ইমেইল মার্কেটিং কি? এবং ইমেইল মার্কেটিং শেখার সহজ উপায়

ইমেইল মার্কেটিং কি এবং ইমেইল মার্কেটিং করে আয়: শত বছর ধরে ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যমে ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান গুলো তাদের কোম্পানি কিংবা পন্যগুলোর বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছে।  বিজ্ঞাপন বলতে  মূলত বিভিন্ন পন্থা কে বুঝায় যার মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠান ক্রেতাদের তার পন্য বা সেবা গ্রহনে উদ্বুদ্ধ করে।  এই  বিজ্ঞাপনের মূল লক্ষ্য হল ঐ প্রতিষ্ঠানের পন্য  বা সেবা সম্পর্কে ক্রেতাদের অবহিত করা।

আমরা সচরাচর টিভি তে যে বিজ্ঞাপন দেখি সেটি মূলত  “মার্কেটিং” এর  একটি  অংশ ।  মার্কেটিং এমন একটি বিষয় যার উপর সম্পূর্ন নির্ভর করে  কোন ব্যবসার সফলতা  কিংবা  ব্যর্থতা ।

আর তাই মার্কেটিং এর জন্য  ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠান  কিংবা  গবেষকরা   সামনে এনেছেন  বিভিন্ন পন্থা। আমরা বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং বলে একটা শব্দ প্রায়শই শুনে থাকি, যার মধ্যে রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন, কন্টেন্ট মার্কেটিং, পে-পার-ক্লিক বা পিপিসি ইত্যাদি। কালের বিবর্তনে সর্বাধুনিক পদ্ধতি হিসেবে এগুলো আজ সর্বজন স্বীকৃত।

এসব ডিজিটাল মার্কেটিং পদ্ধতি গুলোর সাথে আরেকটি জনপ্রিয় মার্কেটিং পদ্ধতি “ইমেইল মার্কেটিং”। অল্প পরিশ্রমে খুব দ্রুত মানুষের মধ্যে পন্যের মার্কেটিং করার জন্য  বর্তমানে  সবথেকে কার্যকরী মার্কেটিং পদ্ধতি  হিসেবে  পরিচিতি লাভ করেছে ইমেইল মার্কেটিং। Email Marketing Bangla।

ইমেইল মার্কেটিং কি?
ইমেইল মার্কেটিং কি? এবং ইমেইল মার্কেটিং শেখার সহজ উপায়

চলুন  আজ আমরা দেখে  আসি  কিভাবে  আপনার ব্যবাসায় ইমেইল মার্কেটিং কে কাজে  লাগিয়ে  অধিক মুনাফা  অর্জন করতে  পারবেন ।  বলে রাখা উচিৎ, ইমেইল মার্কেটিং  শুধুমাত্র ব্যবসায়িক  সফলতার  মূলমন্ত্র  এমনটি  নয়,  কেননা হাজারো দক্ষ ইমেইল মার্কেটার বা ফ্রীল্যান্সার রা নিজেদের উপার্জনের  পন্থা হিসেবে বেছে নিয়েছে ইমেইল মার্কেটিং ।

ইমেইল মার্কেটিং কি?

ইমেইল এমন একটি মার্কেটিং পদ্ধতি যেখানে পন্য বা সেবার প্রমোশনের জন্য “ইমেইল” ব্যবহাহৃত হয়। এটি সরাসরি কাউকে মেইল পাঠানোর মাধ্যমে হতে পারে, তবে সাধারনত ইমেইল মার্কেটিং এ অধিক সংখ্যক ব্যক্তিকে একই  মেইল পাঠানো হয় ।  যার মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে  অধিক সংখ্যক মানুষের কাছে পৌছে যায় অফার বা প্রমোশনলার সংবাদগুলো ।

সাধারণভাবে “ইমেইল মার্কেটিং” শব্দটি ব্যবহৃত হয়:

  • নতুন গ্রাহক অর্জনের জন্য প্রচারমূলক ইমেইলগুলি প্রেরণ বা তাত্ক্ষণিকভাবে কিছু কেনার জন্য বর্তমান গ্রাহকদের বোঝানো।
  • গ্রাহকদের আনুগত্য এবং পুনরায় ব্যবসায় উৎসাহিত করার জন্য বর্তমান কিংবা পূর্ববর্তী গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক বাড়ানোর লক্ষ্যে বিশেষভাবে ডিজাইন করা ইমেলগুলি প্রেরণ করা।
  • নতুন বাজারের মধ্যে এক্সপোজার পেতে অন্য সংস্থার ই-মেইলে (অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে) বিজ্ঞাপন যুক্ত করা।

অবশ্যই পড়বেন:

  1. অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা বেশি? কোনটি আপনি করবেন?
  2. ফেসবুক থেকে আয় করার সকল উপায় (পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন ২০২১)
  3. মোবাইল দিয়ে অনলাইন ইনকাম করার ১৬টি সহজ উপায়

যেসব কারনে ইমেইল মার্কেটিং প্রয়োজনীয় এবং যুগপোযোগী

  • বর্তমানে প্রায় একশ শতাংশ মানুষ ইমেইল ব্যবহার করেন
  • মোবাইল ডিভাইস গুলোর একজন ব্যক্তি খুব সহজে এবং দ্রুত ইমেইল চেক করতে পারেন
  • আপনার গ্রাহকদের মধ্যে যেকোন তথ্য পাঠানোর সবথেকে সহজ উপায় একটি “ইমেইল”
  • আপনি নির্দিষ্ট টার্গেট এর উপর নির্ভর করে নির্দিষ্ট বার্তা পাঠাতে পারবেন
  • একটি ইমেইলে বিভিন্ন ধরনের অ্যাকশন (যেমন- Book Now, See More, Make An Appoinment, Read More, Contact Us ইত্যাদি) সম্বলিত করা যায়, যার মাধ্যমে মাত্র এক ক্লিকেই গ্রাহক কাঙ্ক্ষিত পেইজে পৌছে যেতে পারে
  • ইমেইল খুব সহজেই গ্রাহকের সাথে সুসম্পর্ক এবং বিশ্বাষযোগ্যতা তৈরী করে
  • ইমেইল সাধারনত পরিমাপযোগ্য, অর্থাৎ আপনি প্রেরিত ইমেইল এর সংখ্যা, বা ইমেইল এর ব্যপ্তি নিয়ন্ত্রন করতে পারছেন খুব সহজেই
  • সময়োপযোগী করে ইমেইল কে বিন্যস্ত করতে পারা টা ইমেইল মার্কেটিং কে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে
  • ইমেইল খুব সহজেই একটি সাইটে ট্র্যাফিক লাভ করতে সহায়তা করে

Email Markting এর সুবিধা

ই-মেইল বিপণন ব্যবহার করার অনেকগুলি ভাল কারণ রয়েছে কারণ এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিকাশের সাথে সাথে ই-মেইল বিপণন এখনও খুব কার্যকর হতে পারে। এখানে কিছু নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে:

