক্রেতা এবং গ্রাহকের মধ্যে একটি ইতিবাচক সম্পর্ক তৈ্রী হচ্ছে, যেটিকে ইন্টারঅ্যাক্টিভিটি হিসেবে অভিহিত করা হয়

ভিজ্যুয়াল কমিউনিকেশনঃ ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে একজন মার্কেটার বিভিন্ন ইমেজ ও ভিডিও টুলস ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে । যা একজন গ্রাহককে মার্কেটারের কাছে পৌঁছাতে এবং তাদেরকে মার্কেটিং এ জড়িত করতে সহায়তা করে।

আর দেখুন: 

ডিজিটাল মার্কেটিং প্ল্যান

প্রত্যেকটি কাজের জন্য একটি সঠিক পরিকল্পনা অত্যন্ত জরুরী, তেমনি সফল ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য রয়েছে ডিজিটাল মার্কেটিং প্ল্যান বা পরিকল্পনা।

একটি ডিজিটাল মার্কেটিং প্ল্যান বা পরিকল্পনা একটি কৌশলগত নথি যা কোনও নির্দিষ্ট ব্যাবসায়িক  সংস্থার বর্তমান পরিস্থিতিকে কিছু নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করার পাশাপাশি বিভিন্ন কৌশল নির্ধারন এবং সেগুলি সম্পাদন করার উপায় সামনে নিয়ে আসে।

ডিজিটাল মার্কেটিং প্ল্যান পর্যবেক্ষণের জন্য দায়িত্ব, টাইম ফ্রেম এবং নিয়ন্ত্রণ টুলস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। একটি ডিজিটাল মার্কেটিং পরিকল্পনার লক্ষ্যগুলির মধ্যে ব্যবসায়িক সংস্থা এবং তাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ সম্পর্কিত আলোচনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

একইভাবে, এটি কীভাবে সংস্থার মার্কেটিং কৌশল পরিচালনা করতে হবে তার একটি রোডম্যাপ তৈরীতে সহায়তা করে, যাতে সংস্থানগুলি সম্পদ সঠিকভাবে এবং লাভবান উপায়ে ব্যয় হয়। ডিজিটাল মার্কেটিং প্ল্যান বা পরিকল্পনার ধাপগুলো নিম্নরূপ –

১। পরিস্থিতি বিশ্লেষণ

২। লক্ষ্য নির্ধারন

৩। কৌশল অবলম্বন

৪। অ্যাকশন এবং নিয়ন্ত্রণ

ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রকারভেদ

বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং ইনটারনেট ব্যবহারকারীর যোগাযোগের ধরণের উপর নির্ভর করে। বিভিন্ন ধরণের ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেলগুলির পরিচালনা ও ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে ডিজিটাল মার্কেটিং কে নিম্নের কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়, এগুলো মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন প্রকারভেদ, যা মূলত ব্যবসার ধরন কিংবা গ্রাহকের গতিবিধীর উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অবলম্বন করে থাকে। চলুন দেখে এসব মার্কেটিং সম্পর্কে-

কনটেন্ট মার্কেটিং

কন্টেন্ট মার্কেটিং অন্যতম সেরা ডিজিটাল মার্কেটিং, যদিও এটি মূলত একটি পরোক্ষ মার্কেটিং প্রক্রিয়া । সাধারণত, ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য, পরিষেবা বা ব্র্যান্ডিং প্রচারের মধ্যমে নিজেদের পন্যের বাজারজাত করে থাকে।

কিন্তু কন্টেন্ট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে, আপনাকে প্রয়োজনীয় এবং প্রাসঙ্গিক সামগ্রীর মাধ্যমে আপনার “Brand Value” প্রমোশনের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।

কন্টেন্ট মার্কেটিং ব্যবস্থায় বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্ট অন্তর্ভুক্ত যেমন ব্লগ, ভিডিও, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, ই-বুক, ব্রোশিওর, ইনফোগ্রাফিক্স, কেস স্টাডি, এবং টেমপ্লেট ইত্যাদি ইন্টারনেটে জনপ্রিয় কন্টেন্ট এর উদাহরণ।

