ওয়েবসাইট তৈরির খরচ কত? এবং কি কি লাগে

ওয়েবসাইট তৈরির খরচ কত:  বর্তমানে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অধিকাংশ সমস্যার সমাধান দিচ্ছে গুগল।গুগোল থেকে যেমন মানুষ তথ্য পেয়ে উপকৃত হচ্ছে কেউ কেউ তথ্য দিয়ে গুগোল থেকে আয় করছে।

ওয়েবসাইট তৈরি করে আপনি যে বিষয়ে অভিজ্ঞ সেই বিষয়ে মানুষকে তথ্য দিয়ে আপনিও আয় করতে পারেন গুগোল থেকে ভালো অংকের টাকা।

আমরা আমাদের আগের একটি পোস্টে ফ্রী ওয়েবসাইট কিভাবে খুলতে হবে তা নিয়ে আলোচনা করেছি।

কিন্তু ফ্রী ওয়েবসাইটের কিছুর সীমাবদ্ধতার কারনে কেউ কেউ পেইড ওয়েবসাইট তৈরি করতে চায় তাই আজকে আলোচনা করব ওয়েবসাইট তৈরির খরচ সম্পর্কে। কিন্তু তার আগে জেনে আসি কেন ওয়েবসাইট তৈরি করবেন।

ওয়েবসাইট তৈরি করার খরচ কত
ওয়েবসাইট তৈরি করার খরচ কত?

কেন ওয়েবসাইট তৈরি করবেন 

একটা বার ভেবে দেখুনতো গুগোল কি নিজে আমাদের সব সমস্যার সমাধান দিচ্ছে? উত্তর হলো না তাহলে কিভাবে আমরা পাচ্ছি আমাদের সমস্যার সমাধান? গুগোলে রয়েছে লক্ষ লক্ষ ওয়েবসাইট এসব ওয়েবসাইট গুলোর মধ্যে রয়েছে হাজারো তথ্য হাজারো সমস্যার সমাধান।

গুগোল মূলত ঐ সকল ওয়েবসাইট গুলো থেকে বাছাই করে যেসব ওয়েবসাইটে আমাদের সমস্যার উপযুক্ত সমাধান রয়েছে মনে করে সেগুলোই আমাদের দেখায়।

এই সমস্যা গুলোর সমাধান দেওয়ার জন্য ওয়েবসাইট এডমিনকে গুগোল একটি অর্থ দিয়ে থাকে তাদের এড দেখা বা ক্লিক এর উপরে।

বর্তমানে এই আধুনিক যুগে অধিকাংশ মানুষই করপোরেট জব এর প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে এবং তারা ধীরে ধীরে অনলাইন মুখী হয়ে যাচ্ছে। এমনকি তাদের পেশাটাকেও তারা অনলাইনে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। আর অনলাইনে অন্যতম জনপ্রিয় একটি পেশা হলো এভাবে ওয়েবসাইট তৈরি করে মানুষকে উপকার করে অর্থ আয় করা। এটিকে বলা হয় ব্লগিং

এই ব্লগিং করে আপনি গড়তে পারেন আপনার সুন্দর ক্যারিয়ার। এটিকে আপনি ব্যবসার সাথেও তুলনা করতে পারেন। ব্যবসায় যেমন কিছু টাকা মূলধন রেখে শুরু করতে হয় তেমনি এখানে কিছু টাকা ব্যয় করে আপনাকে ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে।

অবশ্যই পড়ুন: 



ওয়েবসাইট তৈরির খরচ 

একটি ওয়েবসাইট মূলত দুইটি বিষয়কে কেন্দ্র করে হয় বিষয় গুলো হলোঃ-

  • ডোমেইন 
  • হোস্টিং 

ডোমেইন কি?

