মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করার ১৭টি সহজ উপায়

অনলাইন ইনকাম মোবাইল দিয়ে ২০২৩: অনেকেই অনলাইনে ইনকামের প্রতি যথেষ্ট আগ্রহী, কিন্তু অধিকাংশেরই কমন প্রশ্ন যে, আমারতো কম্পিউটার নেই তাহলে আমি কিভাবে অনলাইনে আয় করব? মোবাইল দিয়ে কিভাবে টাকা আয় করব? মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম কি সম্ভব? যদি সম্ভব হয় তাহলে  কিভাবে শুরু করব?  আপনাদের এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে এই লেখা।

আপনার যদি কম্পিউটার না থাকে তবুও আপনি অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন কিন্তু সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার একটি স্মার্টফোন থাকতে হবে। সেই সাথে আপনার কাজ যেহেতু হবে অনলাইনে  তাই আপনার ভালো মানের ইন্টারনেট কানেকশন  থাকা  জরুরী। 

মোবাইল দিয়ে অনলাইন ইনকাম
মোবাইল দিয়ে অনলাইন ইনকাম

অনলাইন ইনকাম মোবাইল দিয়ে ২০২৩ (Online Income With Mobile)

চাইলে আপনার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে প্রতি মাসে 15000 থেকে 20000 টাকা বা তার চেয়ে বেশি ও  ইনকাম করতে পারেন। এটা নির্ভর করে আপনার পরিশ্রম আর ডেডিকেশন এর উপর। আপনি পরিশ্রম বেশী করলে আপনার ইনকাম এর পরিমাণ বাড়বে।

মোবাইল ফোনে ইনকামের বেশ কিছু উপায় আছে।  এর মধ্যে সবচেয়ে  জনপ্রিয় আর সহজ উপায়গুলো আপনাদের সাথে আলোচনা করব।

১. ইউটিউব

 পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইউটিউবে প্রত্যেক মাসে লগইন সংখ্যা 2 বিলিয়ন। এই পরিসংখ্যান থেকে ইউটিউব এর মার্কেট সাইজ খুব ভালভাবেই অনুমান করা যায়। ইউটিউব বর্তমানে টিভির বিকল্প হিসেবে দাঁড়িয়েছে

আপনি মোবাইল ফোনে  ভিডিও করে, ইউটিউবে আপলোড করার মাধ্যমে মনিটাইজেশন মেথড ব্যবহার করে  ইনকাম করতে  পারবেন। ভিডিও এডিট করার দরকার হলে খুব সহজেই মোবাইল ফোনে ইউটিউব স্টুডিও  ব্যবহার করে এডিট করে নিতে পারবেন। কনটেন্ট কোয়ালিটি ভালো থাকলে ইউটিউব চ্যানেল আপনার ক্যারিয়ার বিকল্প হিসেবে কাজ  করবে।

আপনি হয়তো ভাবছেন যে ইউটিউবে আপলোড করার জন্য কোন ধরনের কনটেন্ট তৈরি করবেন।  এই প্রশ্নের সবচেয়ে ভালো উত্তর হল আপনি যে বিষয়ে আগ্রহী বা  যে ধরনের কাজ করতে ভালো লাগে  সেই ধরনের ভিডিও তৈরি করুন। যেমন, গেইমের লাইভ স্ট্রিমিং,  ট্রাভেল   ব্লগ, ফুড ব্লগ, রান্নাবান্না, আকা আকি, শিক্ষামূলক ভিডিও তৈরি ইত্যাদি।

এবার ইউটিউব এর ইনকাম মডেল  এ  আসা যাক।  ইউটিউব থেকে বেশ কয়েকভাবে  ইনকাম করা যায়। যেমন: 

  1. গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে
  2. স্পন্সর অ্যাড ব্যবহার করে 
  3. এফিলিয়েট লিংক প্রমোট করে ইত্যাদি

ইউটিউব থেকে আপনার ভিডিও কনটেন্ট এর মাধ্যমে ইনকাম করতে হলে, আপনাকে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। শর্তগুলো হলো:

১। চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার গত এক বছরের ভিতরে অবশ্যই 1000 হতে হবে এবং ৪,০০০ ঘন্টা আপনার ভিডিও ইউটিউবে দেখতে হবে।