  • ব্যয় – ইমেইলের মাধ্যমে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ঐতিহ্যবাহী সরাসরি মেইলের অনেক মিল রয়েছে , তবে প্রক্রিয়াতে অনেক কম ব্যয় হয়।
  • আয়- ইমেইল মার্কেটিং ব্যবস্থায় আপনি যা বিনিয়োগ করবেনন তার বেশিরভাগই পাবেন। সাম্প্রতিক গবেষনায় দেখা গিয়েছে, ২০০৯ সালে ই-মেইল মার্কেটিং এ বিনিয়োগ করা প্রতিটি ডলারের জন্য, 43.52 ডলার অর্জিত হয়েছিল। তাই অন্যান্য মার্কেটিং পদ্ধতির তুলনায় ই-মেইল মার্কেটিং ব্যবস্থায় আয়ের পরিমান বেশি।
  • দ্রুততা – আপনার যদি প্রয়োজন হয় তবে আপনি খুব দ্রুত একটি তালিকায় একটি বার্তা একসাথে অনেকজন কে প্রেরন করতে পারেন।
  • তৈরি করা সহজ – এখানে অনেকগুলি ইমেইল সরঞ্জাম যেমন মেলচিম্প এবং কনস্ট্যান্ট যোগাযোগের সাথে, পেশাদার দেখা ইমেলগুলি প্রেরণ করা এবং প্রতিবেদনের মাধ্যমে তাদের কার্যকারিতা সন্ধান করা অত্যন্ত সহজ হয়ে উঠেছে। এই সরঞ্জামগুলির বেশিরভাগই বিভিন্ন ধরণের ইমেইল যেমন নিউজলেটার, ইনভাইটেশন, বিশেষ অফার এবং আরও অনেক কিছুর জন্য স্ট্যান্ডার্ড টেম্পলেট এবং লেআউট সরবরাহ করে।
  • ট্র্যাকিং – আপনার ইমেইল সার্ভিস কতটা ভাল চলছে তা আপনি ট্র্যাক করতে পারেন, যেমন, কতগুলি ইমেল খোলা হয়েছিল, তারা কোন লিঙ্কগুলি ক্লিক করেছে এবং এই জাতীয় কিছু। এই তথ্যের সাহায্যে আপনি আপনার পরবর্তী প্রচারটি সামঞ্জস্য করতে পারেন এবং কার্য সম্পাদন করতে পারেন।

ইমেইল মার্কেটিং কিভাবে করবেন

ইমেইল মার্কেটিং অনেক বিস্তৃত একটি বিষয়, তবে এই মার্কেটিং ব্যবস্থায় আপনার দক্ষতা আপনার ব্যাবসায়ীক সফলতাকে নিয়ে যেতে পারে অনন্য উচ্চতায় । এই ব্যপারটি অনুধাবন করে বর্তমানে বিভিন্ন ফ্রীল্যান্সিং প্রশিক্ষন কেন্দ্র থেকে অনেকে ইমেইল মার্কেটিং কোর্স কম্প্লিট করছে।

আবার কেউ কেউ দ্বারস্থ হচ্ছেন ইমেইল মার্কেটিং টিউটোরিয়ালের। আর তাই আমি এখানে এসেছি আপনাদের আগ্রহের জায়গায় কিছুটা পরিপুর্নতা নিয়ে আসতে। আশা করি সম্পুর্ন লিখাটি আপনাদের ইমেইল মার্কেটিং কিভাবে করবেন সে ব্যপারে ধারনা দিতে সক্ষম হবে।

ইমেইল মার্কেটিং টুলস

সচরাচর জিমেইল কিংবা ইয়াহু ইত্যাদি জনপ্রিয় মেইলিং পোর্টাল থেকে আপনি একসাথে অত্যাধিক সংখ্যক মেইল পাঠালে আইডি ঝুকির সম্মুখীন হতে পারে আর তাই ঈমেইল মার্কেটিং কে অধিক কার্যকর এবং ঝুকিহীন করার জন্য রয়েছে বিশেষ কিছু টুলস বা সাইট।

এই টুলগুলির বেশিরভাগই বিনামূল্যে বিকল্পের পাশাপাশি আরও উন্নত অর্থ প্রদানের বিকল্প সরবরাহ করে, যা আপনাকে আরও উন্নত কার্যকারিতা সরবরাহ করতে পারে। সর্বাধিক জনপ্রিয় ও বহুল পরিচিত টুলস এর মধ্যে মেলচিম্প, কনস্ট্যান্ট কন্টাক্ট এবং টডল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে এর বাহিরেও কিছু টুলস বেশ কার্যকর হয়ে উঠেছে, এর মধ্যে রয়েছে:

  • হোলার (www.holler.ie)
  • স্পিনেকারপ্রো (www.spinnakerpro.ie এবং www.newsletter.ie)
  • নিউজউইভার (www.newsweaver.ie)
  • গ্রুপমেল (www.infacta.ie)

আর দেখুন: 

  1. ইউটিউব থেকে আয় করার উপায় [A টু Z]
  2. ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম | কিভাবে প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করবেন?
  3. অনলাইন ইনকাম ২০২১ | অনলাইনে আয় করার ২৫ টি সহজ উপায়

সঠিক পরিকল্পনা

আপনার ইমেইল প্রচার শুরু করা এবং আপনার ইমেলের লেআউট ডিজাইন করার পুর্বে, প্রথমে আপনার প্রচারের উদ্দেশ্য এবং আপনি কী অর্জন করতে চাইছেন তা নিয়ে চিন্তা করা দরকার।

আপনার যে ধরণের বিষয়গুলি নিয়ে ভাবতে হবে সেগুলির মধ্যে রয়েছে:

১. আপনি এখানে আপনার ইমেল প্রচারের উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্যগুলি সম্পর্কে ভাবছেন। আপনার একটি দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য থাকতে পারে, যার মাধ্যমে আপনি আপনার গ্রাহকদের সাথে সর্বশেষ অফারগুলি, আপনি যে নতুন পরিসেবা যুক্ত করেছেন সেগুলি সম্পর্কে অবগত রাখতে নিয়মিত যোগাযোগ করতে চান ।

২. আপনি কাকে ইমেল প্রেরণ করতে চান তা শনাক্ত করুন। যেমন আপনার বর্তমান গ্রাহকরা উদাহরন্স্বরুপ আপনার পরিবার বা দম্পতিরা যারা আপনার সাথে আগে ছিলেন তাদের কে আপনি পৃথকভাবে শনাক্ত করে গ্রুপের ভিত্তিতে আপনার সমস্ত ই-মেইল গ্রাহকদের বিভক্ত করতে এবং গ্রুপের ভিত্তিতে যোগাযোগ করতে পারেন।

৩. আইন অনুসারে আপনাকে মার্কেটিং ইমেইল প্রেরণের জন্য লোকদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অনুমতি নিতে হবে। এটিকে মাঝে মাঝে একটি “অপ্ট-ইন” হিসাবে উল্লেখ করা হয় এবং আপনি আপনার মেইলিং তালিকায় লোকদের সাবস্ক্রাইব করতে (বা অপ্ট-ইন) পেতে পারেন এমন অনেকগুলি উপায় রয়েছে।  উদাহরণস্বরূপ, আপনার নিজের পেজ এ একটি সাইন আপ ফর্ম থাকতে পারে যাতে লোকেরা আপনার নিউজলেটারের সদস্যতা নিতে পারে। বিকল্পভাবে, আপনি ক্রয় প্রক্রিয়াটির অংশ হিসাবে এটি তৈরি করতে পারেন যেখানে আপনি আপনার গ্রাহককে আপনার ওয়েবসাইটে বুকিং দেওয়ার সময় আপনার কাছ থেকে আরও যোগাযোগের সম্মতি দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।

৪. আপনি কত ঘন ঘন আপনার ইমেইল প্রেরণ করবেন সেটি তাদের ধরণ এবং উদ্দেশ্যের উপর নির্ভর করবে। উদাহরণস্বরূপ, যখন আপনার বিভিন্ন প্রমোশন বা অফার থাকবে তখনই তা প্রেরণ করতে পারেন, এক্ষেত্রে আপনি মাসে একবার নিউজলেটার পাঠাতে পারেন। তবে চেষ্টা করবেন আপনার ইমেইলএর সংখ্যা সর্বনিম্ন রাখার, কেননা অনেকগুলি ইমেইল গ্রাহকদের বিরক্ত করতে পারে এবং আপনার গ্রাহকদের আনসাবস্ক্রাইব করার কারণ হতে পারে।