ডোমেইন হলো আপনার ওয়েবসাইটের নাম। অর্থাৎ গুগলোকে যদি আপনি একটি গ্রাম চিন্তা করেন তাহলে প্রতিটি ওয়েবসাইট হবে গ্রামের এক একটি ঘর। প্রতিটি ঘরের একটি নাম রয়েছে যেমন আপনি যদি facebook.com এই নাম গুগোল কে বলেন তাহলে গুগোল আপনাকে Facebook এ নিয়ে যাবেন আবার Wikipedia.com এই নাম বলেন গুগোলকে আপনাকে গুগোল Wikipedia নামক ওয়েবসাইটে নিয়ে যাবে।

এখানে facebook.com এবং Wikipedia.com হলো facebook এবং Wikipedia’র ডোমেইন। আপনার ওয়েবসাইটের নাম অনুযায়ীই যে আপনাকে ডোমেইন নিতে হবে তা না। আপনি যেকোন ডোমেইনই নিতে পারেন।

হোস্টিং কি?

হোস্টিং মূলত স্টোরেজ হিসেবে কাজ করে। আপনার ওয়েবসাইটে অনেক ধরনের পোস্ট, ইমেজ, ভিডিও ইত্যাদি থাকবে এসব কিছুর জন্য আপনার জায়গা দরকার হবে। এই জায়গাটি হলো হোস্টিং।

এখন জেনে আসি ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনতে কত খরচ হবে এবং কোথা থেকে কিনবেন।

ডোমেইন কেনার খরচ 

ডোমেইনের দাম নির্ভর করে আপনার সিলেক্ট করা ডোমেইনের এক্সটেনশন উপর। যেমন .com ডোমেইনের নাম ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা আবার . xyz ডোমেইনের নাম ৭০-১৫০টাকা। সকল ডোমেইনের দামের একটি সম্ভাব্য তালিকা নিচে দেওয়া হলো।

কোথা থেকে ডোমেইন কিনবেন?

ডোমেইন কেনার বেস্ট প্ল্যাটফর্ম হলো namecheap। এটি একটি ইন্টারনেশনাল সাইট যেখান থেকে ডোমেইন কিনতে আপনার অবশ্যই ডুয়েল কারেন্সি সাপোর্ট একটি কার্ড থাকতে হবে কারন এসব ওয়েবসাইটে ডলারে পে করতে হয়। যদি আপনার এমন কোন কার্ড না থাকে তাহলে বাংলাদেশী কোন সাইট থেকেও কিনতে পারেন।

আর দেখুন: 

হোস্টিং কেনার খরচ

হোস্টিং কেনার খরচ নির্ভর করবে আপনি কত জিবি হোস্টিং কিনবেন তার উপর। ২ জিবি, ৫জিবি, ১০ জিবি নানা ধরনের হোস্টিং রয়েছে। বিগিনারদের জন্য বেস্ট হলো ৫ জিবি হোস্টিং যেটি বছরে ১০০০-১২০০ টাকা খরচ হবে।

আপনার ভিজিটর বাড়ার সাথে সাথে আপনি ইচ্ছা করলে আপনার হোস্টিং প্যাকেজ টি আপগ্রেট করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনার হোস্টিং এর জায়গা বাড়াতে পারবেন, যখন ইচ্ছা তখন।

কোথা থেকে হোস্টিং কিনবেন

হোস্টিং কেনার জন্যও বিখ্যাত হলো namechep এবং hostinger। এসব জায়গা থেকেরকিনতে হলে ডুয়েল কারেন্সি সাপোর্ট একটি কার্ড লাগবে। যদি বাংলাদেশ থেকে নিতে চান তাহলেও অনেক ওয়েবসাইট আছে সেখান থেকে কিনতে পারেন।

এগুলো হলো একটি ওয়েবসাইট তৈরির প্রাথমিক খরচ।

চলুন জেনে নিই এবার ওয়েবসাইট তৈরির আরো কিছু খরচ সম্পর্কে 

থিম

থিমস সম্পর্কে সবাই জানি আমরা। একটি থিম একটি ওয়েবসাইটকে দৃষ্টিনন্দন এবং আর্কষণীয় করে তোলে।

থিম প্রধানত দুই প্রকারের ফ্রী থিম, প্রিমিয়াম থিম। আমরা অনেকেই ফ্রী থিম নিয়ে কাজ করি কিন্তু ফ্রী থিমের কিছু ফিচার কম থাকায় অনেকেই পেইড থিম ব্যবহার করে থাকে। পেইড থিম কিনতে কমপক্ষে ৪-৬ হাজার টাকা লাগে এটি অনেক সময় থিমের মানের উপর নির্ভর করে।