২। আপনার ইউটিউব ভিডিও অবশ্যই অ্যাডভার্টাইজমেন্ট ফ্রেন্ডলি হতে হবে। অর্থাৎ ইউটিউবের মনিটাইজেশন এর নিয়ম অনুযায়ী।

২. ওয়েবসাইট/ব্লগিং দ্বারা অনলাইন ইনকাম মোবাইল দিয়ে

মোবাইল ব্যবহার করে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে ইনকাম করা সম্ভব। তাই তবে মোবাইল ব্যবহার করে একটা ওয়েবসাইট কে ম্যানেজ করা একটু কঠিন, কিন্তু সম্ভব। আপনি মোবাইল দিয়ে ওয়েবসাইট বানিয়ে সেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

একটা ক্যাটাগরী/নিশ নির্বাচন করে ওয়েবসাইট তৈরি করে, এই ওয়েবসাইটকে গুগলে রেংক করে বা বিভিন্নভাবে ভিজিটর এনে ইনকাম করতে পারবেন।

আপনি সাধারনত ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্স, অ্যাফিলিয়েটিং, স্পনসর্ড লিংক ব্যবহার করে আয় মোবাইল দিয়ে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট থেকে আয় করতে পারবেন।

৩. ফেসবুক পেইজ

ফেসবুক বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর একটি।  ফেসবুক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি বিনোদন এবং   তথ্য শেয়ারের মাধ্যমে  হিসেবেও ভূমিকা রাখছে।

আপনার আশেপাশে সবাই যখন ফেসবুকে সময় নষ্ট করছে, আপনি ফেসবুক পেজ থেকে অনলাইন ইনকাম মোবাইল দিয়ে করতে পারবেন। ফেসবুক পেজ থেকে ইনকাম এর জন্য অবশ্যই আপনার পেইজের  ফলোয়ারদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায় এমন কনটেন্ট আপলোড করতে হবে।

আর ফেসবুক পেজ মনিটাইজেশন পেতে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। যেমন:

  • ফেসবুক পেজের ফলোয়ার সংখ্যা ১০,০০০ হাজারের বেশি হতে হবে।
  • পেইজটির ভিডিও গুলোতে গত ৬০ দিনে কমপক্ষে ৩০,০০০ ভিউ থাকতে হবে। ভিডিওগুলোর দৈর্ঘ্য তিন মিনিটের বেশি হতে হবে এবং কমপক্ষে ১ মিনিট ধরে দেখতে হবে।

ফেসবুক থেকে ইনকাম এর বেশ কয়েকটি মডেল  রয়েছে। যেমন :

  1.  In-Stream Ads
  2. Fan Subscription
  3.  Branded Content
  4.  Subscription Groups

 দিন দিন ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে, এতে করে আপনার ইনকাম এর সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন ফেসবুক থেকে ইনকাম ইউটিউব এর ইনকাম এর তুলনায় কিছুটা কম।  তবে  আমার ধারণা কিছুদিনের মধ্যে পার্থক্য কমে যাবে।

ফেসবুক থেকে ইনকাম এর জন্য ইউটিউব এর মত বেশকিছু স্ট্যান্ডার্ড কন্ডিশন মেইনটেইন করতে হবে।

এছাড়াও,  মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ফেসবুক পেজকে ব্যবসার  মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। আপনি একটি  ই-কমার্স সাইটের পরিবর্তে  ফেসবুক পেজ ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে ঠিকঠাক ফেসবুক মার্কেটিং প্রয়োজন। আপনার ফেসবুক পেজকে চালানোর জন্য কোন কম্পিউটারের দরকার হবে না। মোবাইল ফোনে শুধুমাত্র পেজ ম্যানেজার অ্যাপটি ইন্সটল করে নিলেই হবে।

৪. ফ্রিল্যান্সিং করে অনলাইন ইনকাম মোবাইল দিয়ে

আপনি কি অবাক হয়েছেন? অবাক হওয়ারই কথা। কেননা অনেকেই মনে করেন, যে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করা সম্ভব নয় কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং করা মোবাইলও সম্ভব।