৫. আপনার ইমেলটি ডিজাইন করার সময় এটি মাথায় রাখতে হবে যে, আপনি প্রাপকদের কাছ থেকে কি চাচ্ছেন এবং আপনার ইমেইল ডিজাইন টা এমনভাবে করতে হবে যেন গ্রাহক খুব সহজেই আপনার সাইটে বা কাঙ্ক্ষিত পেইজে প্রবেশ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, অনেকগুলি লিঙ্ক বা অফার দিয়ে বিভ্রান্ত না করে, আপনি খুব সাধারনভাবেই সেখানে লিখে দিতে পারেন “ Click Here For 20% Discount”

বিভন্ন ধরনের ইমেইল ও তাদের কার্যকারিতা

আপনি চাইলেই আপনার গ্রাহকদের যেকোন ইমেইল প্রেরন করতে পারবেন, আপনাকে বিশেষ কিছু ডিজাইন কিংবা ফিচার সম্বলিত ইমেইল প্রেরন করতে হবে যেটা আপনার গ্রাহক কে প্রভাবিত করবে। এমন কিছু সম্পর্কে আমরা এখন জানব

ওয়েলকাম বা স্বাগতম ইমেইল –

স্বাগতম ইমেইল নতুন গ্রাহকের কাছে প্রেরিত প্রথম ইমেল। প্রায় ৭৫%  গ্রাহকরা কোনও নতুন ওয়েবসাইটে সাইন আপ করার সময় একটি স্বাগত ইমেইল পাওয়ার প্রত্যাশা করে থাকে।

পরিত্যক্ত কার্টের ইমেইল –

এগুলো মুলত গ্রাহকদের কাছে পাঠানো স্বয়ংক্রিয় ইমেইল অনুস্মারক, যা শপিং কার্টে কোন আইটেম যুক্ত করার পরে কিংবা চেক আউট করার আগে একটি ওয়েবসাইট থেকে বেরিয়ে আসে। পরিত্যক্ত কার্টের ইমেলগুলি গড় কনভার্শন হার ৪.৬৪% এবং একটি অত্যন্ত কার্যকর  অপ্টিমাইজেশান কৌশল।

লেনদেনমূলক ইমেইল –

কোনও ধরণের কর্মকান্ডের প্রতিক্রিয়া হিসাবে ব্যবহারকারীদের কাছে এই ইমেইল গুলো প্রেরণ করা হয়। এগুলি সাধারণত রিয়েল-টাইমে ট্রিগার করা হয় এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবেই গ্রাহকের নিকট পৌছে যায়। বেশিরভাগ জনপ্রিয় লেনদেনমূলক ইমেইলের মধ্যে পন্য ক্রয়ের রসিদ, পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করা, কার্ট পরিত্যাগ, সমর্থন অনুরোধ এবং আরও অনেক কিছু অন্তর্ভুক্ত থাকে।

পুরষ্কার ইমেইল-

এই ধরনের স্বয়ংক্রিয় ইমেইলগুলি হল বিশেষ অফার এবং চুক্তি সহ বিশ্বস্ত গ্রাহকদের আনন্দ এবং পুরষ্কারের জন্য ডিজাইন করা হয়। পুরষ্কার ইমেলগুলি নির্দিষ্ট মাইলফলক অর্জনের পরে সাধারণত ট্রিগার হয় (উদাহরণস্বরূপ, যখন কোনও গ্রাহক সাইটে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে) এবং অস্বাভাবিকভাবে উচ্চ উন্মুক্ত এবং রূপান্তর হার উপভোগ করে।