এক কথায় কন্টেন্ট মার্কেটিং হল আপনার গ্রাহকের চাহিদা ও সামর্থ্যকে মুল্যায়ন করে তাদের পন্য ক্রয়ের পথ সুগম এবং সিদ্ধান্ত গ্রহনে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে কন্টেন্ট তৈ্রী করা।

অনেকে বলে থাকেন “কন্টেন্ট ইজ কিং”,  কন্টেন্ট মার্কেটিং গ্রাহকের আস্থা বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্র্যান্ড সচেতনতা তৈরি করে এবং পরিশেষে আশানরুপ ফলাফলের দিকে ধাবিত করে।

উচ্চ-মানের কন্টেন্ট প্রকাশের মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসায়িক ফিল্ডে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন। একটি ভালোমানের কন্টেন্ট শেয়ার এবং রেফারেন্সড হয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে, যেটি গ্রাহক এবং বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে আপনার খ্যাতি ছড়িয়ে দিবে।

কন্টেন্ট মার্কেটিং এর আরেকটি উপকারী দিক হল, এটি অন্য যে কোনও ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেলের সাথে ভাল সম্পর্ক তৈরী করে। এর জন্য ভালমানের কন্টেন্ট আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশলের ভিত্তি হওয়া উচিত।

উদাহরণস্বরূপ, আপনি ভালো আর্টিকেল লিখতে পারেন যা SEO কিওয়ার্ড কে সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারে, ধরুন ভাল Instagram এবং Facebook পোস্ট লিখতে পারেন যার সাথে সংযুক্ত লিংক খুব সহজেই গ্রাহক কে আপনার ওয়েবসাইটে ধাবিত করতে পারে। বুঝতেই পারছেন কন্টেন্ট মার্কেটিং কতটা প্রভাবশালী।

সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (SEO)

মার্কেটিং এ সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (SEO) সর্বশেষ দশকের বিপ্লব হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। সঙ্গত কারণে ৯০% এরও বেশি মানুষ  গুগল এবং বিংয়ের মতো সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে একটি সাধারণ অনলাইন অনুসন্ধানের মাধ্যমে তাদের ক্রয় অভিজ্ঞতার সুত্রপাত করে।

SEO এর মাধ্যমে , আপনি আপনার সর্বাধিক প্রাসঙ্গিক এবং সার্চ করা কীওয়ার্ডগুলির জন্য সার্চ রেজাল্ট পেইজে Rank করতে পারেন এবং এই প্রক্রিয়াটিতে প্রচুর সম্ভাব্য গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে পারবেন।

সর্বোপরি আপনি জানলে অবাক হবেন, ইন্টারনেটে প্রতি সেকেন্ডে ৬৩০০০ এর বেশি অনুসন্ধান করা হয়, আর এখানেই উন্মোচিত হয় সম্ভাবনার দুয়ার।

একটি কার্যকর SEO কৌশল কীডওয়ার্ড রিসার্চ, কন্টেন্ট তৈরি, ব্যাকলিংক বিল্ডিং, ওয়েবসাইট অপ্টিমাইজেশন সহ বেশ কয়েকটি আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে তৈরি করা হয়।

এমনকি স্থানীয় এসইও নামে একটি নির্দিষ্ট উপসেট রয়েছে, যা তাদের স্থানীয় গ্রাহকদের কাছে ক্ষুদ্র ব্যবসার মার্কেটিং এ মনোনিবেশ করতে সহায়তা করে।

এসইও জনপ্রিয় হয়ে উঠার অন্যতম কারণ হল এটি ইনবাউন্ড মার্কেটিংয়ের অত্যন্ত কার্যকর একটি রুপ। এর অর্থ গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোর পরিবর্তে আপনি সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে গ্রাহকদের আপনার ওয়েবসাইটে আনতে মনোনিবেশ করছেন  এবং দেখা যায় এই গ্রাহকরা প্রায়শই ইতিমধ্যে কোনও কেনাকাটা করার জন্য অনুসন্ধান করছেন।

SEO আপনাকে আপনার ওয়েবসাইট এবং অনলাইন উপস্থিতি অনুকুলে আনতে সহায়তা করে ,যার মাধ্যমে আপনি উচ্চ কনভার্শন রেটের সম্ভাবনার পাশাপাশি উচ্চমানের ওয়েবসাইট ট্র্যাফিক আনতে পারবেন।

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM)