প্লাগইন 

প্লাগইন হলো সফটওয়ার। আমরা যারা ওয়ার্ডপ্রেসে কাজ করি বা অন্য কোন CMS এ কাজ করি তাদের সকলেই জানি অনেক বড় বড় কাজ করতে অনেক সময় কোডিং করার প্রয়োজন আছে।

কিন্তু প্লাগইন এসব কাজকে করে দিয়েছে সহজ। এখন যে কেউ কোন প্লাগইন ইনস্টল করে সহজেই সিম্পল ক্লিকের মাধ্যমে করতে পারেন। অনেক সময় অনেক প্লাগিন কিনে নিতে হয়। এসব প্লাগইনের দাম তাদের কাজের উপর নির্ভর করে।

কন্টেন্ট 

কন্টেন্ট ছাড়া কোন ওয়েবসাইট হয় না। একটি ওয়েবসাইটের মান নির্ণয় করা যায় ঐ ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট দেখে। অনেকেই নিজ থেকে কন্টেন্ট লিখে আবার অনেকেই রাইটার হায়ার করে।

আসলে কন্টেন্ট এমন এমন একটি সেনসিটিভ বিষয় যেটা সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হয়। সাধারন টাইপিং করে কিছু লিখে দেওয়ায় কন্টেন্ট নয়। তাই অনেকেই কন্টেন্ট রাইটার হারায় করে বিভিন্ন ফ্রিলেন্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে।

রাইটার পার ১০০০ ওয়ার্ডস বা পার আওয়ার এর উপর ভিত্তি করে হায়ার করা যায়। এক্ষেত্রে একজন রাইটারকে প্রতি ১০০০ ওয়ার্ডসের জন্য কমপক্ষে ৫-১০ ডলার দিতে হয়।

ডেভেলপার 

অনেক সময় আমরা অনেক ই-কমার্স ওয়েবসাইট বা কোন অফিশিয়াল ওয়েবসাইট তৈরি করি। এসব ওয়েবসাইট তৈরির ক্ষেত্রে অনেক কোডিংয়ের বিষয় আছে যা করার জন্য কোডিংয়ে এক্সপার্ট এমন একজনকে দরকার। এমন অবস্থায় আপনাকে অবশ্যই একজন ডেভেলপার হায়ার করতে হবে। তার জন্য কমপক্ষে ৩০-৪০ হাজার টাকার মতো খরচ হবে।

আপনার জন্য আর: 

SSL সার্টিফিকেট 

SSL সার্টিফিকেট প্রায় সকল হোস্টিং কোম্পানি ফ্রীতে দিয়ে থাকে যদি আপনার হোস্টিং প্রোভাইডার ফ্রীতে না দেয় তাহলে ৪০০-৫০০ টাকা দিয়ে কিনে নিতে হবে।এটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর জন্য বেশী দরকার। 

কিছু কথা 

অনেকেই আছেন যারা তাদের নিজেদের পার্সোনাল ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করতে চায়। এক্ষেত্রে তাদের শুধু মাত্র ১ টি ডোমেইন এবং ১ টি হোস্টিং নিলেই হবে অর্থাৎ প্রিমিয়াম থিম, প্লাগইন, রাইটার এগুলো তাদের জন্য এতটা গুরুত্বপূর্ণ নয় কিন্তু তাদের অবশ্যই ওয়েবসাইট এসইও’র বিষয়ে একটু ধারণা রাখতে হবে না হয় একজন এসইও এক্সপার্টকে হায়ার করার প্রয়োজন হতে পারে।

আর যদি আপনি একটি অফিশিয়াল বা ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান যেখানে অনেক ধরণের ফিটার থাকবে সেক্ষেত্রে থিম, প্লাগইন এবং ডেভেলপার হায়র করা দরকার। 

সর্বশেষ 

আমরা আপনাকে একটি ওয়েবসাইট তৈরির খরচ সম্পর্কে সকল ধারণা দিয়েছি এই পোস্টে। আশা করি এই বিষয় আপনার কোন প্রশ্ন নেই আর। যদি থাকে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন। এতক্ষণ আমাদের এই পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top