ফ্রিল্যান্সিং করে অনলাইনে ইনকাম একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। এই প্ল্যাটফর্মে মোবাইল ব্যবহার করেও অনলাইন  থেকে ইনকাম করা সম্ভব। যদিও মোবাইলে বেশিরভাগই কাজ করা একটু কঠিন, কম্পিউটারের তুলনায়।

মোবাইল দিয়ে কাজ করার মত ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটে অনেক কাজ রয়েছে। যেগুলো আপনি মোবাইল দিয়ে করে অনলাইন থেকে আয় করতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট এ যে কাজগুলি মোবাইল দিয়ে আপনি করতে পারেন:

  • ট্রানসলেশন
  • কনটেন্ট রাইটিং
  • কনটেন্ট রি-রাইটিং
  • ব্লগ কমেন্টিং
  • ফোরাম পোস্টিং
  • ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট
  • ট্রানস্ক্রিপশন
  • প্রুফরিডিং
  • প্রডাক্ট দেস্ক্রিপশন, ইত্যাদি।

নিচের দেওয়া ফ্রীলান্সিং ওয়েবসাইটগুলোতে মোবাইল দিয়ে করা সম্ভব অনলাইন কাজ খুজতে পারেন।

গুগলে খুজলে আপনি এমন আর ওয়েবসাইট পাবেন। যেগুলোতে মোবাইল দিয়ে কাজ করার মত অনলাইন কাজ আছে।

আরও পড়ুন:

৫. মোবাইল  ফটোগ্রাফ  বিক্রি

স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রায় সবাই বিভিন্ন সময় নানা প্রয়োজনে কিংবা  শখের বশে ছবি তুলে থাকে। আপনি যদি হয়ে থাকেন একজন  শখের মোবাইল ফটোগ্রাফার, তাহলে আপনার সামান্য একটু পরিশ্রম আপনার  শখ কে টাকা ইনকাম এর মাধ্যমে  পরিণত করতে পারে।

এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, আমি ছবিগুলা কোথায় বিক্রি করব?  আমার মোবাইল ফটোগ্রাফি কে বা কিনবে? আপনার প্রথম প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে মোবাইল ফটোগ্রাফ  বিক্রির জন্য বেশকিছু জনপ্রিয় ওয়েবসাইট রয়েছে। ওয়েবসাইটগুলো নিয়ে  একটু পর আলোচনা করব।

আর আপনার মোবাইল ফোন ফটোগ্রাফির  ক্রেতা হবে তারা যাদের কম বাজেটের ছবি দরকার। ধরুন আপনার একটি ওয়েবসাইট আছে সেখানে বেশকিছু ফটোগ্রাফ দরকার। কিন্তু আপনি ফটোগ্রাফি তেমন ভাল বোঝেন না অথবা ফটোগ্রাফার ভাড়া করে ছবি তুলতে গেলে বাড়তি টাকা এবং পরিশ্রম দরকার। আপনি আপনার  টাকা  আর সময় বাঁচাতে কোন একটা ওয়েবসাইট থেকে ছবি কিনে ফেললেন। এভাবেই ওয়েবসাইটগুলোর ছবিগুলো বিক্রি হয়।

এবার ছবি বিক্রির ওয়েবসাইটগুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক। মোবাইল ফটোগ্রাফি বিক্রির জন্য বেশকিছু সাইট রয়েছে।  যেমন:  

  1.  AGORA Images
  2.  Foap
  3.  Snapwire
  4. Clashot
  5. EyeEm
  6.  Dreamstime ইত্যাদি

 উপরোক্ত ওয়েবসাইটগুলোতে ছবি  বিক্রি এবং টাকা উত্তোলনের জন্য কিছু শর্ত মেনে চলতে হয়।

৬. অনলাইন  টিউশন

ছাত্রাবস্থায় বাড়তি ইনকামের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে টিউশন। কিন্তু এমন যদি হয় যে আপনাকে নির্দিষ্ট কোন জায়গায় বা কোন শিক্ষার্থীর বাসায় গিয়ে পড়াতে হচ্ছে না।  কিংবা আপনি  ঘরে বসেই আপনার  ছাত্রকে  পড়াতে পারছেন। তাহলে তো অবশ্যই অনেক ভালো হয়।