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বা SEM প্রায়শই SEO এর সাথে বিভ্রান্ত হয় কারণ উভয়েরই নাম অনেকটা একই রকম। উভয়ই গুগল বা বিংয়ের মতো সার্চ ইঞ্জিনগুলো নিয়ে কাজ করে। তবে এই দুটি ধরণের ডিজিটাল মার্কেটিং এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে।

SEO আপনাকে আপনার টার্গেট কীওয়ার্ডগুলির জন্য সয়ংক্রিয়ভাবে Rank করতে সহায়তা করে, অন্যদিকে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বা SEM অর্থ প্রদানের মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিনগুলো থেকে আপনার ওয়েবসাইট ট্র্যাফিক বাড়ানোতে সহায়তা করে।  সবথেকে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর মধ্যে “বিং এডস” এবং “গুগল এডওয়ার্ডস” অন্যতম।

SEM আপনাকে যেকোন অনুসন্ধানের ফলাফলের পৃষ্ঠায় আপনার বিজ্ঞাপনগুলি রাখতে সহায়তা করে। এই বিজ্ঞাপনগুলো গুগলে অনুসন্ধান করা স্বয়ংক্রিয় ফলাফলের মতোই দেখায়, শুধুমাত্র এতে একটি বিজ্ঞাপন “ব্যানার” যুক্ত থাকে।

যেকোন সার্চ রেজাল্ট পৃষ্ঠায় এই বিজ্ঞয়াপঙ্গুলো সর্বপ্রথমে দেখায়, যার দরুন আপনার ওয়েবসাইট অভাবনীয় ভিজিবিলিটি এবং ট্র্যাফিক লাভ করে।

ডিজিটাল মার্কেটার রা SEM পছন্দ করে, কারণ কীওয়ার্ড এবং অনুসন্ধানকারীর অবস্থানের ভিত্তিতে সঠিক বিজ্ঞাপন তৈরি করা টা এখানে অনেক সহজ।

এর অর্থ আপনি আপনার বিজ্ঞাপনগুলি কোনও নির্দিষ্ট জনসংখ্যার ভিত্তিতে বা সংখ্যায় সংযুক্ত করতে পারেন। এমনকি আপনি এটি আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন এবং প্রতিযোগী কীওয়ার্ডগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারেন, প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায় থেকে কিছু ওয়েবসাইট ট্র্যাফিক “চুরি” করা আপনার পক্ষে সম্ভব  হয়ে দাঁড়াবে। ট্র্যাফিক “চুরি” শুনে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই, এটি মুলত সার্চ ইঞ্জিন এলগরিদমের এক রকম ফাকফোকড়।

একটা জিনিস অবশ্যই মনে রাখবেন সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM) কিন্তু কোনমতেই সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (SEO) এর বিকল্প নয়। অধিক ট্র্যাফিক লাভ করতে হলে আপনাকে এই দুটি কৌশলই একত্রে ব্যভার করতে হবে।

ইমেইল মার্কেটিং

ইমেইল মার্কেটিং হল ডিজিটাল মার্কেটিং এর এমন একটি রুপ যেখানে কোন পণ্য বা পরিষেবা সম্পর্কে তথ্য / ম্যাসেজ ইমেইলের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে প্রেরণ করা হয়।

ইমেইল মার্কেটিং একটি অন্যতম প্রাচীন এবং সহজ ধরণের ডিজিটাল মার্কেটিং প্রক্রিয়া। তবে এখন অব্দি এটি অত্যন্ত আধুনিক এবং উৎপাদনশীল মার্কেটিং হিসেবে স্বীকৃ্ত।

ইমেইল মার্কেটিং ব্যবস্থায় মার্কেটার রা  তাদের সম্ভাব্য এবং বিদ্যমান গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক বিকাশের জন্য ইমেইল ব্যবহার করে, যেটি মূলত তাদের নেতৃত্ব তৈরি করতে এবং তাদের কনভার্শন নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।

একটা সময় ইমেইল মার্কেটিং কিছুটা জটিলতার সম্মুখিন হলেও বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের টুলস এর আবির্ভাবের দরুন ইমেইল মার্কেটিং সবথেকে শজ এবং প্রভাবশালী ডিজিটাল মার্কেটিং পদ্ধতি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