এই ধরনের অফার বা পুরষ্কয়ারমুলক ইমেইল গুলো একজন গ্রাহক কে অনেক বেশি অনুপ্রানিত এবং আনন্দিত করে, যা পরবর্তীতে কোন গ্রাহক কে পুনরায় লেন্দেন করতে উদবুদ্ধ করে থাকে।

ফ্ল্যাশ সেল ইমেইল-

ফ্ল্যাশ বিক্রয় ইমেইল হল একটি ইমেল যা আপনার সীমিত সময়ের অফার এবং আপনার বিক্রয়ের জন্য ট্র্যাফিক চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। ফ্ল্যাশ বিক্রয় ইমেইলগুলি তাদের প্রমোশনাল প্রকৃতির কারণে প্রাপকের কাছে স্প্যাম হিসাবে পৌছাতে পারে।

আর দেখতে পারেন: 

  1. ওয়েবসাইট থেকে আয় করার সহজ উপায় ২০২১
  2. ব্লগিং করে কত টাকা আয় করার যায়?
  3. ফ্রিতে ওয়েবসাইট তৈরি করুন

ইমেইল মার্টিকেটিং টিপস এন্ড ট্রিকস

আপনি যখন কাউকে ইমেইল প্রেরন করবেন তখন চেষ্টা করুন ঐ ব্যক্তির নামের মাধ্যমে অভিবাদন করার, এটি প্রথম দৃষ্টিতেই প্রাপকের মনে একটি পজিটিভ চিন্তা সৃষ্টি করবে। গ্রাহকদের তাদের নামের সাথে স্বয়ংক্রিংভাবে সম্মোধন এবং অভিবাদন জানাতে আপনার মেইলগুলো ডিজাইন করে ফেলুন।

তাদের নামের সাথে স্বতন্ত্রভাবে অভিবাদন জানাতে এবং সম্বোধন করার জন্য আপনার মেইলগুলি সাজিয়ে নিন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আপনি কেবল প্রথম নামটি ব্যবহার করতে পারেন তবে কয়েকটি প্রচারের জন্য শেষ নামটি আরও উপযুক্ত হতে পারে।

আপনার ইমেলগুলি প্রেরণের জন্য বছরের সঠিক সময়টি বাছাই করুন – ছুটির দিনে ইমেইল প্রেরন করাটা  এড়ইয়ে চলুন। কেননা এই সময়টাইয় লোকেরা তাদের কম্পিউটার থেকে দূরে থাকে এবং নিয়মিত তাদের ইমেইল পরীক্ষা করে না।

আপনার নিউজলেটারটি প্রাসঙ্গিক, সংক্ষিপ্ত এবং আকর্ষণীয় রাখুন। নিউজলেটার আলোকিত করার জন্য সর্বদা কমপক্ষে একটি চিত্র অন্তর্ভুক্ত করুন। একটি আকর্ষণীয় বিষয় ব্যবহার করুন, একটি সঠিক প্রশ্ন ইমেইল ওপেন করার হার বাড়িয়ে তুলতে পারে যেমন “আপনি কি ৫০% ছাড় দিয়ে একটি সপ্তাহের শেষে ট্রিট করতে চান?”

এই ধরনের একটি ইমেইল নিঃসন্দেহে যেকোন গ্রাহক কে আকর্ষন করবে।

ইমেইল মার্কেটিং থেকে কিভাবে আয় করবেন

পণ্য বা পরিসেবা বিক্রি করে আয়-

আপনার কি ইতোমধ্যে বিক্রয়ের জন্য কোন পণ্য বা পরিসেবা আছে? তাহলে, আপনি এই অংশটি এড়িয়ে যেতে পারেন।

যদি তা না হয় তবে এটি আপনার প্রথম পদক্ষেপ। আপনি বিক্রয়ের জন্য একটি শারীরিক বা ডিজিটাল পণ্য বা পরিসেবার সন্ধান করুন। প্রচার করার মতো পণ্য ছাড়াই ইমেইল মার্কেটিং করে অর্থোপার্জন করা অত্যন্ত কঠিন, আমার মতে অসম্ভব।