আপনার  এই ইচ্ছার  বাস্তবায়ন ঘটাতেই অনলাইন টিউশান ধারণাটির যাত্রা শুরু।  অনলাইন টিউশান করাতে আপনার বিশেষ কোনো ব্যবস্থা প্রয়োজন হবে না। শুধুমাত্র আপনার একটি মোবাইল ফোন এবং ভালো ইন্টারনেট কানেকশন হলে চলবে। আপনি ওয়েবসাইট বা কোন অ্যাপের মাধ্যমে আপনার মোবাইলের ক্যামেরা ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের পড়াতে পারবেন।

মোবাইল ফোনের মাধ্যমে  অনলাইন টিউশন মডেলে যুক্ত  হয়ে টিউশনে যাতায়াতের ভোগান্তি থেকে মুক্তি  পাওয়া সম্ভব।

 বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অনলাইন টিউশন দিনে দিনে আরও বেশি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। বাংলাদেশ অনলাইন টিউশন নিয়ে কাজ করছে এমন কিছু ওয়েবসাইট হলো:

  1. bdtutors.com
  2. Deshtutor.com
  3. Tutorsheba.com
  4. Bdhometutor.com

৭. ই-কমার্স

বর্তমানে মানুষের মধ্যে বাড়ছে ই-কমার্সের চাহিদা মানুষ মার্কেটে গিয়ে পণ্য কেনার চেয়ে অনলাইতে কেনা কাটা করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে।

তাই আমরা খেয়াল করলে দেখতে পাই, আশেপাশে বেড়ে উটছে অনেক ই-কমার্স ব্যবসা। বর্তমানে একটি ই-কমার্স বিজনেস তৈরির জন্য তেমন কিছু প্রয়োজন নেই শুধু একটি মোবাইল আর ফেইসবুক একাউন্ড থাকলেই হয়। ফেইসবুকে পেইজ খুলে আপনি সহজে আপনার পণ্য বিক্রি করতে পারেন।

এছাড়াও Facebook shop নামক নতুন ফিচার রয়েছে সেখানেও আপনি আপনার পন্যের ডিটেইলস এবং ছবি দিয়ে পণ্য বিক্রি করতে পারেন। আর যত ই-কর্মাস বিজনেস রয়েছে তার প্রায়ই ফেইসবুক ভিত্তিক।

তাহলে আপনিও শুরু করে দিতে পারেন আপনার ই-কর্মাস বিজনেস এবং মোবাইল দিয়ে আয় করতে পারেন ভালো অংকের টাকা।

৮. রিসেলিং

যদি আপনি ব্যবসা করতে খুব আগ্রহী হয়ে থাকেন কিন্তু আপনার কাছে যথেষ্ট ইনভেস্ট না থাকায় শুরু করতে পারছেন না তাহলে এটি আপনার জন্য। এখানে আপনাকে পণ্য আগে থেকে ক্রয় করে রাখতে হবে না।  পন্য বিক্রির পরই আপনি পণ্য কিনে কাস্টমারকে পৌছে দিতে পারবেন।

এক্ষেত্রে ডেলিভারি দেওয়ার ক্ষেত্রেও কোন সমস্যা নেই যাদের কাছ থেকে পণ্য কিনবেন তারাই ডেলিভারির দায়িত্ব নিবেন। 

মনে করুন একটি পণ্যের পাইকারি দাম ১০ টাকা এবং ঐ পণ্য টা ১৫ টাকায় বিক্রি করা যাবে। আপনি ঐ পণ্যের ছবি নিয়ে তার প্রচারণা শুরু করবেন এবং যদি পণ্য বিক্রি হয় তাহলে কাস্টমারের ঠিকানা নিয়ে রিসেলিং ওয়েবসাইটে দিবেন। তারা আপনার কাস্টমারকে পৌছে দিয়ে টাকা নিয়ে পণ্যের ১০ টাকা কেটে নিয়ে বাকি টাকা আপনাকে দিবে। এটিই হলো রিসেলিং বাংলাদেশে এমন বিখ্যাত রিসেলিং কোম্পানি হলো Shopup.com.