কেননা এসবের অধিকাংশ টুলস’ই ফ্রী এবং আপনি খুব অল্প খরচেই নির্দিষ্ট ল্যান্ডিং পেইজ এবং সাবস্ক্রাইবশন ফরমের মাধ্যমে ট্র্যাফিক  জেনারেট করতে পারবেন।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (SMM)

নামটি থেকে বোঝা যায়, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (SMM) মুলত আপনার ব্যবসায়ের বাজারজাত করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে আপনার পন্যের শক্তি বা বিজ্ঞাপন ব্যবহার করা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো গত দশক থেকে ডিজিটাল বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করেছে, সারা বিশ্বের কোটি কোটি ব্যবহারকারীকে আকর্ষণ করেছে এবং ধাবিত করছে নিজেদের দিকে।  আর এটিই যেকোন ওয়েবসাইটে অভাবনীয় পরিমান ট্র্যাফিক  আনার জন্য এক উৎস হিসেবে কাজ করেছে।

তিনটি সর্বাধিক জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মে দৈনিক ব্যবহারকারীর সংখ্যা দেখলে আপনি নিজেই বিষয়টি অনুধাবন করতে পারবেন-

ফেসবুক – দৈনিক 1.66 বিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারী

টুইটার – মাসিক 330 মিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারী

ইনস্টাগ্রাম – দৈনিক 500 মিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারী

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (SMM)  এ সফলতার মুল চাবিকাঠি হল শেয়ার করা যায় এমন কনটেন্ট তৈরী করা ।

প্রতিটি সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্কে স্পনসর করা পোস্ট এবং পেইড বিজ্ঞাপন রয়েছে, সেক্ষেত্রে আপনাকে খুব বেশি ব্যয় করতে হবে না।

পে পার ক্লিক (PPC)

পে পার ক্লিক, PPC হিসাবেও পরিচিত, এটি ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্যতম সাধারণ একটি ধরণ।

এটি মুলত একটি নির্দিষ্ট বিজ্ঞাপনের মডেলের উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়, যেখানে আপনি কেবলমাত্র আপনার বিজ্ঞাপনে যে ক্লিকগুলি পেয়েছেন তার জন্য অর্থ প্রদান করেন।

PPC সাধারনত সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর আওতাধিন থাকে, যখন এটি SERP এর বিজ্ঞয়াপনে প্রদত্ত হয়, তবে কোন কোন হ্মেত্রে পিপিসি অ্যাফ্লিয়েট মার্কেটিং পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে।

এক্ষেত্রে ব্যয়ের পরিমান নিতান্তই কম। যদি কোনও গ্রাহক আপনার বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে, আপনি একটি ন্যূনতম ব্যয় প্রদান করবেন। যদি কেউ এটিতে ক্লিক না করে তবে আপনি কিছুই দিবেন না।

এটি সীমিত বাজেটে থাকা ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য এটি আকর্ষণীয় করে তোলে। তবে, মাস শেষে আপনাকে কী পরিমাণ শেল আউট করতে হবে সেটা অনুমান করা কঠিন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং

এফিলিয়েট মার্কেটিং  একটি অত্যন্ত চালাক ধরণের ডিজিটাল মার্কেটিং ।

এফিলিয়েট মার্কেটিং  ব্যবস্থায় মূলত, একজন অনুমোদিত এফিলিয়েট মার্কেটার ভিজিটর দের কাছে অন্য মানুষের পণ্য বিক্রি করে।

অনুমোদিত ব্যক্তিটির সাইট থেকে লিঙ্কড হওয়ার পরে যদি কেউ আপনার কাছ থেকে কোন কিছু ক্রয় করে, তবে অনুমোদিত ব্যক্তির রেফারেন্সের জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ বা কমিশন প্রদান করতে হবে।

এই চুক্তি মুলত পারস্পরিক সুবিধার পথ করে দেয়, যেখানে উভয়ই লাভবান হয়।

এফিলিয়েট মার্কেটার দের সাথে কাজ করা আপনার বযবসায়িক বিস্তার কে যথেষ্ট পরিমাণে প্রসারিত করতে সহায়তা করতে পারে।