আপনার গ্রাহকদের মাঝে কি প্রচার করবেন তা নিশ্চিত নন? আমি নিচে আপনার মার্কেটিং শুরু করার জন্য কিছু ধারনা দিয়ে দিলাম:

ইবুকস

প্রশিক্ষণ গাইড

অনলাইন কোর্স

ব্যক্তিগত ভার্চুয়াল কোচিং সেশন

ক্লাস বা ওয়ার্কশপ

মেম্বারশিপ

অ্যাাফ্লিয়্যাট প্রোগ্রামের মাধ্যমে আয়-

ইমেইল মার্কেটিং এর জন্য সর্বদা আপনার নিজস্ব পন্য থাকতে হবে এমনটি নয়। আপনি বিভিন্ন কোম্পানির অ্যাফ্লিয়েট প্রোগ্রামে অংশগ্রহনের মাধ্যমেও আয় করতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি যেকোন পন্য বা সেবা বিক্রির মাধ্যমে কিছু কমিশন লাভ করতে পারেন, যা আপনাকে মাস শেষে সন্তোষজনক মুনাফা দিতে সক্ষ্ম হবে ।

তবে হ্যা, আপনার ইনকাম সম্পুর্ন আপনার কাজের উপর নির্ভর করবে, কেননা আপনি যত বেশি ইমেইল পাঠাবেন এবং অফারটি যত বেশি চাহিদা সম্পন্ন হবে , বিক্রির পরিমানও ততটা বেশি হবে , আর যত বেশি বিক্রি হবে তত বেশি হবে আপনার ইনকাম।

ফ্রীল্যান্সিং করে আয়-

আপনি যদি একজন দক্ষ ইমেইল মার্কেটার হন তবে বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ফ্রীল্যান্সিং এর মাধ্যমে আয় করতে পারেন। যুগের সাথে বর্তমানে ইমেইল মর্কেটিং এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে তাই আপনি ও ইমেইল মার্কেটিং কে বেছে নিতে পারেন।

এক্ষেত্রে আপনি বেশ কিছু কাজের মাধ্যমে ইনকাম করতে পারেন, যেমন-

ওয়েবসাইটের জন্য ইমেইল লিস্ট তৈরী করে আয়ঃ এক্ষেত্রে ওয়েবসাইটে পপ-আপ ফর্ম রাখুন , এটি করার জন্য আপনি WordPress এর Pop-Up প্লাগিন ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও আপনাকে Subscriber ফর্ম রাখতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি Mailchimp ব্যবহার করতে পারেন।

তবে আপনার ওয়েবসাইট না থাকলে সোশ্যাল মিডিয়া এবং ল্যান্ডিং পেইজ এর মাধ্যমে ইমেইল লিস্ট তৈরী করতে পারেন।

আপনার ইমেইল লিস্ট যত বড় হবে মার্কেটপ্লেস থেকে আপনার আয় তত বাড়তে থাকবে।

ইমেইল মার্কেটিং শিখার বই

আজকাল অনেকেই ইমেইল মার্কেটিং শেখার উদ্দ্যেশে বিভিন্ন বইয়ের স্মরনাপন্ন হন, তবে সব বই ই যে আপনাকে শিখতে সহায়তা করবে এমনটি নয়। তাই আমি এখানে কিছু নির্ভরযোগ্য বইয়ের সন্ধান দিচ্ছি। আশা করি এগুলো আপনাকে সহায়তা করবে-

আশা করি উপরের পুরো লিখাটির সঠিক অনুসরন এবং আপনার দৃঢ়তা  আপনার কাঙক্ষিত লক্ষ্যে পৌছাতে সহায়তা করবে। পরিশেষে আপনার সফলতাই আমাদের কাম্য, কেননা আপনার সফলতাই আমার এই লিখা কে স্বার্থক করবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top