আপনি একটি ফেইসবুক পেইজ খুলে সহজে এসব পণ্য গুলো বিক্রি করতে পারেন।

৯. পুরাতন পণ্য বিক্রি

আমাদের এমন অনেক জিনিস থাকে যেগুলো অনেক পুরানো অথবা আমাদের কাজে লাগে না। এসব জিনিস নিজের কাছে রেখে না দেওয়ার চেয়েও বিক্রি করে দেওয়াই উত্তম।

তার জন্য রয়েছে কিছু ওয়েবসাইট যেমন :- Bikroy.com সব থেকে বিখ্যাত পুরাতন পণ্য বিক্রির জন্য। খুব সহজেই আপনার পন্যের ছবি তুলে আপলোড করুন তাদের ওয়েবসাইটে তারপর সামনা সামনি দেখা করে বা কুরিয়ারের মাধ্যমে পণ্য পৌছে দিন ক্রেতার কাছে। এভাবেই খুব সহজেই পুরাতন পণ্য বিক্রি করে অনলাইন ইনকাম মোবাইল দিয়ে করতে পারবেন।

১০. ক্রিপটোকারেন্সি ট্রেডিং

ক্রিপটো কারেন্সি বলতে বিটকয়েন, লাইট কয়েন ইত্যাদিকে বোঝায়।

বর্তমান বিশ্বে এগুলো খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। যদি আপনি এই সম্পর্কে না জানেন তাহলে একটু সংক্ষেপে বলি। 

এগুলো হলো ভার্চুয়াল কারেন্সি যেগুলো আপনি কখনো হাতে ধরতে পারবেন না কিন্তু এগুলো বিক্রি করে টাকা বা ডলার আপনি হাতে পাবেন।  এসব ক্রিমপটোকারেন্সির দাম বাড়ে এবং কমে।

যদি আপনি আজকে কিছু ক্রিমপটোকারেন্সি কিনে রাখেন কাল বা পরশু এগুলোর দাম বেড়ে গেলে আপনি তা বিক্রি করে সহজে ভালো টাকা আয় করতে পারবেন।  এই সম্পূর্ন কাজ গুলো ক্রিপটোকারেন্সি কেনা থেকে বিক্রি পর্যন্ত সব কিছু ওয়েব সাইটের মাধ্যমে হয়ে থাকে যেগুলোর সাহায্যে আপনি খুব সহজে মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করতে পারেন।

১১. Instagram থেকে আয়

Instagram বর্তমানে ফেইসবুকের মতোই জনপ্রিয় একটি সোসিয়াল নেটওয়ার্ক। আপনি মোবাইল ব্যবহার করে সহজে এই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারেন।

কিন্তু এটি ব্যবহার করে শুধু সময় নষ্ট না করে আপনি আয় করতে পারেন ভালো টাকা।  Instagram এ আপনি যদি ভালো কন্টেন্ট যেমন :- বিভিন্ন উক্তি, টিপস এন্ড ট্রিকস ইত্যাদি শেয়ার করেন তাহলে মানুষ আপনার কন্টেন্ট পছন্দ করবে এবং আপনাকে ফলো করবে এতে আপনার ফলোয়ারস বৃদ্ধি পাবে। ফলোয়ারস বাড়লে আপনি বিভিন্ন জায়গা থেকে sponsor পাবেন এবং sponsor পাওয়ার জন্য অনেক ওয়েবসাইট ও রয়েছে।

আপনার ফলোয়ারস যত বেশি হবে আপনার ইনকাম তত বেশি হবে। এমন অনেকেই আছে যারা Instagram থেকে দিনে ২০/৩০হাজার টাকা আয় করেন। 

আপনাকে শুধু আপনার sponsor এর দেওয়া ছবি / ভিডিও আপলোড করতে হবে এবং পোস্টের লিংক দিয়ে দিবেন আপনার Sponsor কে। শেষ আপনার টাকা পৌছে যাবে একাউন্টে।

  এক্ষেত্রে আপনার কন্টেন্ট ইংরেজি হলেই ভালো তাতে বিশ্বের সকলেই আপনাকে ফলো করবে এবং ইংরেজি কন্টেন্ট যুক্ত একাউন্ট বেশি sponsorship পায়। এটি আপনার মোবাইল দিয়ে টাকা আয় এর অনলাইন মাধ্যম হতে পারে।