ভিডিও মার্কেটিং

যদি আপনি ভিডিও মার্কেটিং কে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে জানেন, তবে “ভিডিও” একটি অত্যন্ত শক্তিশালী অনলাইন মার্কেটিং টুল হিসেবে গন্য হবে।

বর্তমানে অর্ধেকেরও বেশি গ্রাহকরা তাদের পছন্দের ব্র্যান্ডগুলোর  ভিডিও কন্টেন্ট দেখতে,  এই বিষয়টি বিবেচনা করলে দেখা যায়, আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশলে ভিডিও অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করার কোন জায়গা নেই।

ভিডিও মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসায়ের প্রচার করতে পারবেন, আপনার ওয়েবসাইটে ট্র্যাফিক বাড়িয়ে দিতে পারবেন, গ্রাহকদের শিক্ষিত করতে পারবেন, তাদের সংশ্লিষ্টতা কে আরও উৎসাহিত করতে পারবেন এবং এমনকি হতে পারবেন ভাইরালও।

বিভিন্ন ধরণের ডিজিটাল মার্কেটিং ভিডিও রয়েছে যা আপনি তৈরি করতে পারেন কম খরচেই, যেমন ডেমো ভিডিও, এডুকেশনাল ভিডিও, ইভেন্ট ভিডিও ইত্যাদি।

আর দেখতে পারেন: 

Digital Marketing Bangladesh (ডিজিটাল মার্কেটিং বাংলাদেশ)

সমগ্র বিশ্ব যখন ডিজিটাল মার্কেটিং এ ধাবিত হয়েছে তখন পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। বর্তমানে বাংলাদেশে রয়েছে বিভিন্ন ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি, যারা অত্যন্ত সততা ও সফলতার সাথে সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম নিচে উল্ল্যেখ করা হলঃ

-Brandviser, Dhaka

-MonsterClaw LLC, Dhaka

-Essence Axis, Dhaka

-Fox Digital Solution, Sylhet

-freelance Topic, Jashore

-Bizcope, Dhaka

-Marketex, Chittagong

-Ninja Creative Marketing, Savar Dhaka

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার

ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য সফলতার দ্বার উন্মোচন করলেও এর ব্যপ্তি এখানেই সীমাবদ্ধ নয়। আমি উপরেই বিভিন্ন ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সির কথা উল্লেখ করেছি যেখানে রয়েছেন অনেক দক্ষ ডিজিটাল মার্কেটার যারা ডিজিটাল মার্কেটিং কে বেছে নিয়েছে ক্যারিয়ার হিসেবে।

বর্তমানে বিশ্বের লাখ লাখ যুবক ডিজিটাল মার্কেটিং এ  ক্যারিয়ার গড়ে কিংবা ফ্রীল্যান্সিং করে নিজদের স্বাবলম্বী করে তুলেছে।  চাইলে আপনিও হতে পারেন তাদের একজন।

ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে শিখব?

ডিজিটাল মার্কেটিং দিন দিন যত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ততই এর প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েই চলছে। বাংলাদেশে বিভিন্ন ফ্রীল্যান্সিং প্রশিক্ষন সেন্টারে খুব কম খরচে আপনি শিখে নিতে পারেন কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হয়।

আবার কেউ কেউ বেছে নেয় ডিজিটাল মার্কেটিং বই কে। এছাড়াও আজকাল ইউটিউবে রয়েছে অসংখ্য ডিজিটাল মার্কেটিং টিউটোরিয়াল, আপনি চাইলে সেগুলো অনুসরন করতে পারেন।

আর আমার এই লিখার কথা তো বাদই দিলাম, আমি চেষ্টা করেছি ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়টি যতটা সম্ভব সহজে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার।

শেষকথা,

২০২১-এ, যদি আপনার কোনও ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রোফাইল এবং একটি শক্তিশালী অনলাইন উপস্থিতি না থাকে, আপনি বড় ব্যবসায় হেরে যাচ্ছেন। প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করে সফলতার শেখরে আরোহন করতে এখনি লেগে পড়ুন।

আপনার সফলতাই আমাদের কাম্য।  আমার লিখা থেকে যদি আপনারা বিন্দু পরিমাণও কিছু শিখতে পারেন তবে আমার লিখা স্বার্থক হবে, লিখাটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন আর আপনার যেকোন প্রশ্ন বা মতামত আপনি কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top