১২. Microwork সাইট থেকে আয়

এমন অনেক সাইট আছে যেখানে অনেক সহজ সহজ কাজের জন্য আপনাকে টাকা দেওয়া হবে যেমন :- কারো ছবি / পোস্ট শেয়ার,  ইউটিউব ভিডিও দেখা,  এপ ইনস্টল,  সাইন আপ ইত্যাদি।  আপনি এসব কাজ মোবাইল ব্যবহার করেও করতে পারবেন এবং ভালো টাকা আয় করতে পারবেন।  এমন কিছু সাইট হলো :-

  • picoworkers.com
  •  rapidworkers.com
  • microworkers.com

১৩. Webtalk থেকে আয়

Webtalk বেশ কিছু দিন আগে অপরিচিত থাকলেও বর্তমানে খুব জনপ্রিয় হচ্ছে। এটি হলো facebook এর মতোই আরেকটি সোসিয়াল মিডিয়া. কিন্তু এটি ফেইসবুকের চেয়ে একটু ভিন্ন।

আমরা প্রতিদিন আমাদের অনেক সময় ফেইসবুকে ব্যয় করে থাকি। এবং আমরা যতক্ষণ ফেইসবুকে থাকি যত বেশি লাইক, কমেন্ট, শেয়ার করি ফেইসবুক একটি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা আয় করে থাকে। ঠিক তেমনি আয় করে থাকে Webtalk।

কিন্তু Webtalk তাদের আয় করা টাকার ৫০% আপনাকে দিবে।  আপনি যতক্ষণ Webtalk এ থাকবেন যত বেশি লাইক কমেন্ট শেয়ার করবেন আপনার একাউন্টে কিছু  পয়েন্ট যুক্ত হবে তারপর আপনি এই পয়েন্টকে ডলারে কনভার্ট করতে পরবেন। 

আমরা যেই সময় Facebook এ ব্যয় করি সেই সময়টা যদি webtalk ব্যবহার করি তাহলে তা হতে আমাদের আয়ের একটি উৎস।  এবং এটির মাধ্যমে আপনি মোবাইল দিয়েই আয় করতে পারবেন কোন ঝামেলা ছাড়া। তাদের বর্তমান ওয়েবসাইট webtalk.co এবং ২০২৩ সালের মধ্যে তাদের মোবাইল এপ বের হবে ফেইসবুকের মতো। এখানে আপনি আপনার আয় করা অর্থ সহজেই payoneer দিয়ে ব্যাংক একাউন্টে নিতে পারবেন।

১৪. PTC সাইট থেকে আয়

PTC এর পূর্ণরূপ হলো Pay to Click. এমন কিছু ওয়েবসাইট আছে যারা আপনাকে বিভিন্ন এড দেখার জন্য পেমেন্ট করবে।  কাজটি খুব সহজ তাদের ওয়েবসাইটে একাউন্ট করবেন তারপর এড এ ক্লিক করবেন। এসব ওয়েবসাইটে কাজ করতে হলে আপনাকে প্রতিদিন কাজ করতে হবে এবং এই সম্পূর্ন কাজ গুলোই মোবাইল দিয়ে করতে পারেন।

বর্তমানে এমন অনেক PTC সাইট আছে যারা অনেকের সাথে প্রতারণা করছে।  তাই কোন সাইটে কাজ করার আগে তার রিভিউ দেখে নিবেন। বর্তমানে বহুল জনপ্রিয় PTC সাইট হলো Paidverts. যেখানে আপনি Invest করলে ভলো পরিমাণ আয়ের একটি সুযোগ রয়েছে।

১৫. ইনভেস্টমেন্ট সাইট থেকে আয়

আমরা সবাই ব্যাংকের মূলধনের উপর সুধ লাভ করার বিষয়টা জানি। কিন্তু ব্যাংকের থেকে সুধ লাভ করার জন্য দরকার ভালো অংকের মূলধন। অনলাইনে এমন কিছু সাইট আছে যেখানে আপনি অল্প পরিমান টাকা ইনভেস্ট করে কিছু সময় পর ২ কিংবা ৩ গুণ টাকা লাভ করতে পরবেন।  কিন্তু কিছু কিছু সাইট প্রতারণা করে তাই আপনারা অবশ্যই ইনভেস্ট করার আগে সাইটের রিকিছু ভিউ দেখে নিবেন।

বিখ্যাত ইনভেস্টমেন্ট সাইট হলো forsage, coin-farm ইত্যাদি।

১৬. বিভিন্ন অ্যাপস থেকে ইনকাম

আপনি ইচ্ছা করলে বিভিন্ন অ্যাপস থেকে অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন কিন্তুু এটা আমার মতে, দীর্ঘস্থায়ী ও স্মার্ট ইনকাম পদ্ধতি নয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে আমি আপনার জন্য এই পদ্ধতি রিকমেন্ড করব না।

যেহেতু আমাদের এই ওয়েব পোস্টটি অনলাইনে সহজে ইনকাম করার উপায় সম্পর্কিত, সেই জন্যে কিছু অনলাইনে ইনকাম করার অ্যাপস নিয়ে আলোচনা করবো যেগুলো আপনি ব্যবহার করে অনলাইন হতে টাকা আয় করতে পারেন।

নিচের অনলাইনে ইনকাম করার অ্যাপস গুলি আমার কাছে বিশ্বস্ত মনে হয়েছে অনলাইনে ঘাটাঘাটি করে। তাই আমি আমার এই পোষ্টে অনলাইনে আগ্রহী প্রার্থীদের জন্য শেয়ার করলাম। তবে আপনি অনলাইনে খোঁজাখুঁজি করলে এরকম আরো অনেক অ্যাপ খুঁজে পাবেন যেগুলা থেকে সত্যি সত্যি ইনকাম করা যায়।

  1. Google Opinion Rewards
  2.  Champ Cash
  3. Meesho
  4. Cointiply
  5. frapp
  6. AppBuks
  7. Loco
  8. Perk app

আরেকটা বিষয় হচ্ছে উপরে উল্লেখিত সকল অ্যাপস এর কাজ কিন্তু একই ধরনের নয়। অর্থাৎ এক এক ধরনের অ্যাপস থেকে একেক ধরনের কাজ করে আপনাকে অনলাইন হতে ইনকাম করতে হবে।

১৭. অনলাইন জব মোবাইল দিয়ে

মোবাইল দিয়ে বিভিন্ন অনলাইন জব করা সম্ভব। এর জন্য অবশ্যই আপনার ফোনটি স্মার্টফোন হতে হবে। আমরা উপরে যে কাজগুলো মোবাইল দ্বারা করার সম্পর্কে উল্লেখ করেছি, এই কাজগুলো তেও কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো দ্বারা অনলাইন মার্কেটপ্লেসে জব করা সম্ভব।

এছাড়াও আপনি নিজের ওয়েবসাইট গুলোতে গিয়ে অনলাইন জব মোবাইল দিয়ে করতে পারেন।

  • https://www.upwork.com
  • https://www.freelancer.com
  • https://www.toptal.com
  • https://www.fiverr.com
  • https://www.guru.com
  • https://www.peopleperhour.com

নোট: এছাড়াও গুগলে খুজাখুজি করলে আরো অনেক সাইট পেয়ে যাবেন।

শেষ কথা,

তাই যদি আপনি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ থেকে ইনকাম করতে আগ্রহী থাকেন তাহলে দেখুন যে কোন কাজটি আপনার জন্য সহজ ও ভালো লাগে, সেই কাজ অনুযায়ী অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস পছন্দ করুন, অনলাইন হতে ইনকাম করার জন্য।

মনে রাখতে হবে,  আপনি  যে কাজই করেন না কেন সেটা অফলাইনে বা অনলাইনে, সেই কাজই ভালো করতে হলে অবশ্যই কাজের প্রতি আপনার আগ্রহ থাকতে হবে।  ওই কাজের প্রতি আপনার আগ্রহ না থাকলে বেশিদিন সেটা চালিয়ে যেতে পারবেন না।

তাই আপনার আগ্রহ অনুযায়ী 2023 সালে মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম এর উপায় বেছে নিন এবং অনলাইন ইনকাম সংক্রান্ত গাইডলাইন পেতে অনলাইন ইনকাম বিডি এর সাথেই থাকুন।

তাছাড়াও কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত বা কোন প্রশ্ন থাকলে করতে পারেন। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিটর দের কমেন্টে যথার্থ মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি।

অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের ওয়েবসাইটে অনলাইন ইনকাম মোবাইল দিয়ে ২০২৩ পোস্টটি পড়ার জন্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top